নামাজকে বলো না কাজ আছে, কাজকে বলো আমার নামাজ আছে, নামাজবিহীন পরপারে, কি জবাব দেবে তুমি প্রভুর কাছে। এই সংগীত পরিবেশনার মাধ্যমে তুমুল জনপ্রিয়তা পেয়েছেন ইসলামি সংগীতশিল্পী জাহিদুল্লাহ জামী। সংগীতটির গীতিকার ও সুরকার শহীদুল ইসলামও পেয়েছেন খ্যাতি। বলা চলে একটি সংগীতের মাধ্যমে বদলে গেছে তাদের জীবন

শহীদুল ইসলাম চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ উপজেলার মুকুন্দসার গ্রামের বাচ্চু মিয়া সরকারের ছেলে। নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের সাইনবোর্ড এলাকায় থাকেন। ইত্তিহাদ শিল্পীগোষ্ঠী নামে নিজের প্রতিষ্ঠান রয়েছে তার।

জাহিদুল্লাহ জামীর বাড়ি চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার গাজীপুর গ্রামে। ওই গ্রামের মো. কোরবার আলী বেপারীর ছেলে তিনি। বর্তমানে শহীদুল ইসলামের সঙ্গে কাজ করেন জামী।

মানুষের মস্তিষ্কের সঙ্গে গান, মিউজিক, হামদ, নাত ও ইসলামি সংগীতের গভীর সম্পর্ক আছে। এগুলো মানুষের মস্তিষ্ককে আন্দোলিত করে। কারণ মানব মনের বা মনোজগতের একটি অংশ সুর। এটা অধিকাংশ মানুষের অন্তরে প্রশান্তি দেয়।

ইসলামি সংগীত ভালোবাসেন না, এমন মুসলমানের সংখ্যা কম। আল্লাহ, রাসুল, নামাজ, রোজা নিয়ে গাওয়া সংগীতগুলো মানুষ পছন্দ করে বেশি। তবে কিছু সংগীত ব্যাপক আলোচিত হয়। এমন একটি সংগীত; নামাজকে বলো না কাজ আছে। এ পর্যন্ত ইউটিউবে ভিউ হয়েছে প্রায় ১১১ মিলিয়নের বেশি। যা দেশের ইসলামি সংগীতে সবচেয়ে বেশি ভিউ।

এ বিষয়ে ঢাকা পোস্টকে অভিমত জানিয়েছেন ইসলামি সংগীতশিল্পী জাহিদুল্লাহ জামী ও সুরকার শহীদুল ইসলাম।

শহীদুল ইসলাম বলেন, আমি যখন আলিম পরীক্ষার্থী; তখন নামাজ নিয়ে অলসতা কাজ করত। অনেক নামাজ কাজা হতো। নামাজ নিয়ে কিছু লিখে নিজেকে পরিবর্তন করা যায় কি না তখন মনের মধ্যে চিন্তা এল। তখন থেকেই সংগীতের কাজ শুরু করি। এক সপ্তাহ সময় নিয়ে সুর করি। তারপর ভাবলাম, যদি কোনো শিশুকে দিয়ে গাওয়ানো যায়, তাহলে মানুষের হৃদয় স্পর্শ করবে। তখন আমার এক বন্ধুর মাধ্যমে জাহিদুল্লাহ জামীর সঙ্গে পরিচয় হয়। আমি যে সুর করেছি, ভালোভাবে ধরতে পেরেছেন জামী। তিনি গেয়েছেন দুর্দান্ত।

ইসলামি সংগীতশিল্পী জাহিদুল্লাহ জামী ও সুরকার শহীদুল ইসলাম, পাশে ঢাকা পোস্টের প্রতিনিধি

তিনি বলেন, নামাজকে বলো না কাজ আছে; সংগীতটি আমি সর্বোচ্চ ভেবেছি ১০ হাজার ভিউ হবে। মূল উদ্দেশ্যে ছিল আমার মতো কেউ নামাজ নিয়ে পরিবর্তন হবে। মানুষকে পরিবর্তনের জন্য আমার প্রথম কাজ ছিল এটি। দুই-একজনও যদি সঠিক পথে আসে আমার লেখা সফল। আমার ভালো লাগছে, সংগীতটি মানুষের মনে জায়গা করে নিয়েছে। আত্মশুদ্ধি ও নিজেকে পরিবর্তনের জন্য সংগীত লিখি। আরও নতুন কিছু নিয়ে আসছি। এগুলো ভালো লাগবে সবার।

জাহিদুল্লাহ জামী বলেন, আমি যখন মাদরাসায় পড়াশোনা করি, তখন আমার এক শিক্ষকের মাধ্যমে শহীদুল ভাইয়ের সঙ্গে পরিচয় হয়। তখন আমাকে দিয়ে সংগীতটির রিহার্সেল করানো হয়। সংগীতটির মাধ্যমে দেশের মানুষ আমাকে চেনে। দেশের বাইরে থেকে সংগীত গাওয়ার দাওয়াত এসেছে। করোনার জন্য যাওয়া হয়নি। আমার জন্য দোয়া করবেন সবাই, যাতে পড়ালেখা শেষ করে ভালো কিছু করতে পারি। সামনে আরও কিছু সংগীত আসবে, সেগুলো শুনবেন সবাই।

জাহিদুল্লাহ জামী আরও বলেন, আমি ঢাকায় পড়াশোনা করছি। আমার পড়ালেখা, চিকিৎসাসহ সব কিছুর দায়িত্ব তিনি নিয়েছেন শহীদুল ভাই। আমার বাবা রংমিস্ত্রি। পারিবারিকভাবে অসচ্ছল। শহীদুল ভাইয়ের জন্য আজকে আমি এখানে আসতে পেরেছি।

এএম