গাজীপুরের জয়দেবপুরের হোতাপাড়া এলাকায় একটি খাদ্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের শ্রমিকরা বকেয়া বেতন ও বোনাসের দাবি নিয়ে সোমবার ও মঙ্গলবার দফায় দফায় আন্দোলন করে আসছিলেন। শ্রমিকদের দাবি কারখানা কর্তৃপক্ষ নানা অজুহাতে বেতন ও ঈদ বোনাস দিতে গড়িমসি করছিলেন।

শ্রমিকদের এমন অসহায়ত্বের কথা জানতে পেরে গাজীপুর-৩ আসনের সংসদ সদস্য ও গাজীপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন সবুজ ওই কারখানায় যান। শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে তিনি তাদের শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়ে কারখানা কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করেন। স্থানীয় সংসদ সদস্যের সমঝোতায় রাতেই বোনাস পান ওই কারখানার শ্রমিকরা।

মঙ্গলবার (১১ মে) রাত ১০টায় সদর উপজেলার ভাওয়ালগড় ইউনিয়নের ফু-ওয়াং ফুডস লিমিটেড নামের কারখানায় এ ঘটনা ঘটে। কিছুসময় পর থেকেই শ্রমিকদের বেতন ও বোনাস দেওয়া শুরু করেন কারখানা কর্তৃপক্ষ।

কারখানার শ্রমিক সোহেল রানা জানান, কিছু শ্রমিকের মার্চ-এপ্রিল আবার কিছু শ্রমিকের এপ্রিল মাসের বেতন বকেয়া ছিল। সোমবার ওই কারখানায় বকেয়া বেতন ও মঙ্গলবার ঈদ বোনাস পরিশোধের কথা ছিল। কিন্তু বেতন ও ঈদ বোনাস পরিশোধে কর্তৃপক্ষ  তালবাহানা শুরু করেন। এ নিয়ে সোমবার কারখানার অর্ধ-সহস্রাধিক শ্রমিক ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের পাশে কারখানার ফটকের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করতে থাকে। এক পর্যায়ে কর্তৃপক্ষের আশ্বাস না পেয়ে বেলা ১১টার দিকে শ্রমিকরা ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করলে উভয়দিকে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যানজট সৃষ্টি হয়। পরে পুলিশের মধ্যস্থতায় কারখানা কর্তৃপক্ষ মঙ্গলবার বেতন বোনাস পরিশোধে আশ্বাস দিলে তারা মহাসড়ক ছেড়ে চলে যান।

সোহেল আরও জানান, মঙ্গলবার কর্তৃপক্ষ শ্রমিকদের বেতন-বোনাস পরিশোধের আশ্বাস দিলেও পরিশোধে কোনো ব্যবস্থা নেননি কর্তৃপক্ষ। পরে দুপুর ২টার দিকে তারা পুনরায় আন্দোলন শুরু করেন। বকেয়া বেতন ও ঈদ বোনাসের জন্য শ্রমিকদের আন্দোলনের কথা শুনে রাত সাড়ে ৮টার দিকে ঘটনাস্থলে এসে উপস্থিত হন স্থানীয় সংসদ সদস্য ইকবাল হোসেন সবুজ। এসে তিনি শ্রমিকদের দাবি-দাওয়ার বিষয়ে বিস্তারিত শুনেন। বিষয়টি নিয়ে তাৎক্ষণিক তিনি কারখানা কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলেন। পরে কারখানা কর্তৃপক্ষ শ্রমিকদের বকেয়া বেতন ও ঈদ বোনাস রাতের মধ্যেই পরিশোধে রাজি হন। পরে রাত ১০টা থেকে ক্রমান্বয়ে শ্রমিকদের বকেয়া বেতন ও বোনাস পরিশোধ শুরু করে কারখানা কর্তৃপক্ষ।

কারখানার অপর শ্রমিক রাকিব বলেন, মা-বাবার সাথে ঈদ করব বলে সারা বছরই আশায় থাকি। কারখানার মালিকরা আমাদের এই আবেগ বুঝেন না। দুই দিন ধরে আন্দোলন করছিলাম বেতন ও বোনাসের জন্য। অবশেষে এমপি সাহেব এসে কারখানার সঙ্গে কথা বলে বকেয়া বেতন-বোনাসের ব্যবস্থা করেছেন।

সংসদ সদস্য ইকবাল হোসেন সবুজ বলেন, শ্রমিক আন্দোলনের খরবে এসে তাদের বৈধ দাবি-দাওয়ার কথা জেনে কারখানা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলি। তাদের বেতন-ঈদ বোনাসের ব্যবস্থা করেছি।

শিহাব খান/ওএফ