চুয়াডাঙ্গার দর্শনা চেকপোস্ট দিয়ে ভারতে আটকে পড়া ১১ বাংলাদেশি দেশে ফিরেছেন। সোমবার (১৭ মে) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে তারা দেশে ফেরেন। গত রোববার (১৬ মে) তাদের দেশে ফেরার কথা থাকলেও ভারতীয় দূতাবাসের অনাপত্তিপত্র (এনওসি) না পাওয়ায় এ চেকপোস্ট দিয়ে কেউ ফিরতে পারেননি। 

সোমবার দেশে ফেরাদের মধ্যে তিনজন নারী এবং আটজন পুরুষ রয়েছেন। ভারত থেকে আসার পর স্ক্রিনিংয়ের পাশাপাশি করোনা শনাক্তে বন্দরেই তাদের অ্যান্টিজেন পরীক্ষা করা হয়েছে। কাউকে করোনা পজিটিভ পাওয়া যায়নি। ভারতফেরত ১১ জনকেই বাধ্যতামূলক ১৪ দিনের কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হবে। চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতাল চত্বরের নার্সিং ইনস্টিটিউটে এই ১১ জন ১৪ দিনের কোয়ারেন্টাইনে থাকবেন। 

দর্শনার জয়নগর চেকপোস্টের ইমিগ্রেশন ইনচার্জ উপপরিদর্শক আব্দুল আলিম জানান, সোমবার সন্ধ্যায় ভারতে আটকে পড়া  ১১ জন বাংলাদেশি দেশে ফিরেছেন। এর আগে ভারত থেকে বাংলাদেশিদের আগমন উপলক্ষে সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছে ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ। তবে রোববার দেশে ফেরার কথা থাকলেও কোনো নাগরিক দেশে ফিরতে পারেননি। 

এর আগে শনিবার (১৫ মে) জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধে করণীয় সম্পর্কিত চুয়াডাঙ্গা জেলা কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় ভারতফেরতদের কোয়ারেন্টাইন নিশ্চিতে কঠোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। 

জানানো হয়, যারা দর্শনা সীমান্ত দিয়ে দেশে আসবেন, তাদের সবার পাসপোর্ট পুলিশ হেফাজতে থাকবে। কোয়ারেন্টাইন শেষে সিভিল সার্জনের ছাড়পত্রের পর তা ফেরত দেওয়া হবে।

করোনা নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ সংক্রান্ত উপকমিটির আহ্বায়ক ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মনিরা পারভীন জানান, চিকিৎসাসহ বিভিন্ন কাজে ভারতে গিয়ে আটকা পড়েছেন অনেক বাংলাদেশি। দর্শনা চেকপোস্ট দিয়ে এমন তিন শতাধিক বাংলাদেশিকে ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। রোববার থেকে তাদের দেশে আসার কথা ছিল।

তিনি বলেন, দেশে ফেরার পর চেকপোস্টেই তাদের স্বাস্থ্য ও করোনা পরীক্ষা করা হবে। করোনায় আক্রান্তদের রাখা হবে প্রাতিষ্ঠানিক আইসোলেশনে। অন্যদেরও বাধ্যতামূলক ১৪ দিনের কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হবে।

চুয়াডাঙ্গার জেলা প্রশাসক নজরুল ইসলাম সরকার জানান, কোয়ারেন্টাইন সেন্টার হিসেবে প্রাথমিকভাবে নার্সিং ইনস্টিটিউট ও দামুড়হুদা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সকে নির্বাচন করা হয়েছে। কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থায় নির্ধারিত পরিবহনে আইসোলেশন ও কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে যাত্রীদেরকে পৌঁছানো হবে। পুরো প্রক্রিয়া তদারকির জন্য অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মনিরা পারভীনকে প্রধান করে সাত সদস্যের মনিটরিং কমিটিও গঠন করা হয়েছে। 

আফজালুল হক/আরএআর