বাসের আসনের দুই গুণ যাত্রী তুলছে ট্রাকে
দূরপাল্লার বাস বন্ধ থাকায় এভাবেই যাচ্ছে মানুষ
ঈদের ছুটি শেষ করে কর্মস্থলে ফিরতি সিরাজগঞ্জের মহাসড়কে হাজার হাজার মানুষের এখন একমাত্র ভরসা হয়ে দাঁড়িয়েছে ট্রাক-পিকআপ। দূরপাল্লার বাস বন্ধ থাকায় মোটরসাইকেল, মাইক্রোবাসে মানুষ গন্তব্যে গেলেও সেটা কেবলই হাতে গোনা।
মঙ্গলবার (১৮ মে) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত দেখা গেছে, সিরাজগঞ্জের মহাসড়কের বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম হতে কড্ডা, নলকা ও হাটিকুমরুল গোলচত্বর পর্যন্ত সব জায়গাতেই যাত্রী নিতে দাঁড়িয়ে আছে ট্রাক ও পিকআপ।
বিজ্ঞাপন
কড্ডা ও হাটিকুমরুল গোলচত্বর এলাকা যেন ট্রাকস্ট্যান্ডে রূপ নিয়েছে। আর এতেই উঠে গন্তব্যে যেতে দেখা গেছে হাজার হাজার মানুষকে। এ ছাড়া উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলা থেকে ট্রাক-পিকআপে করে যাচ্ছে হাজার হাজার যাত্রী।
সরেজমিন দেখা যায়, একেকটি ট্রাকে যাচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ জন করে যাত্রী। বাসের আসনের দুই গুণ যাত্রী তুলছে ট্রাকে। এতে একদিকে যেমন অমানবিক কষ্ট, তার ওপরে কোভিড-১৯-এর (করোনাভাইরাস) সংক্রমণের ঝুঁকিও বাড়ছে অনেক গুণ।
বিজ্ঞাপন
কড্ডা এলায় ট্রাকে ওঠার জন্য অপেক্ষা করছেন আলিম, সোলেমান, রহমত আলী, সোহেল রানাসহ শত শত মানুষ। এ ছাড়া পরিবার নিয়ে গাজীপুর যাওয়ার চেষ্টা করছেন মো. জাফর ইকবাল নামের এক গার্মেন্টস কর্মী। তারা সবাই ঢাকা পোস্টকে বলেন, এখান থেকে চন্দ্রা পর্যন্ত ট্রাকে ভাড়া নেওয়া হচ্ছে ৪০০ থেকে ৭০০ টাকা। আমরা ৩০০ করে বলেছি, তবু নিচ্ছে না।
তারা বলেন, কর্মস্থলে যেতে না পারলে চাকরি থাকবে না। তবে এভাবে গেলে ঝুঁকি বেশি বললে তারা বলেন, করোনা হবেই, এটা তো শিওর না। আর হলেও হয়তো বেঁচে থাকব কিন্তু চাকরি হারালে পরিবার নিয়ে এমনিতেই না খেয়ে মরতে হবে। যেহেতু ট্রাক পিকআপ যাত্রী নিয়েই চলছে, তাই বাস বন্ধ করে রাখাটা উচিত হয়নি বলেও জানান তারা।
এদিকে সিরাজগঞ্জের মহাসড়কে দূরপাল্লার কিছু বাস এলেও সব দূরপাল্লার বাস ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। তবে মহাসড়ক ঘুরে কোথাও কোনো যানজট বা তেমন কোনো ধীরগতি দেখা যায়নি।
হাটিকুমরুল গোলচত্বর এলাকা থেকে হাটিকুমরুল হাইওয়ে থানার উপপরিদর্শক আবদুল্লাহেল বাকী ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমরা দূরপাল্লার বাস এলেই ফিরিয়ে দিচ্ছি। তবে মহাসড়কে অন্যান্য গাড়ি স্বাভাবিকভাবে চলাচল করছে। সকাল থেকে এখন পর্যন্ত কোনো ধীরগতি বা যানজট নেই।
মহাসড়কের কড্ডা এলাকায় দায়িত্বরত ট্রাফিক পরিদর্শক মো. আব্দুল গণি ঢাকা পোস্টকে বলেন, দূরপাল্লার বাস চলতে না দেওয়ায় ট্রাক-পিকআপে হাজার হাজার মানুষ চলাচল করছে। এ ধরনের গাড়ির চাপ থাকলেও কোনো যানজট নেই। মহাসড়কে ঈদ-পরবর্তী সময়ে শৃঙ্খলা ধরে রাখতে ও সব ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে পুলিশ কাজ করে যাচ্ছে।
শুভ কুমার ঘোষ/এনএ