নিজেদের উপার্জনের একমাত্র সম্বল হারিয়ে বুকফাটা আহাজারি করা সেই আবদুল্লাহ সরদারের জন্য নতুন একটি ভ্যানের অর্ডার দিয়েছেন সাংবাদিকরা। বৃহস্পতিবার (২০ মে) বেলা ১১টার দিকে নতুন ভ্যানের জন্য অর্ডার করা হয়।

খুলনার চুকনগর বাজার এলাকার স্থানীয় সাংবাদিকরা মিলে উদ্যোগ নিয়ে নতুন ভ্যানের ব্যবস্থা করছেন।

আবদুল্লাহ সরদার (১৪) সাতক্ষীরার তালা উপজেলার খলিলনগর ইউনিয়নের হাজরাকাটি গ্রামের বাবু সরদারের ছেলে। বুধবার (১৯ মে) বেলা ১১টার দিকে চুকনগর বাজারের সাউথ বাংলা এগ্রিকালচার অ্যান্ড কমার্স ব্যাংকের সামনে থেকে তার মোটরভ্যানটি চুরি করে নিয়ে যায় দুই প্রতারক। এরপর রাস্তায় কান্নায় ভেঙে পড়ে আবদুল্লাহ।

ভ্যান পাওয়ার পর এক প্রতিক্রিয়ায় বাবু সরদার ঢাকা পোস্টকে বলেন, ভ্যানটি আমার পরিবারের একমাত্র উপার্জন মাধ্যম ছিল। আমি মাঝেমধ্যে কৃষিকাজ করি। ছেলেটা মোটরভ্যানটি নিয়ে রোজগারের জন্য রাস্তায় নামে। এক ছেলে, এক মেয়ে, স্ত্রী ও মাকে নিয়ে আমার সংসার। ভ্যানটি চুরি হয়ে গেলে আমি দিশেহারা হয়ে পড়ি। সাংবাদিক ভাইয়েরা আমাকে ও ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে নতুন একটি ভ্যানের জন্য অর্ডার দিয়েছেন।

খুশিতে আত্মহারা আবদুল্লাহ সরদার জানায়, ভ্যানটি চুরি করে নিয়ে যাওয়ার পর বুকফাটা কান্না এসেছিল। সেই কান্নায় মানুষের মন গলে যাবে, আমি ভাবিনি। তবে এখন আমি খুশি।

খুলনার চুকনগর প্রেসক্লাবের সভাপতি রুহুল আমিন ঢাকা পোস্টকে বলেন, ভ্যান চুরি হওয়ার পর ছেলেটি রাস্তায় কান্নাকাটি শুরু করে। তার আহাজারি মানুষের হৃদয় ছুঁয়ে যায়। চুকনগরের স্থানীয় সাংবাদিকরা একত্র হয়ে নিজস্ব অর্থে এবং হৃদয়বান মানুষের সহযোগিতায় ৪৫ হাজার টাকায় নতুন একটি ভ্যানের অর্ডার করা হয়েছে। ১৫ হাজার টাকা দোকানে জমা দেওয়া হয়েছে। বাকি টাকা অনেকে দিতে চেয়েছেন।

তিনি বলেন, মোটর ভ্যানটি তৈরি করতে সময় লাগে। আগামী ১ জুন আমরা ভ্যানটি আবদুল্লাহ ও তার বাবা বাবু সরদারের কাছে হস্তান্তর করব। আমরা সবাই মিলে পরিবারটির মুখে হাসি ফিরিয়ে দিতে চাই।

এর আগে বুধবার (১৯ মে) অনলাইন নিউজ পোর্টাল ঢাকা পোস্টে ‘ভ্যান চুরির পর কিশোরের বুকফাটা আহাজারি’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এরপর সাংবাদিকরা তার পাশে দাঁড়ান।

আকরামুল ইসলাম/এনএ