বান্দরবানের থানচি উপজেলার মিয়ানমার সীমান্তঘেঁষা বড় মাদক ম্রো পাড়ায় ডায়রিয়ার প্রকোপ দেখা দিয়েছে। এক সপ্তাহ ধরে পাড়ার অধিকাংশ পরিবারের ছোট-বড় অর্ধশতাধিক মানুষ ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। দুর্গম এলাকা হওয়ায় পাড়ার বাসিন্দারা স্থানীয় জনপ্রতিনিধির কাছে সহযোগিতা চেয়েছে।

মঙ্গলবার (১৮ মে) থেকে পাড়াবাসী বড় মদক বাজারের স্থানীয় ফার্মেসি থেকে প্রয়োজনীয় স্যালাইন ও ওষুধ কিনে নিচ্ছে। 

স্থানীয়রা জানান, ম্রো এলাকায় মুরং বা ম্রো জনগোষ্ঠীর বাস। আর এলাকাটিতে কয়েক দিনে অর্ধশতাধিক মানুষ ডায়রিয়া আক্রান্ত হয়েছে। উপজেলা সদর থেকে ৯৫ কিলোমিটার দূরে দুর্গম পাহাড়ি এলাকা হওয়ায় কেউ হাসপাতালে আসেনি। তবে ডায়রিয়ায় ১ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন রেমাক্রী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মুইশৈথুই মারমা রনি।

আরও জানান, ডায়রিয়ার প্রকোপের কারণে উপজেলার বড় মদক বাজার ও রেমাক্রী বাজারের স্যালাইন ও প্রয়োজনীয় ওষুধ শেষ হয়ে যাওয়ায় স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানকে মঙ্গলবার জানানো হয়েছে বলে জানান স্থানীয়রা। তবে ওই এলাকাগুলোয় মোবাইলের নেটওয়ার্ক না থাকায় স্থানীয় কারও সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা যায়নি।

থানচি রেমাক্রী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মুইশৈথুই মারমা রনি ঢাকা পোস্টকে বলেন, ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডে সীমান্তঘেঁষা পাতোয়া পাড়ার লোকজন ডায়রিয়ার প্রকোপের বিষয়টি আমাকে জানালে আমি থানচি স্বাস্থ্য বিভাগকে স্বাস্থ্যসেবা টিম পাঠানোর জন্য অনুরোধ করেছি।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. ওয়াহিদুজ্জামান মুরাদ ঢাকা পোস্টকে বলেন, ইউপি চেয়ারম্যান মঙ্গলবার অর্ধশতাধিক মানুষ আক্রান্তের বিষয়টি আমাকে অবহিত করেন। কিন্তু জনবল-সংকট, যোগাযোগ-বিছিন্নতা, নৌপথে নৌকা না পাওয়ায় সেখানে যেতে দেরি হচ্ছে।

তিনি বলেন, আমি উপজেলা প্রশাসন, চেয়ারম্যানের কাছে নৌকার জন্য সহযোগিতা চেয়েছিলাম কিন্তু সহযোগিতা পাইনি। সর্বশেষ বিজিবির সহযোগিতা চেয়েছি, কিন্তু ইঞ্জিননৌকার সহযোগিতা না পাওয়ায় দেরি হচ্ছে।

শুক্রবার (২১ মে) রেমাক্রী ইউনিয়ন কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার (স্বাস্থ্যসহায়তা প্রদানকারী) সাচমং মারমা ও কয়েকজন স্বাস্থ্য সহায়ককে (মাঠকর্মী) পর্যাপ্ত পরিমাণ স্যালাইন ও ওষুধসহ আমরা মেডিকেল টিম পাঠিয়েছি।

উল্লেখ্য, বান্দরবানের থানচিসহ বিভিন্ন উপজেলায় শুষ্ক মৌসুমে তীব্র পানির সংকটের কারণে ঝিরি ও ঝরনার পানি পান করতে হয় স্থানীয়দের। ফলে ডায়রিয়া, পেটের পীড়াসহ বিভিন্ন ব্যাধিতে আক্রান্ত এবং মৃত্যুর খবরও পাওয়া যায় প্রতিবছর। এবারও এর ব্যতিক্রম হয়নি।

রিজভি রাহাত/এনএ