টঙ্গী ইজতেমা মাঠে সংঘর্ষে আহত আরও এক মুসল্লির মৃত্যু
গাজীপুরের টঙ্গীতে তাবলিগ জামাতের মাওলানা সাদ কান্ধলভি ও মাওলানা জুবায়েরপন্থিদের মধ্যে সংঘর্ষে আহত মিজানুর রহমান নামে আরও এক মুসল্লি মারা গেছেন।
মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) দুপুরে মাওলানা সাদের মিডিয়া সমন্বয়ক মো. সায়েম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
বিজ্ঞাপন
তিনি জানান, মিজানুর রহমান কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার বীর মুক্তিযোদ্ধা ছবির উদ্দীন প্রামাণিকের ছেলে। তিনি তাবলিগ জামাতের সাদপন্থিদের একজন সক্রিয় সদস্য এবং ফুলবাড়ী থানার জিম্মাদার সাথী ছিলেন। গত ১৮ ডিসেম্বর টঙ্গীর ইজতেমা মাঠে সাদপন্থিদের পাঁচ দিনের জোড় ইজতেমাকে কেন্দ্র করে মাওলানা জুবায়েরপন্থিদের সংঘর্ষে ওই সময় মিজানুর রহমান গুরুতর আহত হন। তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে এক মাস ১২ দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর সোমবার রাতে তার মৃত্যু হয়।
নিহত মিজানুর রহমানের চাচাতো ভাই রিপন জানান, গত ১৬ ডিসেম্বর তাবলিগের জোড়ে অংশগ্রহণের উদ্দেশ্যে কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ি থেকে ঢাকায় আসেন মিজানুর। পরদিন তার আমার বাসায় আসার কথা ছিল কিন্তু তিনি তাবলিগের মাঠে যান। ১৮ ডিসেম্বর থেকে আমরা তার কোনো খোঁজ পাচ্ছিলাম না। পরে ১৯ ডিসেম্বর বিভিন্ন হাসপাতালে খোঁজাখুঁজি করি। একপর্যায়ে ঢাকা মেডিকেলে এসে অজ্ঞাত পরিচয়ে ভর্তি হওয়া মিজানুরকে শনাক্ত করি। চিকিৎসাধীন থাকার পর আজ (মঙ্গলবার) ভোরের দিকে তার মৃত্যু হয়।
বিজ্ঞাপন
তিনি আরও বলেন, তিন সন্তানের জনক মিজানুর বাবার ব্যবসা-প্রতিষ্ঠান দেখাশোনা করতেন। আমার জানামতে তিনি তাবলিগ-জামাত করতেন কিন্তু কোনো পক্ষ নিতেন না।
মাওলানা সাদপন্থির সাথী গোলাম মোস্তফা দাবি করে বলেন, আমাদের টঙ্গি ইজতেমা মাঠে পাঁচ দিনের জোড় ছিল। এই জোড় উপলক্ষ্যে সারাদেশ থেকে আমাদের অনেক সাথী ভাইয়েরা এসেছিল। ওই দিন একটি অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটে। মাওলানা সাদপন্থিদের ওপর যুবায়েরপন্থিরা হামলা করে। এতে আমাদের সাথী ভাই মিজানুর রহমান গুরুতর আহত হন। শুরু থেকেই তার নাম অজ্ঞাত অবস্থায় থাকে। পরে তার পরিবারের লোকজন এসে শনাক্ত করে এবং তাদের কাছে হ্যান্ডওভার করা হয়। আমাদের সাথী ভাইরাও তার সঙ্গে সার্বক্ষণিক ছিল। মিজানুরকে গ্রামের বাড়িতে দাফন করা হবে বলে জেনেছি।
শাহবাগ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আশরাফ আলী জানান, ঘটনাটি টঙ্গির ইজতেমা মাঠের, এটি ঢাকার বাইরের এলাকা। তাই আমরা সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে ময়নাতদন্তের ব্যবস্থা করেছি। ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে মরদেহ হস্তান্তর করা হয়েছে।
এ বিষয়ে টঙ্গী পশ্চিম থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইসকান্দার হাবিবুর রহমান বলেন, মিজানুর রহমানের মৃত্যুর খবর পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার প্রস্তুতি চলছে।
এসএএ/শিহাব খান/এমজেইউ/এমজে