ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলার নিঝুম দ্বীপ ইউনিয়ন প্লাবিত হয়েছে। এতে নিঝুম দ্বীপ জাতীয় উদ্যানের ছয় হাজার হরিণের জীবন বিপন্নের শঙ্কা দেখা দিয়েছে।

২০০১ সালে নোয়াখালীর বিচ্ছিন্ন দ্বীপ হাতিয়া উপজেলার নিঝুম দ্বীপ ও জাহাজমারা ইউনিয়নের ১০টি চর নিয়ে নিঝুম দ্বীপ জাতীয় উদ্যান প্রতিষ্ঠা করা হয়। এর আয়তন ৪০ হাজার ৩৯০ বর্গকিলোমিটার। নিঝুমদ্বীপের বনে চার হাজার হরিণের সুপেয় পানি পানের জন্য অনেক আগে চারটি বড় পুকুর খনন করা হয়েছিল। বর্ষা মৌসুমে হরিণের দল এসব পুকুরের উঁচু পাড়ে আশ্রয় নিত।

বন বিভাগের নিঝুমদ্বীপ জাহাজমারা রেঞ্জ কর্মকর্তা এস এম সাইফুর রহমান ঢাকা পোস্টকে বলেন, দীর্ঘদিন ধরে এসব পুকুরের খনন না হওয়ায় পুকুর পাড় অনেকটা সমতল ভূমিতে পরিণত হয়েছে। এ কারণে ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে জোয়ারের পানিতে পুকুর তলিয়ে যাওয়ায় আশ্রয় নেওয়ার জন্য হরিণের দল বিভিন্ন চর ও লোকালয়ে ছুটছে।

জরুরি ভিত্তিতে সুপেয় পানির পুকুরগুলো খনন করে চারপাশ উঁচু করলে ভবিষ্যতে বন্যার হাত থেকে হরিণ ও অন্যান্য বন্য প্রাণীকে রক্ষা করা যেতে পারে বলে মনে করেন রেঞ্জ কর্মকর্তা।

নিঝুম দ্বীপ ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মেহরাজ উদ্দিন ঢাকা পোস্টকে বলেন, নিঝুম দ্বীপ ইউনিয়নে কোনো বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ (বেড়িবাঁধ) নেই। ফলে নদীতে জোয়ার এলে মেঘনার কোলঘেঁষা এ দ্বীপ ইউনিয়নের ৬০ হাজার লোক জোয়ারের পানিতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সেই সঙ্গে হরিণ ও অন্যান্য প্রাণীও ভেসে যায়। 

নোয়াখালীর বিভাগীয় বন কর্মকর্তা বিপুল কৃষ্ণদাস ঢাকা পোস্টকে বলেন, হাতিয়ার নিঝুম দ্বীপ জাতীয় উদ্যানের বিভিন্ন চরে প্রায় ৬ হাজার হরিণ রয়েছে। ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে ৭ থেকে ৮ ফুট উঁচু জোয়ারের পানি প্রবেশ করায় হরিণের আবাসস্থল তলিয়ে গেছে।

তিনি বলেন, জাতীয় উদ্যানের উন্নয়নে এবং পরিবেশবান্ধব পর্যটন প্রকল্প হাতে নেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। এ ছাড়া হরিণের সুপেয় পানির পুকুর খনন করা অত্যাবশ্যক। এসব বিষয় মাথায় রেখে প্রকল্প বাস্তবায়ন করলে নিঝুম দ্বীপের হরিণ ও জীববৈচিত্র্য রক্ষায় কার্যকরী ভূমিকা রাখবে।

হাসিব আল আমিন/এনএ/জেএস