পানি সম্পদ উপদেষ্টা
তিস্তার ভাঙনরোধে মার্চের মাঝামাঝি হতে কাজ শুরু করা হবে
পানি সম্পদ এবং পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, তিস্তার দুই পাড়ের ৪৫ কিলোমিটার ভাঙনপ্রবণ এলাকার মধ্যে অধিক ভাঙন কবলিত ২০ কিলোমিটার এলাকার ভাঙনরোধের কাজ আগামী মার্চ মাসের মাঝামাঝি হতে শুরু করা হবে। বাকি অংশের ভাঙনরোধের কাজ পর্যায়ক্রমে শুরু করা হবে।
রোববার (৯ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে রংপুরের কাউনিয়া উপজেলায় তিস্তা রেলসেতু সংলগ্ন এলাকায় ‘তিস্তা নিয়ে করণীয় শীর্ষক’ গণশুনানি অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে পানি সম্পদ উপদেষ্টা এসব কথা বলেন।
বিজ্ঞাপন
সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, ভাঙনরোধের কাজ তদারকির জন্য একটা ওয়ার্কিং গ্রুপ করে দেওয়া হবে। যেখানে ভাঙনপ্রবণ পাঁচ জেলার প্রতিটি হতে একজন করে শিক্ষার্থী প্রতিনিধি থাকার পাশাপাশি স্থানীয় এলাকার একজন করে প্রতিনিধিত্ব করবে। জবাবদিহিতা ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে এমনটি করা হবে বলে উল্লেখ করেন।
উপদেষ্টা আরও বলেন, তিস্তাপাড়ের মানুষের মতামত নিয়েই তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হবে।
বিজ্ঞাপন
তিনি বলেন, আপনাদের মতামত ছাড়া পানি উন্নয়ন বোর্ড চীনের সঙ্গে তিস্তা মহাপরিকল্পনার কোনো চুক্তি চূড়ান্ত করবে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের ডিজাইনে এবং পরিকল্পনা বাস্তবায়নে আপনারা স্থানীয়রা থাকবেন।
গণশুনানি অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তৃতায় স্থানীয় সরকার এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার পররাষ্ট্রনীতির ক্ষেত্রে শিরদাঁড়া উঁচু করে দাঁড়িয়েছে। তিস্তা চুক্তি বাস্তবায়ন এবং পানির হিস্যা আদায়ের ক্ষেত্রে ভারতের সঙ্গে মাথা উঁচু করে কথা বলবে বাংলাদেশ।
তিনি আরও বলেন, আন্তর্জাতিক পানি আইনের ভিত্তিতে কূটনৈতিক চাপ সৃষ্টি করা হবে, যাতে ভারত চুক্তিতে স্বাক্ষর করতে বাধ্য হয়। ২০১১ সাল থেকে বাংলাদেশ তিস্তার পানির ন্যায্য হিস্যা আদায়ের জন্য একটি খসড়া নিয়ে ঘুরছে। তবে, বিগত ফ্যাসিবাদী সরকার ভারতকে শুধু ছবি তোলার সুযোগ দিয়েছে, কিন্তু তিস্তার ব্যাপারে কোনো কার্যকরী পদক্ষেপ নেয়নি।
উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ বলেন, পতিত হাসিনা সরকারের নতজানু পররাষ্ট্রনীতির কারণে তারা ভারতের কাছ থেকে কিছুই আদায় করতে পারেনি।
এ সময় উত্তরবঙ্গের যোগাযোগব্যবস্থায় উন্নয়ন নিশ্চিত করতে বিশেষ বরাদ্দ দেওয়া এবং কৃষকদের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করতে কোল্ড স্টোরেজ স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হবে বলে জানান উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ।
এছাড়া তিস্তা নদী নিয়ে স্থানীয় জনগণের উদ্বেগ ও চাহিদা শোনা যায়, যেখানে তারা বর্তমান সরকারের আমলে এই মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের দাবি জানান।
রংপুরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রবিউল ফয়সালের সভাপতিত্বে গণশুনানি অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন নর্দার্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. আতিক মোজাহিদ, জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্য সচিব আখতার হোসেন, আবু সাঈদ লিয়ন প্রমুখ।
এছাড়া গণশুনানিতে উপস্থিত ছিলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ডের মহাপরিচালক প্রকৌশলী এ. কে. এম. তাহমিদুল ইসলাম, পানি উন্নয়ন বোর্ড উত্তরাঞ্চল জোনের প্রধান প্রকৌশলী মাহবুবুর রহমান, রংপুরের পুলিশ সুপার মো. আবু সাইমসহ পানি উন্নয়ন বোর্ডের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
ফরহাদুজ্জামান ফারুক/আরকে