রামপালে গ্রামরক্ষা বাঁধটি জোয়ারের পানির তোড়ে ভেঙে গেছে

‘ইয়াসের খবর শুনে আমরা সবাই সতর্ক ছিলাম বাঁধ রক্ষায়। গ্রামের সবাই মিলে চেষ্টা করেছি গ্রামরক্ষা বাঁধটি বাঁচাতে। সকাল থেকে বাঁধের ওপর মাটি দিয়েছি। কিন্তু দুপুরের আগ মুহূর্তে জোয়ারের পানির প্রবল চাপে গ্রামরক্ষা বাঁধটি ভেঙে যায় চোখের সামনেই।’

বাগেরহাটের রামপাল উপজেলার হুড়কা গ্রামের গ্রামরক্ষা বাঁধটি জোয়ারের পানির তোড়ে ভেঙে গেলে নিজেদের সর্বোচ্চ চেষ্টার কথা বলছিলেন পরিতোষ দে নামের এক মৎস্যচাষি।

তিনি আরও বলেন, ‘জোয়ারের পানিতে আমাদের অন্তত ২০০ মৎস্য ঘের তলিয়ে গেছে। শতাধিক বাড়ি-ঘরে পানি উঠেছে। এত চেষ্টা করেও বাঁধটিকে রক্ষা করতে পারলাম না। আমাদের এখানের বেশিরভাগ মানুষ মৎস্য চাষের ওপর নির্ভরশীল। কিন্তু সব-ই ভেসে গেল।’

বৃহস্পতিবার (২৭ মে) দুপুরে বাগেরহাটের রামপালে বগুরা নদীর তীরবর্তী হুড়কা গ্রামে জোয়ারের পানিতে গ্রামরক্ষা বাঁধ ভেঙে লোকালয় প্লাবিত হয়। জেলা প্রশাসনের তাৎক্ষণিক উদ্যোগ ও স্থানীয়দের স্বেচ্ছাশ্রমসহ শত প্রচেষ্টায়ও রক্ষা হয়নি বাঁধটি। তলিয়ে যায় হুড়কা গ্রামের দুই শতাধিক মৎস্য ঘের। সঙ্গে প্লাবিত হয় বাড়িঘর।

হুড়কা গ্রামের সুবাশ চন্দ্র ঢালী বলেন অসিম কুমার ও কার্তিক সাহা বলেন, ২৪ মে আমাদের গ্রামরক্ষা বাঁধটি একবার ভেঙে যায়। তখন জেলা প্রশাসন ও স্থানীয় চেয়ারম্যানের সহযোগিতায় মাটি ও বাঁশের খুঁটি দিয়ে বাঁধটিকে রক্ষা করি। যার ফলে তেমন ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। তবে বৃহস্পতিবার জোয়ারের পানি বাড়তে থাকলে প্রবল চাপে বাঁধ ভেঙে আমাদের গ্রামের পানি প্রবেশ করে। হুড়কা গ্রামকে বাঁচাতে হলে বগুরা নদীর পাশে গাইড ওয়াল দেওয়ার দাবি জানান তারা।

বাগেরহাট জেলা মৎস্য কর্মকর্তা এসএম রাসেল বলেন, রামপালে বাঁধ ভেঙে ঘের তলিয়ে যাওয়ার খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। রামপাল উপজেলার বেশির ভাগ মানুষ মৎস্য চাষের ওপর নির্ভরশীল। প্রতিটি দুর্যোগে তারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ঘের ব্যবসায়ীদের রক্ষায় এখানে টেকসই বেড়িবাঁধ দেওয়া প্রয়োজন।

হুড়কা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান তপন গোলদার বলেন, স্থানীয়দের সঙ্গে নিয়ে সোমবার ভেঙে যাওয়া বাঁধটি আমরা মোটামুটি রক্ষা করেছিলাম। আজ সকাল থেকে এলাকাবাসী ও পরিষদের পক্ষ থেকে বাঁধটিতে বাঁশের খুঁটি ও মাটি দেওয়া হচ্ছিল। কিন্তু ঠেকাতে পারলাম না।

তানজীম আহমেদ/এমএসআর