দীর্ঘ ২০ বছরের অভিজ্ঞতায় পাখি শিকারের নানান কৌশল রপ্ত করেছেন নওগাঁর পাখি শিকারী কামরুজ্জামান (৩৫)। এসব কৌশল খাটিয়ে পাখি শিকার করতে গিয়ে অবশেষে ধরা পড়েছেন তিনি। তাকে কারাদণ্ড দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। 

শুক্রবার (২৮ মে) দুপুরে নওগাঁর মহাদেবপুর উপজেলার খাজুর এলাকা থেকে আটক করে সাতদিনের কারাদণ্ড দেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান। এ সময় উপস্থিত ছিলেন মহাদেবপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আহসান হাবিব ভোদন, ভাইস চেয়ারম্যান অনুকূল চন্দ্র সাহা, উপজেলা কৃষি অফিসার অরুণ রায়, মহাদেবপুর থানার এসআই জাহিদ হাসান।

দণ্ডপ্রাপ্ত কামরুজ্জামান উপজেলার খাজুর এলাকার হাবেদ আলীর ছেলে।

স্থানীয় প্রাণ প্রকৃতি সংগঠনের সভাপতি কাজী নাজমুল হোসেন বলেন, শুক্রবার সকালে কোচপাড়া বিলে বিষটোপ দিয়ে পাখি মারছিলেন কামরুজ্জামান। আমাদের দেখে তিনি পাখিগুলো তড়িঘড়ি করে ব্যাগে ভরে ফাঁদ গুছিয়ে দৌড়ে পালিয়ে যেতে থাকেন। আমরা তার পিছু নিই। কামরুজ্জামান ততক্ষণে বাড়িতে গিয়ে বিষটোপ দিয়ে শিকার করা পাখি গায়েব করে দেন। খাঁচায় আটকানো কয়েকটি ডাহুকসহ বিভিন্ন প্রজাতির পাখি শিকারের অসংখ্য ফাঁদ, খাঁচা, পাখি ধরার নানা সরঞ্জাম ছিল তার বাড়িতে। এসব দেখে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে ফোনে বিষয়টা জানানো হয়। তিনি দ্রুত ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়ে দেন। কিছুক্ষণ পর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এসে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে তাকে কারাদণ্ড কামরুজ্জামানকে দেন।

ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান ঢাকা পোস্টকে বলেন, বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা আইন অনুযায়ী পাখি শিকার, হত্যা, ক্রয়-বিক্রয়, আটক রাখা, ইত্যাদি দণ্ডনীয় অপরাধ। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখি পাখি ধরার সরঞ্জাম ও খাঁচায় ডাহুক পাখি ছিল এবং কিছু পাখি মেরে ফেলা হয়েছে। পাখি মারার কারণ জিজ্ঞেস করলে কামরুজ্জামান উত্তর না দিয়ে বলেন- ‘আমি কুড়ি বছর ধরে নানা কৌশল শিখে পাখি ধরি।’ এ সময় তিনি তর্কে লিপ্ত হন। পরে তাকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে সাতদিনের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। সকলের উপস্থিতিতে জলাশয়ের কাছে পাখিগুলো অবমুক্ত করে ফাঁদগুলো পুড়িয়ে ধ্বংস করা হয়।

মহাদেবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আজম মাহমুদ বলেন, ভ্রাম্যমাণ আদালত কারাদণ্ড দেওয়ার পর কামরুজ্জামানকে থানায় হস্তান্তর করেন। পরে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

শামীনূর রহমান/আরএআর