বিদ্যালয় ভবনের দেয়ালে দেয়ালে শহিদ মিনার, স্মৃতিসৌধ অঙ্কন করেছেন নৈশপ্রহরী

টাঙ্গাইলের নাগরপুর উপজেলার বারাপুষা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দফতরি কাম নৈশপ্রহরী হারুন অর রশিদের হাতের ছোঁয়ায় বদলে গেছে বিদ্যালয়ের চিত্র। মহামারি করোনার মধ্যে বিদ্যালয় বন্ধ থাকায় তিনি বিদ্যালয়টি নিজ হাতে সাজিয়েছেন। বিদ্যালয় ভবনের দেয়ালে দেয়ালে শহিদ মিনার, স্মৃতিসৌধ অঙ্কন করেছেন। এছাড়াও বিদ্যালয়ের বাগানে বাংলাদেশের মানচিত্র, জাতীয় সংসদ ভবন তৈরি করেছেন। করোনার প্রাদুর্ভাবে যেখানে সারাদেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ সেখানে হারুন নিজ কর্মস্থলকে ভিন্নরূপ দিয়েছেন। হাতে কলমে শিল্পকর্মের কোনো শিক্ষা না থাকলেও কারুকাজ করে যাচ্ছেন অবিরত।

সরেজমিনে দেখা গেছে, বারাপুষা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বাইরের দেয়ালে শহিদ মিনার আর স্মৃতিসৌধের আঁকা হয়েছে। হারুন নিজ হাতে বিদ্যালয়ে একটি চমৎকার বাগান  তৈরি করেছেন। বিদ্যালয়ের প্লে কর্নারের সাজসজ্জাটিও তিনি করেছেন। সেখানে বাংলাদেশের মানচিত্র, বিদ্যালয়ের অফিস কক্ষ সজ্জিতকরণ, জাতীয় সংসদ ভবন, শহিদ মিনার স্মৃতি সৌধের আকৃতি তৈরি করা হয়েছে। বিদ্যালয়ের প্রতি ভালোবাসা থেকে হারুন তার দায়িত্বের বাইরে গিয়ে এই কাজগুলো করেছেন।

সাজানো হয়েছে বিদ্যালয়ের আঙ্গিনা

নৈশপ্রহরী হারুন অর রশিদ বলেন, প্রতিনিয়তই স্বপ্ন দেখি বিদ্যালয়টি পড়ালেখা,সাংস্কৃতিক কার্যক্রম ও দৃষ্টিনন্দন বিদ্যালয় হিসেবে দেশের অন্যতম বিদ্যাপীঠে পরিণত হবে। করোনার কারণে বিদ্যালয় বন্ধ। তাই বিদ্যালয়কে ভালোবেসে এসব চিত্রকর্ম করেছি। যাতে শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ে এসে মনোযোগ দিয়ে পড়ালেখা করতে পারে,  দেশের ইতিহাসের চিত্র দেখতে পারে।

স্থানীয়রা জানান, এলাকার শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়মুখী করতে হারুনের এমন উদ্যোগ খুবই প্রশংসার দাবিদার। গ্রামাঞ্চলের কোমলমতি শিক্ষার্থীদের পার্কে গিয়ে খেলাধুলা করার সুযোগ হয়ে ওঠে না। বিদ্যালয়ের পড়ালেখার পাশাপাশি এটিও একটি বিনোদনের অংশ হবে। শিক্ষার্থীরা পড়ালেখায় আরও বেশি উৎসাহী হবে।

বিদ্যালয়ের দেয়াল অঙ্কন করছেন নৈশপ্রহরী হারুন অর রশিদ

নাগরপুর উপজেলা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা জি এম ফুয়াদ মিয়া বলেন, বিদ্যালয়ের প্রতি ভালোবাসা না থাকলে কেউ মনের মাধুরী মিশিয়ে এমন কাজ করতে পারে না। তার (হারুনের) হাতের স্পর্শে যে কাজগুলো দৃশ্যমান হয়েছে তার প্রতিটি পরতে পরতে বিদ্যালয়ের প্রতি সুগভীর প্রেম ও মমত্ববোধ রয়েছে। হারুন সবার জন্য এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। উপজেলার অন্যান্য বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও দফতরি কাম নৈশপ্রহরীরা বিদ্যালয়টি ঘুরে হারুনের কাজ দেখে উচ্ছ্বসিত।

আরএআর