মাদারীপুরে ঐতিহ্যবাহী মেলায় দর্শনার্থীদের ভিড়
মাদারীপুরে ২০০ বছরের ঐতিহ্যবাহী মেলায় ঈদের আনন্দ উদযাপন করেছেন দর্শনার্থীরা। সোমবার (৩১ মার্চ) সকাল থেকে রাত পর্যন্ত মেলায় ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। দূর-দূরান্ত থেকে আগত দর্শনার্থীদের পদচারণায় মুখরিত ছিল ঈদ আনন্দ মেলা।
ছোট থেকে বড়, নারী থেকে পুরুষের পছন্দের সব কিছু পাওয়া যায় এখানে। বিভিন্ন আসবাবপত্রের পাশাপাশি মুখরোচক সব খাবারের সমারোহ ঘটে মেলায়। শিশু-কিশোর, যুবক-যুবতি, বৃদ্ধ-বৃদ্ধা সব বয়সী মানুষ এখানে আসে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে। মেলাটি এক দিনের হলেও বেচাকেনা চলে দুই দিন পর্যন্ত।
বিজ্ঞাপন
প্রতি বছর ঈদের প্রথম দিনে মাদারীপুর জেলার কালকিনি উপজেলার উত্তর রমজানপুর গ্রামের ঈদগাহ মাঠে এ মেলার আয়োজন করা হয়।
জানা গেছে, কালকিনি উপজেলার উত্তর রমজানপুর গ্রামে স্থানীয় মোরল (ব্রিটিস পিরিয়ড) হাজী লতিফ হোসেন বেপারীর প্রতিষ্ঠিত জামে মসজিদ ঈদগাহ মাঠে প্রায় ২০০ বছর পূর্বে ঈদের দিন কয়েকটি মিষ্টির দোকান অনুমতি নেয়। ওই মিষ্টি বিক্রির মধ্যে দিয়েই এ মেলার সূচনা হয়। সেই থেকে শুরু করে এ মেলা ব্যাপকভাবে পরিধি লাভ করেছে। বর্তমানে বেশ কয়েকটি জেলার ব্যবসায়ীরা এখানে ব্যবসা করার জন্য দোকান দিয়ে বসেন। আর দর্শনার্থীরা আসেন ঈদের দিনটিকে আরও আনন্দময় করতে।
বিজ্ঞাপন
স্থানীয়রা জানান, এখান থেকে কেউ খেলনা গাড়ি, কেউ কসমেটিকস আবার কেউ আসবাবপত্র কিনে নিয়ে যান। আবার ভোজন বিলাসী মানুষ আনন্দ নিতে বন্ধু বা পরিবার নিয়ে খাবারের দোকানগুলোতে ভিড় জমায়। তাদের তালিকার শীর্ষে রয়েছে ফুসকা ও চটপটি। এ মেলাকে কেন্দ্র করে একদিনের জন্য হলেও দেখা হয় বহু বছর বা বহু দিন না দেখা বন্ধুর সঙ্গে। এখানে লাখ লাখ টাকার লেনদেন হয়। স্থানীয় ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন মেলায় ঘুরে বেড়ানো ব্যবসায়ীরা অপেক্ষায় থাকেন এই দিনটির জন্য।
পার্শ্ববর্তী বরিশাল জেলার গৌরনদী উপজেলা থেকে ঘুরতে আসা দর্শনার্থী শিউলী বেগম বলেন, আমার বাড়ি বরিশালের গৌরনদী। তারপরও আমরা ছোটবেলা থেকে এই মেলায় আসি। আমরা প্রতি বছর এই দিনটির জন্য অপেক্ষা করি।
দর্শনার্থী আকাশ বলেন, আমাদের অনেক আবেগের জায়গা এই স্থানটি। এই দিনটিতে প্রতি বছর বন্ধুদের সঙ্গে এখানেই মিলন মেলা ঘটে।
বাগেরহাট জেলা থেকে আসা কসমেটিকস ব্যবসায়ী আবদুর রহিম বলেন, এই মেলাটা আমার জন্য আশীর্বাদ স্বরুপ। এই মেলায় আমি প্রচুর পণ্য বিক্রি করি। সবচেয়ে ভালো বিষয় হলো এখানে কোনো প্রকার চাঁদাবাজি নেই। এক দিনের মেলা হলেও বেচাকেনা চলে দুই দিন। প্রথম দিন বেচাকেনা বেশি হয়।
মেলা পরিচালনা কমিটির সদস্য স্বপন মোল্লা ও বদিউজ্জামান বিল্পব বলেন, সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী নিয়োজিত রয়েছে। তার পাশাপাশি মেলায় প্রবেশ পথের প্রতিটি জায়গায় আমাদের স্বেচ্ছাসেবকেরা কাজ করছে। কোনো প্রকার চাঁদাবাজির প্রশ্নে আমরা আপসহীন। ক্রেতা-বিক্রেতাসহ দর্শনার্থীদের নিরাপত্তাই আমাদের প্রধান লক্ষ্য।
আকাশ আহম্মেদ সোহেল/আরএআর