নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. এনায়েত হোসেনের বিরুদ্ধে ঘুষ গ্রহণ ও অন্যান্য অনিয়মের অভিযোগে দুটি পৃথক তদন্ত কমিটি গঠিত হয়েছে। ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি ও নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার পৃথকভাবে কমিটি দুটি গঠন করেন।

এরমধ্যে ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজির নির্দেশে এক সদস্য এবং নারায়ণগঞ্জ পুলিশ সুপারের নির্দেশে ২ সদস্যের কমিটি গঠিত হয়। দুটি কমিটিই শনিবার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে তাদের কার্যক্রম শুরু করেছেন।

গত শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আড়াইহাজার থানার ওসি মো. এনায়েত হোসেনের ঘুষ গ্রহণের একটি ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়ে। এতে উপজেলার পাশাপাশি জেলা জুড়ে তোলপাড় শুরু হয়। গোটা উপজেলায় শুরু হয় সমালোচনা। সাধারণ মানুষকে বলতে শোনা যায়, ৫ আগস্টের মতো বড় ঘটনার পরেও পুলিশের চরিত্র পাল্টায়নি।

এদিকে এই ঘটনা ধামাচাপা দিতে শনিবার (১৯ এপ্রিল) সকাল ১১টায় সাংবাদিকদের থানায় ডেকে ঘটনার ব্যাখ্যা দেন ওসি এনায়েত হোসেন। তিনি ঘুষ লেনদেনের বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, ২ থেকে ৩ মাস আগে খাগকান্দা এলাকায় কিস্তির টাকা নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে বিরোধ দেখা দেয়।

এ নিয়ে ভুক্তভোগী এক নারী থানায় অভিযোগ করেন। তবে ঘটনাটি অনেকদিন আগের হওয়ায় ভুক্তভোগীদের নাম ভুলে গেছি। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে বিএনপি নেতা বেলায়েত হোসেন, মাসুম শিকারিসহ আরও কয়েকজনের সামনে পাওনাদারের আনুমানিক দুই থেকে আড়াই হাজার টাকা আমার হাতে দেওয়া হয়। সেই টাকা ভুক্তভোগীকে দিয়ে দেওয়া হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, তবে সেই টাকার পরিমাণ কম দেওয়ায় আমি বলেছি, এত অল্প টাকায় মানসম্মান থাকে না। সেই ঘটনাকে কে বা কারা ভিন্ন রূপ দিয়ে পুলিশ প্রশাসনকে চাপে ফেলার চেষ্টা করছে।

এ ঘটনায় নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার কর্তৃক গঠিত তদন্ত কমিটি আড়াইহাজার থানায় গিয়ে তদন্ত কার্যক্রম শুরু করেছেন। তদন্ত কমিটির প্রধান নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) তাসমিন আক্তার বলেন, তদন্ত শুরু করেছি। এখনও শেষ করতে পারিনি। তদন্ত সম্পন্ন হলে প্রতিবেদন পুলিশ সুপারের কাছে জমা দেব।

উল্লেখ্য, আড়াইহাজার থানায় ঘুষ ব্যতীত সাধারণ ডায়েরিও করা যায় না। সাধারণ ডায়েরি করতে হলেও ওসিকে নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা দিতে হয়। মামলা করতে গেলে সেই টাকার পরিমাণ আরও বেড়ে যায়।

মো. মীমরাজ হোসেন/এমএন