ছাড়পত্র প্রাপ্তদের ফুল দিয়ে বিদায় জানান সিভিল সার্জন ডা. জাহিদ নজরুল চৌধুরী

চাঁপাইনবাবগঞ্জের সোনামসজিদ স্থলবন্দর দিয়ে ভারতফেরত ২৪ বাংলাদেশির ১৪ দিনের বাধ্যতামূলক প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইন শেষ হয়েছে। বুধবার (২ জুন) সন্ধ্যায় জেলার তিনটি প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইন থেকে তাদেরকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়। 

ভারতফেরত প্রথম ২৪ জনকে কোয়ারেন্টাইন শেষে ছাড়পত্র দেওয়ার বিষয়টি ঢাকা পোস্টকে নিশ্চিত করেছেন জেলা প্রশাসক মঞ্জুরুল হাফিজ। 

শিবগঞ্জ উপজেলা ডাকবাংলো, জেলা শহরের হোটেল আল নাহিদ ও ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা হাসপাতালের কোয়ারেন্টাইন থেকে এই ২৪ জন মুক্ত হয়ে বাসায় ফিরেছেন। শিবগঞ্জ উপজেলা ডাকবাংলো থেকে ১৩ জন, হোটেল আল নাহিদ থেকে ৮ জন ও ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা হাসপাতাল থেকে তিনজনকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়। এর আগে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনের ১৩তম দিনে তাদের সবার নমুনা পরীক্ষা করা হয়। পরীক্ষায় নেগেটিভ আসলে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

হোটেল আল নাহিদে সিভিল সার্জন ডা. জাহিদ নজরুল চৌধুরী কোয়ারেন্টাইন থেকে ছাড়পত্র পাওয়া ব্যক্তিদের ফুল দিয়ে বিদায় জানান।

ছাড়পত্র দেওয়ার পর জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে পরিবহনের ব্যবস্থা করে তাদেরকে বাসায় পৌঁছে দেওয়া হয়। কোয়ারেন্টাইন থেকে ছাড়পত্র পাওয়া ব্যক্তিরা রাজধানী ঢাকাসহ গাজীপুর, নাটোর, নওগাঁ, রাজশাহী, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও চাঁপাইনবাবগঞ্জের বাসিন্দা। 

শিবগঞ্জ ডাকবাংলো থেকে ছাড়পত্র পাওয়া নাটোরের তানিয়া আখতার ঢাকা পোস্টকে বলেন, বুধবার সন্ধ্যার পরে আমাদেরকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে। বাসায় যাওয়ার জন্য জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে রাজশাহী পর্যন্ত মাইক্রোবাসের ব্যবস্থা করা হয়েছে। খুব ভালো লাগছে। মনে হচ্ছে দুনিয়ায় আবারও ফিরে আসলাম। প্রশান্তির নিঃশ্বাস নিতে পারছি। 

জেলা শহরের হোটেল আল নাহিদ মুক্তি পেয়েছেন নাটোরের বাগাতিপাড়ার মেহেদি হাসান আনিস। তিনি বলেন, ১৪ দিনের কোয়ারেন্টাইন শেষে আজ মুক্তি মিলেছে। আমার এলাকার আরও কয়েকজন একসঙ্গেই ছাড় পেয়েছি। বাসায় ফিরে যাওয়ার আনন্দে সবাই উচ্ছ্বসিত। 

স্ত্রী ও ক্যান্সার আক্রান্ত মেয়েকে নিয়ে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা হাসপাতালের কোয়ারেন্টাইনে ছিলেন রাজশাহীর নওহাটার মো. হেফাজ উদ্দিন। তিনি বলেন, জেনেছিলাম ১৪ দিনের খাবারের ব্যবস্থা করবে স্থানীয় প্রশাসন। কিন্তু একদিনের জন্যেও খাবার পাইনি। মেয়ে ক্যান্সার আক্রান্ত। তার সামান্য ড্রেসিং করার জন্য এখানকার ডাক্তার, সিভিল সার্জন সবাইকে বললেও কোনো ব্যবস্থা করেনি। 

জেলা প্রশাসক মঞ্জুরুল হাফিজ ঢাকা পোস্টকে বলেন, সোনামসজিদ স্থলবন্দর দিয়ে আসা ভারতফেরত সবাইকে বাধ্যতামূলক ১৪ দিনের কোয়ারেন্টাইনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। বুধবার সন্ধ্যায় তাদের ২৪ জনকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও বাসায় পৌঁছাতে যানবাহনের ব্যবস্থা করেছে জেলা প্রশাসন। 

উল্লেখ্য, গত মাসের ২৩ তারিখ থেকে বুধবার (২ ‍জুন) পর্যন্ত সোনামসজিদ স্থলবন্দর দিয়ে ৮৮ জন ভারত থেকে দেশে ফিরেছেন। 

মো. জাহাঙ্গীর আলম/ওএফ