ভাইকে হত্যার পর মরদেহ গুম : একজনের ফাঁসি, আরেকজনের যাবজ্জীবন
নেত্রকোণায় পূর্ব শত্রুতার জেরে চাচাতো ভাইকে হত্যা করে গুম করার দায়ে এমদাদ হোসেন (২৭) নামে একজনকে মৃত্যুদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড করা হয়েছে। পাশাপাশি হত্যাকাণ্ডে সহযোগিতা করায় আবুল হাসেম ওরফে আবুনি (৪০) নামে আরেকজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড, অনাদায়ে আরও এক বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
বুধবার (২৩ এপ্রিল) বিকেলে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. হাফিজুর রহমান এই রায় দেন।
বিজ্ঞাপন
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত এমদাদ হোসেন নেত্রকোণা সদর উপজেলার চল্লিশা ইউনিয়নের বিলচুলঙ্গী (চন্দ্রপতিখিলা) গ্রামের মৃত মো. আ. হামিদের ছেলে।
আদালত ও মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, ২০১৯ সালের ৬ জুলাই রাত আনুমানিক ১১টার দিকে মৃত আব্দুস সোবাহান প্রতিদিনের মতো রাতে খাওয়া-দাওয়া করে তার ঘরে ঘুমানোর জন্য শুয়ে পড়েন। কিন্তু রাত ১১টার দিকে একটি নম্বর থেকে তার নম্বরে দুইবার ফোন আসলে তিনি ঘর থেকে বের হন। এ সময় তার স্ত্রী শিউলি আক্তার জিজ্ঞেস করেন, কে ফোন দিয়েছিল? তখন তিনি বলেন, তার চাচাতো ভাই রাসেল ফোন দিয়েছে।
বিজ্ঞাপন
আরও পড়ুন
নিহত আব্দুস সোবাহান কথা বলার জন্য ঘর থেকে বের হওয়ার পর আর রাতে বাড়িতে ফিরে আসেননি। পরদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে মামলার বাদী শিউলি আক্তার, তার সতীনসহ এ বিষয়ে বাড়ির লোকজন ও প্রতিবেশীদেরকে জানান। তখন সবাই মিলে তাকে খোঁজাখুঁজি শুরু করেন।
পরে ওইদিন বেলা ১১টার দিকে বিলচুলুঙ্গী গ্রামের হাজী মো. চান মিয়ার পতিত জমিতে নতুন মাটি ভরাট দেখে সন্দেহ হয় প্রতিবেশীর। সেখানে মাটি সরিয়ে একটি গামছা দেখতে পান তারা। তখন আরও মাটি সরানোর পর নিহতের মরদেহ খুঁজে পাওয়া যায়।
পরে ৮ জুলাই নিহতের স্ত্রী বাদী হয়ে নেত্রকোনা মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। দীর্ঘ শুনানি শেষে ১৪ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণের পর অপরাধ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ হওয়ায় আদালত এ রায় দেন।
মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি হিসেবে ছিলেন পাবলিক প্রসিকিউটর মো. আবুল হাশেম এবং আসামিপক্ষের আইনজীবী হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অ্যাডভোকেট মুজিবুর রহমান খান তালুকদার।
রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি পাবলিক প্রসিকিউটর মো. আবুল হাশেম বলেন, নেত্রকোণা জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক একটি হত্যা মামলার রায় দিয়েছেন। এ রায়ে মামলার এক আসামিকে মৃত্যুদণ্ড এবং অপর আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। আজকের এই রায়ে আমরা রাষ্ট্রপক্ষ সন্তুষ্ট।
চয়ন দেবনাথ মুন্না/এএমকে