মানিকগঞ্জে জাহিদ মালেক ও সাবেক পুলিশ সুপারের নামে মামলা
মানিকগঞ্জে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক ও সাবেক পুলিশ সুপার গোলাম আজাদ খানকে আসামি করে আদালতে মামলা হয়েছে। জুলাই-আগস্টে গণঅভ্যুত্থানে স্বৈরাচার শেখ হাসিনা দেশত্যাগ ও আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের নয় মাস পরে এই মামলা হয়েছে।
সোমবার (৫ মে) দুপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ছাত্র প্রতিনিধি মেহেরাব হোসাইন বাদী হয়ে চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এ মামলা করেন। মামলায় ২১৭ জনের নাম উল্লেখ করে সাথে অজ্ঞাত আরো ১০০ থেকে ১৫০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
বিজ্ঞাপন
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে জুলাইয়ের ১৮ তারিখে সকাল দশটায় মানিকগঞ্জ জেলার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতা মানিকগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতি ১নং ভবনের সামনে থেকে একটি প্রতিবাদ মিছিল নিয়ে খাল-পাড় ব্রিজের দিকে যায়। এসময় পূর্ব পরিকল্পিতভাবে অজ্ঞাত নামা আসামিরাসহ মামলার উল্লেখিত আসামিরা বিভিন্ন আগ্নেয়াস্ত্রসহ দেশীয় অস্ত্র ধারালো রামদা, চাপাতি, লোহার রড়, হাতুরি, গ্যাস পাইপ, বাঁশের লাঠি ও কাঠের বাটাম ইত্যাদি হাতে নিয়ে আশে-পাশে মহরা দিতে থাকে।
পরে প্রতিবাদ মিছিলটি খালপাড় ব্রিজের ওপর যাওয়া মাত্রই মামলায় উল্লেখিত আসামিরাসহ অজ্ঞাতনামারা দেশীয় হাতবোমা ও ককটেল বিস্ফোরণ করে আন্দোলনরত ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করে এবং ছাত্র-ছাত্রীদের হত্যার উদ্দেশ্যে হামলা করে। এ সময় হামলায় আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী মো. আরমান হোসাইন, হাসনা হেনা, মাহফুজ হোসাইন, তন্ময়সহ অনেককেই গুরুতর আহত হয়। আসামিরা ভিকটিম মো. আরমান হোসাইন ও হাসনা হেনাকে হত্যার উদ্দেশ্যে ব্রিজের ওপর ফেলে কুপিয়ে মারাত্মক রক্তাক্ত জখম করে। আসামিদের অতর্কিত হামলায় আন্দোলনরত শিক্ষাথীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। পরে আহতদের উদ্ধার করে নিকটবর্তী হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
বিজ্ঞাপন
মামলায় অন্যান্য আসামিরা হলেন, মানিকগঞ্জ-১ আসনের সাবেক সাংসদ এস এম জাহিদ, একই আসনের সাবেক সাংসদ নাঈমুর রহমান দুর্জয়, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট গোলাম মহিউদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সালাম, সহ-সভাপতি ও মানিকগঞ্জ পৌরসভার সাবেক মেয়র রমজান আলী, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সুলতানুল আজম খান আপেল, সাংগঠনিক সম্পাদক ও সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সুদেব সাহা, দপ্তর সম্পাদক এহতেশাম খান ভুনু, শিবালয় উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি রেজাউল ইসলাম খান জানু, মানিকগঞ্জ জেলা যুবলীগের সভাপতি আব্দুর রাজ্জাক রাজা, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও গড়পাড়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আফসার উদ্দিন সরকার, স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক আবুল বাশার, জেলা কৃষকলীগের আহ্বায়ক সুমি খানম, সদর উপজেলা যুবলীগের সভাপতি খলিলুর রহমান, নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন জেলা ছাত্রলীলের সাবেক সভাপতি রফিকুল ইসলাম খান রানা, কাজী রাজু আহমেদ বুলবুল, সাবেক সাধারণ সম্পাদক এনামুল হক রুবেল, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সিফাত কোরাইশী সুমন, সাধারণ সম্পাদক রাজিবুল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক সামিউর রহমান কম্পন, ঢাকা উত্তর আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ ইঞ্জিনিয়ার সালাম চৌধুরী, জেলা ওলামা মাশায়েখ পরিষদের সভাপতি বশির রেজা, জেলা ওলামালীগের সভাপতি মাওলানা শামসুল হক, ডেভেলপার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মাসুদুল কামরুল হক, মানিকগঞ্জ পৌরসভার মেয়র, সদর থানার পুলিশের ওই সময়ে অফিসার ইনচার্জ (ওসি) হাবিল হোসেন, সদর উপজেলার পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান সুদেব সাহাসহ ২১৭ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ১০০ থেকে ১৫০ জনের নামে আদালতে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
সোহেল হোসেন/এমএএস