পঞ্চগড়ে দুই হাফেজাকে আনুষ্ঠানিকভাবে বিদায় দিয়েছে মাদরাসা কমিটি। মঙ্গলবার (৬ মে) বিকেলে পঞ্চগড় সদর উপজেলার টুনিরহাট ঘটবর এলাকার তা'লিমুল কোরআন বালিকা মাদরাসায় বিদায় অনুষ্ঠান ঘিরে সংবর্ধনা ও দোয়া অনুষ্ঠিত হয়।

পরে একটি সুসজ্জিত প্রাইভেটকারে তাদেরকে বসিয়ে রাজকীয় সম্মানে বাড়িতে পৌঁছে দেওয়া হয়। এসময় পরিবারের লোকজন তাদের ফুলের মালা দিয়ে বরণ করে নেয়।
হাফেজা দুজন হলো, হালিমাতুস ছাদিয়া (১১) ও আয়েশা সিদ্দীকা (১৫)। হালিমাতুস ছাদিয়া উপজেলা হাড়িভাসা ইউনিয়নের লাঠুয়াপাড়া গ্রামের হাচানুর রহমানের মেয়ে। সে ৯ মাসে কোরআনের হাফেজা হয়েছেন। আরেক হাফেজা আয়েশা সিদ্দীকা একই ইউনিয়নের গোয়ালপাড়া গ্রামের মৃত হেলাল উদ্দীনের মেয়ে। সে এক বছরে কোরআনের হাফেজা হয়েছেন।

সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে হাফেজা হালিমাতুস ছাদিয়ার বাবাকে এবং হাফেজা আয়েশা সিদ্দীকার ভাইকেও সংবর্ধিত করা হয়।

অনুষ্ঠানে কামাত কাজলদিঘী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও মাদরাসাটির সভাপতি তোফায়েল প্রধানের সভাপতিত্বে বক্তব্য দেন, জামায়াতে ইসলামীর পঞ্চগড় জেলা শাখার আমির অধ্যাপক ইকবাল হোসাইন, পঞ্চগড় সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল্লা হিল জামান, গণঅধিকার পরিষদের পঞ্চগড় জেলা শাখার আহ্বায়ক মাহাফুজার রহমান, মাদরাসাটির প্রতিষ্ঠাতা ও পরিচালক হাফেজ মো. মনিরুল মোল্লা, সদর উপজেলার শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সভাপতি আবু সাইদসহ অনেকে।

হাফেজা হালিমাতুস ছাদিয়া জানায়, আমাদের মাদরাসার শিক্ষকরা অনেক দক্ষ। তারা আমাদের অনেক যত্নসহকারে পড়ানোর কারণে আমি নয় মাসেও কোরআনের হাফেজা হয়েছি। আমার জন্য সবাই দোয়া করবেন।

হাফেজা আয়েশা সিদ্দীকা জানায়, আমি এই মাদরাসা থেকে এক বছরে হাফেজা হয়েছি। আমি বড় হয়ে একজন আলেমা হতে চাই।

হালিমাতুস ছাদিয়ার বাবা হাচানুর রহমান বলেন, আমার মেয়েকে ১৬ মাস আগে এই মাদরাসায় ভর্তি করে দেই। এই মাদরাসায় লেখাপড়ার মান ভালো হওয়ায় আমার মেয়ে নয় মাসেই হাফেজা হয়।

হাফেজা আয়েশা সিদ্দীকার মামাতো ভাই হুয়াইফা আকন্দ বলেন, এই মাদরাসা পরিবেশ অনেক ভালো। অল্প সময়ের মধ্যে সে হাফেজা হয়েছে এজন্য আমরা খুব খুশি হয়েছি। আপনারা তার জন্য দোয়া করবেন।

মাদরাসাটির প্রতিষ্ঠাতা ও পরিচালক হাফেজ মো. মনিরুল মোল্লা বলেন, প্রতি বছর আমাদের মাদরাসা থেকে দুই তিনজন হাফেজা বের হয়। এবার দুইজন বের হলো। এর মধ্যে হাফেজা আয়েশা সিদ্দীকা এতিম তার বাবা নেই। তাকে আমরা বিনা খরচে পড়াশুনার ব্যবস্থা করেছি। এজন্য আমরা খুব আনন্দিত। সেই আনন্দটাকে উপভোগ করার জন্য আমরা তাদেরকে রাজকীয় বিদায় দিচ্ছি। আমি এই মাদরাসাটি ২০২৩ সালের শেষের দিকে প্রতিষ্ঠা করি। বর্তমানে মাদরাসাটিতে ৭০ জন ছাত্রী আবাসিক আছে।

এমএএস