ফাইল ছবি

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে নওগাঁয় চলছে এক সপ্তাহের বিশেষ লকডাউন। এরই মধ্যে জেলায় বেড়ে গেছে চালের দাম। ধানের ভরা মৌসুমেও কেজিতে চালের দাম ৪-৫ টাকা বেড়েছে। পাইকারি বাজার চালের দাম বেড়ে যাওয়ায় খুচরা বাজারও এর প্রভাব পড়েছে। এতে বিপাকে পড়েছে খেটে খাওয়া নিম্ন আয়ের মানুষ। 

বাজারে চালের সরবরাহ কমে যাওয়ায় দাম বেড়েছে বলে জানিয়েছেন খুচরা ব্যবসায়ীরা। তবে পাইকারি ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, বাজারে চালের দাম বাড়ার একমাত্র কারণ হচ্ছে ধানের দাম বৃদ্ধি।।

জেলার মহাদেবপুর উপজেলা সদর, মাতাজি ও সরস্বতীপুর হাট সূত্রে জানা যায়, বর্তমানে হাইব্রিড ধান ৯০০-৯২০ টাকা, জিরাশাইল ১০০০-১০৭০ টাকা, কাটারি ১১০০-১১২০ টাকা, পায়জাম ধান ৯৪০-৯৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। গত ১০-১৫ দিনের ব্যবধানে প্রকারভেদে প্রতি মণ ধানের দাম ৭০-১৫০ টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে।

মহাদেবপুর উপজেলার মোন্নাকুড়ি গ্রামের কৃষক কাশেম হোসেন বলেন, বোরো মৌসুমে ২৫ বিঘা জমিতে ধান আবাদ করছিলাম। ১১ বিঘায় ৫৬ ও পাঁচ বিঘায় ২৮ জাতের ধান চাষ করা হয়েছিল। বাকিগুলাতে জিরাশাইল চাষ করা হয়। যেখানে বিঘা প্রতি ফলন হয়েছে প্রায় ২৫ মণ করে। গত ১৫ দিন আগে ১ হাজার ২০ টাকা মণ দরে প্রায় ২৫০ মণ  জিরাশাইল ধান বিক্রি করেছি। বর্তমানে মণ প্রতি ১০০ টাকা দাম বেড়েছে। 

নওগাঁ পৌর বাজারের খুচরা চাল ব্যবসায়ী অখিল চন্দ্র বলেন, গত ১০ দিনের ব্যবধানে প্রকারভেদে প্রতি কেজি চালের দাম ৪-৫ টাকা বেড়েছে। বর্তমানে জিরাশাইল প্রতি কেজি ৫০-৫২ টাকা, কাটারি ৫৫ টাকা ও আটাশ ৪৬ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া ৫০ কেজি ওজনের প্রতি বস্তার দাম বেড়েছে ১০০-১৫০ টাকা। আমরা খুচরা ব্যবসায়ীরা প্রতিদিন কিনে প্রতিদিন বিক্রি করি।

তিনি বলেন, ধানের জেলা হয়েও ধানের ভরা মৌসুমে চালের দাম বাড়ছে। বিগত বছরগুলোতে কখনো এমন হয়নি। ব্যবসায়ীদের বেশি দামে ধান কিনে চাল উৎপাদন করতে খরচও বেশি পড়ছে। এ কারণে বাজারে চালের দাম বাড়ছে।

নওগাঁ চালকল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ফরহাদ হোসেন সরদার বলেন, বাজারে চালের দাম বাড়ার একমাত্র কারণ হচ্ছে ধানের দাম বৃদ্ধি। গত বছর কৃষকরা ধান মাড়াই করেই হাটে বিক্রি করেন। কিন্তু এ বছর সামান্য পরিমাণ ধান হাটে বিক্রি করে বাকিটা ঘরে মজুত করে রেখে দিয়েছেন। হাট-বাজারে ধানের আমদানি কম হওয়ায় দাম বেড়েছে। চাহিদার তুলনায় বাজারে ধানের আমদানি কম হওয়ায় সঙ্গত কারণে ব্যবসায়ীরা বেশি দামে ধান কিনতে বাধ্য হচ্ছেন। এতে চালের দামও বেড়ে গেছে। এ বছর ধানের ফলনও ভালো হয়েছে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের তথ্য মতে, নওগাঁয় চলতি মৌসুমে ১ লাখ ৮৭ হাজার ৭৬০ হেক্টর জমিতে ইরি-বোরো আবাদ করা হয়েছে।

শামীনূর রহমান/আরএআর