অন্তঃসত্ত্বা যাচ্ছিলেন গ্রামের বাড়িতে, ট্রেনেই সন্তান প্রসব
ট্রেনে করে ঢাকা থেকে স্বামীর সঙ্গে গ্রামের বাড়িতে যাচ্ছিলেন রিনা বেগম (৩০) নামে এক প্রসূতি। পথে ট্রেনের মধ্যেই প্রসববেদনা ওঠে তার। এ সময় ট্রেন যাত্রীদের সহযোগিতায় ট্রেনের মধ্যেই কন্যাসন্তানের জন্ম দেন তিনি। শুক্রবার (৯ মে) সন্ধ্যা ৭টার দিকে ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা পঞ্চগড়গামী আন্তঃনগর একতা এক্সপ্রেস ট্রেনে পার্বতীপুর-দিনাজপুর রেলওয়ে স্টেশনের মধ্যবর্তী এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। পরে রাত সাড়ে ৮টায় নবজাতক ও প্রসূতিকে দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা।
পরিবার সূত্রে জানা গেছে, পোশাক কারখানায় চাকরি করা ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জের বড়বাড়ি এলাকার বাসিন্দা সেলিম হোসেন তার স্ত্রী রিনা বেগমকে নিয়ে ঢাকায় বসবাস করেন। শুক্রবার সকালে ঢাকা থেকে আন্তঃনগর একতা এক্সপ্রেস ট্রেনে সন্তান প্রসবের জন্য গ্রামের বাড়িতে রওনা দেন তারা। সন্ধ্যায় পার্বতীপুর এলাকায় চলন্ত ট্রেনে প্রসববেদনা ওঠে প্রসূতি রিনা বেগমের। পরে ট্রেনের অন্যান্য যাত্রীদের সহায়তায় চলন্ত ট্রেনে এক কন্যাসন্তানের জন্ম দেন তিনি। রাত সাড়ে ৮টায় ট্রেনটি দিনাজপুর স্টেশনে আসলে স্টেশন সুপার জিয়াউর রহমানের সহযোগিতায় ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা প্রসূতি ও নবজাতককে দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান।
বিজ্ঞাপন
দিনাজপুর রেলওয়ে স্টেশনের সুপার জিয়াউর রহমান বলেন, ট্রেনে সন্তান জন্মের বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে দেখেছি। এটা অবশ্যই রেলওয়ের জন্য একটি বড় ঘটনা। ফলে এ নিয়ে আমরা তৎপর ছিলাম। প্রসূতি ট্রেনে সন্তান প্রসব করার ঘটনাটি জানার পর আমরা ফায়ার সার্ভিসকে খবর দিই। এরপর ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা রেলওয়ে স্টেশনে অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে পৌঁছায়। পরে মা ও শিশুকে দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়।
দিনাজপুর ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের স্টেশন টিম লিডার আব্দুর রাজ্জাক বলেন, সন্ধ্যার পর রেলওয়ে স্টেশন থেকে আমাদেরকে জানানো হলে দ্রুত আমরা অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে দিনাজপুর রেলওয়ে স্টেশনে পৌঁছাই। সেখানে ট্রেন থেকে প্রসূতি ও শিশুকে নিয়ে দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করি।
বিজ্ঞাপন
দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশু বিভাগের কর্তব্যরত ইন্টার্ন চিকিৎসক ডা. নাজমুল হোসেন বলেন, চলন্ত ট্রেনে জন্ম নেওয়া শিশুটি মায়ের গর্ভে ছিল ৭ মাস। পরিপূর্ণ সময়ের আগেই জন্ম নেওয়ায় শিশুটির চোখ ফোটেনি এবং তার কিছুটা ঠান্ডা লেগেছে। আমরা শিশুটিকে আলাদাভাবে চিকিৎসা করছি। বর্তমান শিশুটি সুস্থ আছে।
শরিফুল ইসলাম/আরএআর