ঢাকার নবাবগঞ্জ উপজেলায় ১০ জনের শরীরে করোনার ভারতীয় ধরন শনাক্ত হয়েছে। শনাক্ত হওয়া ওই ১০ জনই পেশায় শ্রমিক। তারা চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে নবাবগঞ্জে আশ্রয়ণ প্রকল্পের কাজে এসেছিলেন। 

শনিবার (৫ জুন) সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. শহিদুল ইসলাম।

তিনি জানান, আক্রান্ত বিভিন্ন বয়সী ওই ১০ জন শ্রমিকের কাজ করেন। গত মাসের ১৮ তারিখে তারা সবাই ট্রাকে করে চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে আশ্রয়ণ প্রকল্পের কাজের জন্য ঢাকার নবাবগঞ্জে এসেছিলেন। বিষয়টি জানতে পেরে ২৬ মে তাদের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য ঢাকার বক্ষব্যাধী হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়। তারা এখনও সেখানে চিকিৎসাধীন।

এদিকে, দেশে করোনার ভারতীয় ধরনের (ডেল্টা) সামাজিক সংক্রমণ হয়েছে বলে জানিয়েছে সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর)। শুক্রবার (৪ জুন) আইইডিসিআর কর্তৃক প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে জিনোম সিকুয়েন্স পরীক্ষা করে প্রাপ্ত ফলাফলের ভিত্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। 

দেশে করোনার উচ্চ সংক্রমিত এলাকাগুলোর আক্রান্ত রোগীদের কেস ইনভেস্টিগেশন, কন্ট্রাক্ট ট্রেসিং ও সন্দেহজনক রোগীদের ৫০টি নমুনার জিনোম সিকোয়েন্স করে ৮০ শতাংশই ভারতীয় ধরন (ডেল্টা) শনাক্ত করেছে আইইডিসিআর। এছাড়া ১৬ শতাংশ দক্ষিণ আফ্রিকার ধরন (বিটা) পাওয়া গেছে। 

প্রতিবেদনে জানানো হয়, ৫০টি নমুনার মধ্যে চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে ১৬টি নমুনার ১৫টি, গোপালগঞ্জের ৭টি নমুনার সবকটিতে, খুলনার ৩টি নমুনার সবকটিতে ও ঢাকার ৪টি নমুনার ২টিতে ভারতীয় ধরন শনাক্ত হয়েছে। এছাড়া চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে ঢাকা জেলার নবাবগঞ্জে আসা সাত জনের দেহে ভারতীয় ধরন শনাক্ত করা হয়েছে বলে জানিয়েছে আইইডিসিআর।

ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্তদের মধ্যে ৮ জনের ভারত ভ্রমণের ইতিহাস আছে। ১৮ জনের বিদেশ থেকে আসা ব্যক্তির সংস্পর্শে আসার ইতিহাস আছে। অপর ১৪ জন রোগীর বাংলাদেশের বাইরে ভ্রমণের অথবা বিদেশ থেকে আগত ব্যক্তির সংস্পর্শে আসার কোনো ইতিহাস পাওয়া যায়নি। অর্থাৎ, বাংলাদেশে কোভিড-১৯ এর ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের সামাজিক সংক্রমণ (কমিউনিটি ট্রান্সমিশন) হয়েছে।

বাংলাদেশে কোভিড-১৯ সংক্রমণের হার দেশের সীমান্তবর্তী এলাকাসহ অন্যান্য জেলায় বৃদ্ধি পাচ্ছে। দেশে ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টসহ কোভিড-১৯ এর অন্যান্য ভ্যারিয়েন্টের বিস্তার ঠেকাতে আইইডিসিআর জনসাধারণকে সঠিকভাবে মাস্ক ব্যবহারের পাশাপাশি অন্যান্য স্বাস্থ্যবিধি (যেমন বিনা প্রয়োজনে ভ্রমণ থেকে বিরত থাকা, জনসমাগম এড়িয়ে চলা, শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখা ও নিয়মিত সাবান পানি দিয়ে হাত ধোয়া ইত্যাদি) মেনে চলার জন্য অনুরোধ করছে।

ফারুক আহমেদ/ওএফ