ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনের সাড়ে তিন বছর পর আদালতের রায়ে চেয়ারম্যান হলেন জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিশে শূরা সদস্য নোয়াখালী জেলা জামায়াতের নায়েবে আমির অধ্যক্ষ মাওলানা সাইয়েদ আহমদ।

বুধবার (১৪ মে) দুপুরে নোয়াখালী জেলা দায়রা জজ আদালতের সিনিয়র সহকারী জজ দেওয়ান মনিরুজ্জামান ৪৬৬ ভোটে বিজয়ী ঘোষণা করেন।

জানা যায়, ২০২২ সালের ৫ জানুয়ারি মাওলানা সাইয়েদ আহমদ সোনাইমুড়ী উপজেলার বারগাঁও ইউনিয়নে চশমা প্রতীকে নির্বাচন করে কেন্দ্রের ঘোষিত ফলাফলে জয় লাভ করেন। কিন্তু উপজেলাতে ফলাফল সিট ঘষা-মাজা করে তার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি মো. সামছুল আলমকে চেয়ারম্যান ঘোষণা করেন। দীর্ঘ সাড়ে তিন বছর পর আদালতের রায়ে চেয়ারম্যান হন জেলা জামায়াতের নায়েবে আমির অধ্যক্ষ মাওলানা সাইয়েদ আহমদ।

মাওলানা সাইয়েদ আহমদের আইনজীবী মো. নিজাম উদ্দিন ঢাকা পোস্টকে বলেন, আওয়ামী ফ্যাসিবাদী সরকার মাওলানা সাইয়েদ আহমদের বিজয়কে সাড়ে তিন বছর আগে ছিনিয়ে নিয়েছিল। আজ আদালত জনগণের সেই ফলাফলকে ফিরিয়ে দিয়েছেন। তখন কাশীপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ফলাফল টেম্পারিং করে আওয়ামী লীগের প্রার্থীকে বিজয়ী করা হয়েছিল। কিন্তু কেন্দ্রভিত্তিক ফলাফলে সাইয়েদ আহমেদ বিজয়ী হন। উপজেলা পরিষদে মূলত টেম্পারিং করা হয়েছে। সেখানে সাইয়েদ আহমেদকে ১১ ভোটে হারিয়ে দিয়ে নৌকার প্রার্থী মো. সামছুল আলমকে বিজয়ী করা হয়।

রায়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করে জেলা জামায়াতের নায়েবে আমির অধ্যক্ষ মাওলানা সাইয়েদ আহমদ ঢাকা পোস্টকে বলেন, সত্যের বিজয় হয়েছে। সত্য কোনোদিন চাপা থাকে না, আজ তা প্রমাণিত হয়েছে। এটা জনগণের বিজয়। আমার ইউনিয়নের বাসিন্দাদের বঞ্চিত করা হয়। তবে আমি তখনই নির্বাচন ট্রাইবুনাল আদালতে মামলা দায়ের করেছিলাম। আজ বিজয়ী হলাম। আমি আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় করছি। আমার ইউনিয়নের বাসিন্দাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।

সাইয়েদ আহমদের ছেলে অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম ফরহাদ ঢাকা পোস্টকে বলেন, নৌকার প্রার্থীর ভরাডুবি ঠেকাতে জনগণের ফলাফল উপেক্ষা করে পেশি শক্তির ব্যবহার করে আমার বাবাকে ১১ ভোটে হারিয়ে দেওয়া হয়েছিল। আজ আদালত আমার বাবাকে চেয়ারম্যান হিসেবে ঘোষণা করেছেন। আশা করি খুব দ্রুত গেজেট প্রকাশিত হবে। আমি নির্বাচন ট্রাইবুনাল আদালতের সংশ্লিষ্টদের, সব আইনজীবীদের এবং ইউনিয়ন বাসিন্দাদের ধন্যবাদ জানাই। ধিক্কার জানাই তাদের, যারা তখন কারচুপি করে সত্যকে চাপা দিয়ে মানুষের অধিকার হরণ করেছে।

এ সময় জামায়াতের নোয়াখালী শহর শাখার সেক্রেটারি, মাওলানা মোহাম্মদ মায়াজ, অ্যাডভোকেট শাহ জামাল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। 

হাসিব আল আমিন/এএমকে