রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া ঘাট দিয়ে ফেরি পার হয়ে দেশের বিভিন্ন জায়গায় যাচ্ছে কোরবানির পশুবাহী ট্রাক। ঈদ ঘনিয়ে আসায় পশুবাহী ট্রাকের চাপ বাড়লেও দৌলতদিয়া ঘাট এলাকায় নেই কোনো জট। দীর্ঘ অপেক্ষা ও ভোগান্তি ছাড়াই সরাসরি ফেরির নাগাল পাচ্ছে পশুবাহী বাহনগুলো। এতে খুশি গরুর মালিক, ব্যাপারিসহ গাড়ির চালকরা।

সোমবার (২ জুন) বিকেলে দৌলতদিয়া ফেরিঘাট এলাকায় গিয়ে এমন চিত্র দেখা যায়।

বিআইডব্লিউটিসি দৌলতদিয়া ঘাট সূত্রে জানা গেছে, গত ২৪ ঘণ্টায় এই ঘাট ব্যবহার করে নদী পারাপার হয়েছে ২ হাজার ১৪৫টি যানবাহন। এর মধ্যে যাত্রীবাহী বাস ২৪৭টি, পশুবাহী ট্রাক ৪৪৬টি,পণ্যবাহী ট্রাক ৫৯৫টি, ছোটগাড়ি ৭৮১টি ও ৭৬টি মোটরসাইকেল।

ঝিনাইদহ থেকে ট্রাকে আসা গরুর ব্যাপারী আক্কাস আলী বলেন, পদ্মা সেতু হওয়ার পর থেকে এই ঘাটে কোনো দুর্ভোগ নেই। এ বছরও কোনো সিরিয়ালে আটকে থাকতে হয়নি। সরাসরি ঘাটে এসে ফেরিতে উঠতে পারছি। পথে কোনো ভোগান্তিও হয়নি।

চুয়াডাঙ্গা থেকে ট্রাকে গরু নিয়ে ঢাকার গাবতলী হাটে যাচ্ছেন ব্যাপারী ঈদ্রিস শেখ। তিনি বলেন, বিগত ২ থেকে ৩ বছর যাবৎ ঘাটে দুর্ভোগ নেই। পদ্মা সেতু হওয়ার আগে দৌলতদিয়া ঘাটে দুর্ভোগে পড়তে হয়েছে। ফেরির জন্য ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করে এই তীব্র গরমে অনেক গরু গাড়িতে অসুস্থ হয়ে পড়েছে। এখন পদ্মা সেতু হওয়ায় ফেরিতে চাপ কম পড়ায় কোনো ধরনের দুর্ভোগ ছাড়াই যশোর থেকে সরাসরি দৌলতদিয়া ঘাটে আসতে পেরেছি এবং সময়মতো গরু ঢাকায় নিতে পারব বলে আশা করছি।

পশুবাহী ট্রাকের চালক সোবহান মিয়া বলেন, কুষ্টিয়ার পোড়াদহ থেকে ২৫টি গরু নিয়ে ঢাকায় যাচ্ছি। কোনোরকম ভোগান্তি ছাড়াই ফেরি ঘাটে চলে এসেছি। ফলে গরু ও আমাদের কষ্ট কম হয়েছে এবং দ্রুত ঢাকায় পৌঁছাতে পারব। এর আগে কখনো এত তাড়াতাড়ি ফেরিঘাটে আসতে পারিনি।

বিআইডব্লিউটিসি দৌলতদিয়া ঘাট শাখার সহকারী মহাব্যবস্থাপক (এজিএম) মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন বলেন, বর্তমানে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে ১৭টি ফেরি দিয়ে যাত্রী ও যানবাহন পারাপার করা হচ্ছে। ঘাটে কোনো জটলা নেই, যানবাহনগুলো এসে সরাসরি ফেরিতে উঠে নদী পার হচ্ছে। এছাড়া পশুবাহী ট্রাকগুলো ভিআইপিভাবে পার করা হচ্ছে।

এদিকে সোমবার সকাল ১০টার দিকে পুলিশ সুপার মো. কামরুল ইসলাম দৌলতদিয়া ঘাট এলাকা পরিদর্শন করেন। এ সময় তিনি ফেরিঘাট এলাকার বিভিন্ন টিকিট কাউন্টার, ট্রাফিক ব্যস্থাপনা ও যাত্রীদের ঈদ যাত্রা নিয়ে দিকনির্দেশনা প্রদান করেন।

পরে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ঈদকে সামনে রেখে দৌলতদিয়া ঘাটে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিতে নিয়ন্ত্রণে রাখতে ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। চার স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। পশুবাহী ট্রাকগুলো মহাসড়কে ভোগান্তিতে না পড়ে সেদিকে লক্ষ্য রাখা হচ্ছে। যাত্রীদের স্বস্তিদায়ক ঈদযাত্রা নিশ্চিত করা আমাদের দায়িত্ব। কোনো প্রকার হয়রানি ও ঈদ উপলক্ষ্যে নির্দিষ্ট ভাড়ার অতিরিক্ত আদায় করা হলে জেলা পুলিশ রাজবাড়ীকে অবহিত করুন।

মীর সামসুজ্জামান সৌরভ/আরকে