দেশ আমার, গ্রাম আমার, সুরক্ষার দায়িত্ব আমাদের' এ স্লোগান নিয়ে রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দিতে চুরি-ডাকাতি, ছিনতাই, মাদক, সন্ত্রাস-নাশকতা প্রতিরোধে স্বেচ্ছায় রাত জেগে পাহারা দিচ্ছেন এলাকাবাসী। এতে গ্রামের মানুষের মধ্যে স্বস্তি ফিরে এসেছে।

জানা গেছে, বালিয়াকান্দি উপজেলার রাজধরপুর, আড়কান্দি, হুলাইল, জঙ্গল, সোনাপুর, আনন্দ বাজারসহ বিভিন্ন এলাকায় চুরি-ডাকাতি, ছিনতাই, মাদক, সন্ত্রাস-নাশকতা প্রতিরোধে এসব অপরাধ ঠেকাতে গ্রামের যুবকরা একত্রিত হয়ে পাহারার দায়িত্ব নিয়েছেন। আর পাহারাদারদের প্রতিনিয়ত খোঁজ নিচ্ছে থানা পুলিশ।

স্থানীয় কয়েকজন বলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তদারকি ও টহল বাড়ানোর পাশাপাশি স্থানীয়দের পাহারার কারণে চুরির ঘটনা কমে আসছে। তা না হলে সাধারণ মানুষ মূল্যবান সম্পদ ও আয়ের উৎস হারিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়তো। প্রতিদিন চোরের অত্যাচারে আমরা অতিষ্ঠ। তাই জানমাল রক্ষায় নিজেরা রাত জেগে পাহারা দিচ্ছি।

গ্রাম পাহারা দেওয়া এক যুবক বলেন, গ্রামের সবাইকে নিয়ে এ ব্যাপারে একটি কমিটি গঠন করে পর্যায়ক্রমে গ্রামে পাহারা অব্যাহত থাকবে। চুরি বন্ধে প্রশাসনের সহযোগিতায় গ্রামের ছেলেরা যে উদ্যোগ নিয়েছে, তাতে আমি খুশি। আমি গ্রামের মধ্যে ও আশপাশের বিভিন্ন মসজিদে চুরির ব্যাপারে সবাইকে সচেতনতা সৃষ্টির জন্য প্রচারণা চালাতে বলেছি। 

জানা গেছে, চলতি বছরের জানুয়ারি অর্থাৎ শীত মৌসুম থেকে বালিয়াকান্দি থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জামাল উদ্দিনের ডাকে সাড়া দিয়ে বালিয়াকান্দি উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় এই পাহারার কার্যক্রম শুরু করে গ্রামবাসী। এই পাহারার কার্যক্রমের নেতৃত্বে রয়েছে এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তি, মাতুব্বর, ইউপি সদস্য ও গ্রাম পুলিশ। তারা বিভিন্ন গ্রামের বা এলাকায় ৮ থেকে ১০ জনের একটি টিম বানিয়ে এই কার্যক্রম পরিচালনা করছে।

বালিয়াকান্দি থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জামাল উদ্দিন বলেন, আমি বালিয়াকান্দি থানায় যোগদান করার পর বিভিন্ন গ্রামের গণ্যমান্য ব্যক্তি, মাতুব্বর, ইউপি সদস্যদের নিয়ে বসেছিলাম। তাদের সাথে আলাপ আলোচনা করেই আমার এই উদ্যোগটা নেওয়া। বালিয়াকান্দি উপজেলা একটি সীমান্তবর্তী উপজেলা। এই উপজেলার পাশেই রয়েছে ফরিদপুর ও মাগুরা জেলা। এই উপজেলার চুরি ও ডাকতি বেশিরভাগ বাইরের জেলার লোকজন এসেই করে। আর পুলিশের পক্ষে সব জায়গায় মোবাইল পেট্রোলিং করা সম্ভব হয়ে উঠে না। তাই এলাকাবাসীকে সচেতন করে তাদের মাধ্যমে একটি পাহারার ব্যবস্থা করেছি। এতে চুরি অনেকাংশেই কমেছে।

তিনি আরও বলেন, গ্রামবাসী পাহারা দেওয়ার বিষয়টি অনেকেই নেগেটিভ ভাবে নিচ্ছে। তারা বলছে পুলিশ তাহল কি করছে। কিন্তু আমি বলব পুলিশের একার পক্ষে তো সবকিছু সম্ভব না। নিজেদেরকেও সচেতন থাকতে হবে। আমি থানায় যোগদান করার পর থেকে যতগুলো চুরি অথবা ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে প্রত্যেকটি মামলা নেওয়া হয়েছে এবং বেশিরভাগ মামলায় ডিটেক্ট করা হয়েছে।


মীর সামসুজ্জামান সৌরভ/এমএএস