অগ্নিকাণ্ডে ছাই বসতভিটা, পরিবার নিয়ে খোলা আকাশের নিচে দিনমজুর আমজেদ
পিরোজপুর সদর উপজেলার দক্ষিণ ডুমুরিতলা গ্রামে আগুনে পুড়ে নিঃস্ব হয়ে গেছে দিনমজুর আমজেদ শেখের পরিবার। বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট থেকে লাগা আগুনে শুক্রবার সকালে তাদের বসতঘরসহ সব সম্পদ পুড়ে ছাই হয়ে যায়। মাথা গোজার ঘর আর সহায় সম্বল হারিয়ে অসহায় পরিবারটি এখন এক কাপড়ে খোলা আকাশের নিচে অবস্থান করছে।
শুক্রবার (২৭ জুন) সকালে সদর উপজেলার শারিকতলা ডুমুরিতলা ইউনিয়নের দক্ষিণ ডুমুরিতলা গ্রামে এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।
বিজ্ঞাপন
ক্ষতিগ্রস্ত আমজেদ শেখ (৪০) পেশায় দিনমজুর। তার স্ত্রী হিমা বেগম (২৭) অন্যের বাড়িতে কাজ করতেন। তিন সন্তান নিয়ে কোনও রকমে চলছিল তাদের সংসার।
গতকাল রোববার (২৯ জুন) সরেজমিনে দেখা যায়, আগুন সবকিছু কেড়ে নিয়েছে। মাথা গোঁজার ঠাঁই নেই, নেই একটি থালাও। বুকভরা হাহাকার, চোখভরা কান্না আর খোলা আকাশের নিচে দিন গুনছে হতদরিদ্র পরিবারটি।
বিজ্ঞাপন
আরও পড়ুন
স্থানীয় বাসিন্দা মো. জসিম বলেন, আগুন দেখে ছুটে যাই, কিন্তু তাপের কারণে কাছে যেতে পারিনি। কিছুই রক্ষা করা যায়নি। ঘরে থাকা চাল, ডাল, খাতা-কলম, টাকা-পয়সা সব পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। পরিবারটি সব হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে গেছে।
ক্ষতিগ্রম্ত মো. আমজেদ শেখ বলেন, ঘরের আসবাবপত্র, নগদ টাকা-পয়সা সব পুড়ে গেছে। কিছুই রক্ষা করতে পারিনি। পরনের লুঙ্গি ছাড়া সবকিছু পুড়ে গেছে। ফায়ার সার্ভিস আসছিল কিন্তু রাস্তা না থাকায় গাড়ি নিয়ে ঢুকতে পারে নাই। আমার সব পুড়ে গেছে।
আমজেদ শেখের স্ত্রী হিমা বেগম বলেন, আগুন দেখে বাড়িতে ছুটে এসে দেখি সব পুড়ে গেছে। থাকার মতো কোনো উপায় নেই। আমরা নিঃস্ব হয়ে গেলাম। আমার ৮ মন চাল, নগদ ৩০ হাজার টাকা, ঘরের মধ্যে থাকা একটি ছাগল সব পুড়ে গেছে। আমার একটা সেলাই মেশিন ছিল। মানুষের বাড়িতে কাজ করার পাশাপাশি সেই মেশিন দিয়ে কিছু কাপড়ও সেলাই করে আয় করতাম। আমার আয়ের রাস্তাও এখন বন্ধ হয়ে গেছে।
পিরোজপুর ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের ওয়্যারহাউজ ইন্সপেক্টর যুগল বিশ্বাস বলেন, অগ্নিকাণ্ডের সংবাদ পেয়ে আমাদের টিম আগুন নিয়ন্ত্রণের জন্য ঘটনাস্থলে যাই, তবে রাস্তা না থাকার কারণে গাড়ি নিয়ে বাড়ি পর্যন্ত যেতে পারিনি। পরে স্থানীয়দের সহায়তায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। ধারণা করা হচ্ছে, বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে।
এ বিষয়ে পিরোজপুরের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মামুনুর রশীদ বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারটি আমাদের কাছে এসেছিলেন। তাদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে উপজেলা প্রশাসন থেকে আমরা সহায়তা করেছি। প্রয়োজনে আরও সহায়তা দেওয়া হবে।
শাফিউল মিল্লাত/এআইএস