নোয়াখালীর জেলা শহর মাইজদীতে প্রসূতিসহ নবজাতকের মৃত্যুর ঘটনায় চিকিৎসায় অবহেলার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় প্রধান অভিযুক্ত চিকিৎসক দম্পতি ডা. মোহাম্মদ আক্তার হোসেন ও ডা. ফৌজিয়া ফরিদসহ চারজনের সনদ সাময়িকভাবে বাতিল করেছে বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিল (বিএমডিসি)।

বিএমডিসির ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার ডা. মো. লিয়াকত হোসেন স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) এ তথ্য জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগে ডা. ফৌজিয়া ফরিদ ও ডা. মোহাম্মদ আক্তার হোসেনের সনদ তিন বছরের জন্য, ডা. সাওদা তাসনীমের সনদ এক বছরের জন্য এবং স্বাস্থ্য সহকারী জাহেদ হাসানের সনদ ছয় মাসের জন্য সাময়িকভাবে বাতিল করা হয়েছে। এই সময়ে তারা দেশের অভ্যন্তরে কোনো ধরনের অ্যালোপ্যাথিক চিকিৎসা চর্চা বা নিজেকে চিকিৎসক হিসেবে পরিচয় দিতে পারবেন না। নিষেধাজ্ঞাটি ১ জুলাই ২০২৫ থেকে কার্যকর হয়েছে।

বিএমডিসির বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিল আইন, ২০১০ (৬১নং আইন)-এর ২৩(১) ধারা এবং ২০২২ সালের প্রবিধানমালার বিধি ৩৬(৪)(খ) অনুযায়ী এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

জানা গেছে, ২০২৩ সালের ১৬ অক্টোবর রাতে সেনবাগ প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাংবাদিক এম এ আউয়াল তার একমাত্র মেয়ে ৯ মাসের অন্তঃসত্ত্বা উম্মে সালমা নিশির বাবুর ২৪১ হার্টবিট নিয়ে চিকিৎসার জন্য সাউথ বাংলা হসপিটালে আসেন। এ সময় হসপিটাল কর্তৃপক্ষ, কর্মরত মেডিকেল সহকারী জাহিদ হোসেনের সহায়তায় ডা. আক্তার হোসেন অভি ও তার স্ত্রী ডা. ফৌজিয়া ফরিদ রোগীর কোনো রকম পরীক্ষা-নীরিক্ষা না করে এবং অভিভাবকের সম্মতি না নিয়েই সিজারে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। মুহূর্তেই মা ও সন্তানের মৃত্যু ঘটে। ঘটনা ধামাচাপা দিতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও চিকিৎসক ডা. অভি তার স্ত্রী ফৌজিয়া ফরিদ প্রসূতির অবস্থা সংকটাপন্ন জানিয়ে আইসিইউ সাপোর্টের কথা বলে কুমিল্লায় প্রেরণ করেন। পরে ভুল চিকিৎসায় প্রসূতি ও নবজাতকের মৃত্যুর অভিযোগ ওঠে।

এ বিষয়ে অভিযোগকারী সাংবাদিক এম এ আউয়াল ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমার অনুমতি ছাড়া মেয়ের অপারেশন করা হয়েছিল। এতে করে আমার মেয়ে ও নাতি মারা গেছে। আমি চেয়েছিলাম ন্যায়বিচার, কিন্তু অভিযুক্ত চিকিৎসকরা প্রভাবশালী ও বিত্তশালী হওয়ায় আমি নানাভাবে হয়রানির শিকার হয়েছি। যাদের কারণে পৃথিবীর আলো দেখতে পারেনি আমার নাতি এবং অকালে জরে গেছে আমার মেয়ের প্রাণ তাদের কঠোর শাস্তি চাই। এ ছাড়া সাউথ বাংলা হাসপাতালের বিরুদ্ধে দৃশ্যমান ব্যবস্থা চাই। আশা করি খুব দ্রুতই কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

হাসিব আল আমিন/এএমকে