আমের ভরা মৌসুম চলছে নওগাঁয়। স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে জেলার আম যাচ্ছে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। ব্যবসায়ীরা সরাসরি বাগান থেকে আম সংগ্রহ করে কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন জেলায় পাঠাচ্ছেন। এছাড়া স্থানীয়রাও আত্মীয়-স্বজনদের বাড়িতে আম পাঠাতে আশ্রয় নিচ্ছেন কুরিয়ার সার্ভিসের। এতে প্রতিদিন জেলা থেকে গড়ে ৬০ টন আম যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন এলাকায়।   

ব্যবসায়ীরা বলছেন, এ বছর বাজারে আমের ভালো দাম পাচ্ছেন তারা। করোনার কারণে হাটে ক্রেতার উপস্থিতি কম হলেও অনলাইনে আমের অর্ডার বেশি। এভাবে বেচাকেনা চললে শেষ পর্যন্ত লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জেলায় কুরিয়ার সার্ভিসের মধ্য এসএ পরিবহন, সুন্দরবন, জননী, ইউএস বাংলা, করোতায়া, জি-রিয়ার, আহম্মদিয়া, রকি, শাহিন, আহম্মেদ পার্সেল রয়েছে। এসব কুরিয়ারের মাধ্যমে প্রতিদিন প্রায় ৬০ টন আম দেশের বিভিন্ন প্রান্তে পৌঁছানো হচ্ছে।

এসএ পরিবহনে প্রতি কেজি আম ঢাকায় পাঠাতে খরচ হয় ১৫ টাকা, ঢাকার বাইরে ২০ টাকা ও উত্তরবঙ্গে ১২ টাকা। সুন্দরবন কুরিয়ার সার্ভিসে ঢাকায় ১২ টাকা কেজি এবং ঢাকার বাইরে ১৬ টাকা কেজি। সুন্দরবন কুরিয়ার সার্ভিসের শাখা জেলার ১১টি উপজেলায় থাকায় মানুষের কাছে এর চাহিদা বেশি। তবে অন্য কুরিয়ার সার্ভিসের শাখা উপজেলা পর্যায় খুব একটা নেই। তাছাড়া সময়মতো আম পৌঁছে দেওয়া নিয়ে রয়েছে নানা অভিযোগ।

সাপাহারের অনলাইন আম ব্যবসায়ী শুভ্র জামান বলেন, ক্রেতাদের খরচ কিছুটা কমাতে ফলের কার্টুন প্যাকেট করে সুন্দরবন কুরিয়ারে পাঠানো হয়। প্রতিদিন প্রায় ২০-২৫ মণ আম কুরিয়ারযোগে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে পাঠানো হয়। তিন চার দিন পর ক্রেতাদের হাতে আম পৌঁছায়। আম পাওয়ার পর ক্রেতারা ফোন করে অভিযোগ করেন পাকা আম পাঠানোর কারণে পচন ধরছে।

বৃহস্পতিবার (১০ জুন) বিকেলে শহরের এসএ পরিবহনে আম কুরিয়ার করছেন আকতার হোসেন। তিনি বলেন, কার্টুনসহ ২২ কেজি আম ঢাকায় পাঠাবো। ৩০০ টাকা খরচ পড়েছে।

নওগাঁ এস এ পরিবহন কুরিয়া সার্ভিসের ম্যানেজার সারোওয়ার বলেন, জেলায় এসএ পরিবহনের আর কোনো শাখা নেই। জেলা শহরের একমাত্র এ পরিবহন থেকে প্রতিদিন প্রায় চার টন আম ঢাকা ও ঢাকার বাইরে যায়। আমের কোন ধরনের ক্ষতি ছাড়াই দুই দিনের মধ্য ডেলিভারি দেওয়া সম্ভব হয়। যদি প্লাস্টিকের ক্যারেট প্যাকেট করা থাকে তাহলে নষ্ট হওয়ার সম্ভব থাকে না। প্রতিকেজিতে যে ডেলিভারি চার্জ নির্ধারণ করা আছে যা সংশ্লিষ্ট অফিস বলত পারবে।

নওগাঁ সুন্দরবন কুরিয়ার সার্ভিসের ম্যানেজার শাবিনূর রহমান শিমুল বলেন, জেলার ১১টি উপজেলায় আমাদের শাখা আছে। এসব শাখার মাধ্যমে প্রতিদিন গড়ে ১০ টন আম দেশের বিভিন্ন জেলায় পাঠাই আমরা। ক্ষতি কমাতে প্লাস্টিকের ক্যারেটে আম বুকিং দিতে বলা হচ্ছে গ্রাহকদের। বিভিন্ন স্থানে প্যাকেট উঠানামা করতে ও যানজট দীর্ঘসময় আটকে থাকার কারণে আমে পচন ধরে। এছাড়া অনেকে না বুঝে পাকা আম কুরিয়ার করেন। দীর্ঘসময় প্যাকেটে থাকার কারণ গরমে তা নষ্ট হয়।

তিনি আরও বলেন, আমরা মণ হিসেবে ওজন করি। আর ব্যবসায়ীরা ৪৫ কেজি বা ৪৮ কেজিতে মণের হিসেব করেন। এ কারণে অনেক সময় কুরিয়ার করতে এসে বিভ্রান্তিতে পড়েন তারা।

শামীনূর রহমান/এসকেডি