বরিশাল জেলার আগৈলঝাড়া উপজেলায় আগাম ইরি-বোরো চাষ শুরু করেছেন কৃষকরা। কৃষি অফিস বলছে, এই উপজেলায় ২৬ হাজার ৫০৮ জন চাষির পরিবার একমাত্র ধান চাষের ওপর নির্ভরশীল।

কৃষি সম্প্রসারণ কার্যালয় থেকে জানানো হয়েছে, আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে কৃষকদের বাম্পার ফলন হবে। বিগত যেকোনো বছরের চেয়ে বেশি ইরি-বোরো উৎপাদিত হবে চলতি মৌসুমে। তবে কৃষকরা রয়েছেন পানি-সংকটে।

কৃষকদের দাবি, নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ না থাকা এবং খালে পানি সেচের প্রতিবন্ধকতার কারণে বীজতলা শুকিয়ে লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত না-ও হতে পারে।

এই মৌসুমে খালের পানিও শুকিয়ে যায়। সেচ মেশিন না থাকায় আমাদের ইউনিয়নের যতটুকু কৃষিজমি আছে, তাতে ইরি-বোরো চাষে অত্যন্ত কষ্ট হয়। বিগত বছরের অভিজ্ঞতার কথা উল্লেখ করে বলেন, অনেক সময়ে বীজ কেনার টাকাও ওঠে না। এ বছর খেতে পানি দিতে না পারলে ফলন ভালো হবে না।

সুলতান প্যাদা, রাজিহার ইউনিয়নের ইরিচাষি

উপজেলা উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা সুভাষ চন্দ্র মণ্ডল ঢাকা পোস্টকে জানান, চলতি মৌসুমে উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়নে ৯ হাজার ৩০০ হেক্টর জমি চাষ হবে। এতে ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৫০ হাজার ৪৫০ মেট্রিক টন চাল। মোট আবাদি জমির মধ্যে ৪৫০ হেক্টর জমিতে চাষিরা ইরি-বোরোর আগাম চাষ শুরু করেছেন। এর বাইরেও মোট জমির মধ্যে ৮ হাজার ৮০০ হেক্টর জমিতে হাইব্রিড ধান ও ৫০০ হেক্টর জমিতে উচ্চ ফলনশীল (উফশী) বোরো ধান আবাদ করা যাবে।

এই কর্মকর্তা আরও বলেন, লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ ও তা অর্জন দুটি ভিন্ন কাজ। লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করলেই তা অর্জিত হয় না। বাংলাদেশ যেহেতু নাতিশীতোষ্ণ অঞ্চল, সে কারণে আবহাওয়া নিয়মিত পরিবর্তিত হয়। ফলে এখনই বলা যাবে না কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যমাত্রা আমরা অর্জন করতে পারব কি না। যদি আবহাওয়া ভালো থাকে, বীজতলা সার ও পানি পায়, তাহলে অবশ্যই আমরা অর্জন করতে পারব।

চলতি বছর উপজেলায় ৯ হাজার ৩০০ হেক্টর জমিতে (উফশী) ও হাইব্রিড জাতের ধান চাষ হচ্ছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় কৃষকদের বীজতলা নষ্ট হয়নি। তারা আগাম ধান চাষ শুরু করেছেন। বর্তমানে উপজেলার প্রায় আগাম ৪০০ হেক্টর জমিতে কৃষকদের ধান রোপণ করা হয়েছে। আমরা কৃষকদের সব সময় সহায়তা করে যাচ্ছি।

দোলন চন্দ্র রায়, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা

রাজিহার ইউনিয়নের ইরিচাষি সুলতান প্যাদা বলেন, এই মৌসুমে খালের পানিও শুকিয়ে যায়। সেচ মেশিন না থাকায় আমাদের ইউনিয়নের যতটুকু কৃষিজমি আছে, তাতে ইরি-বোরো চাষে অত্যন্ত কষ্ট হয়। বিগত বছরের অভিজ্ঞতার কথা উল্লেখ করে বলেন, অনেক সময়ে বীজ কেনার টাকাও ওঠে না। এ বছর খেতে পানি দিতে না পারলে ফলন ভালো হবে না।

পাশের ইউনিয়ন গৈলার কবির মুন্সী বলেন, আমাদের জমির মাঠগুলোতে সেচ পাম্প দরকার। সেব পাম্প না হলে জমিতে পানি দেওয়া যায় না, খেতে বীজ পুড়ে যায়। এই কৃষক আরও বলেন, কৃষক বাঁচাতে হলে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ-ব্যবস্থার দরকার। বিদ্যুৎ না দিলে খেতে পানি তুলতে পারি না। জেনারেটর দিয়ে পানি তুললে ব্যয় বেড়ে যায়।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা দোলন চন্দ্র রায় ঢাকা পোস্টকে জানান, চলতি বছর উপজেলায় ৯ হাজার ৩০০ হেক্টর জমিতে (উফশী) ও হাইব্রিড জাতের ধান চাষ হচ্ছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় কৃষকদের বীজতলা নষ্ট হয়নি। তারা আগাম ধান চাষ শুরু করেছেন। বর্তমানে উপজেলার প্রায় আগাম ৪০০ হেক্টর জমিতে কৃষকদের ধান রোপণ করা হয়েছে। আমরা কৃষকদের সব সময় সহায়তা করে যাচ্ছি।