বকেয়া টাকা পরিশোধ না করায় এক স্বর্ণের কারিগরকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে কালাম নামে এক কাপড় ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে। বাজারের লোকজনের সামনে মারধর করার অপমান সইতে না পেরে আত্মহত্যা করেন ভুক্তভোগী।

বিচারের দাবিতে বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) বিকেলে থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত জেলার রানীশংকৈল উপজেলার নেকমরদ বাজারের রেখা ক্লথ স্টোরের সামনে মরদেহ নিয়ে অবস্থান নেন তার পরিবারের লোকজন।

নিহত ললিত বনিক বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার ভানোর ইউনিয়নের বণিকপাড়া গ্রামের মংলু বণিকের ছেলে। আর কালাম নেকমরদ বাজারের রেখা ক্লথ স্টোরের মালিক আব্দুর রহমানের ছেলে।

ললিত বণিকের স্বজনরা জানায়, নেকমরদ বাজারের রেখা ক্লথ স্টোরে কয়েকদিন আগে ৮ হাজার টাকার কাপড় ক্রয় করেন ললিত বণিক। কাপড়ের ৮ হাজার টাকার মধ্যে ৫ হাজার টাকা পরিশোধ করে বাকি ৩ হাজার টাকা পরে দেবে বলে জানান ললিত। কিন্তু আজ ললিত বণিক নেকমরদ বাজারের সুজন বণিকের স্বর্ণের দোকানে কারিগরের কাজ করতে গেলে কালাম ললিতকে মারধর করে পাওনা ৩ হাজার টাকা দাবি করেন। 

বাকি টাকা পরে দিবে এ কথা বলায় কালাম সবার সামনে ললিতকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ ও মারধর করেন তিনি। এ অপমান সইতে না পেরে গ্যাস ট্যাবলেট সেবন করেন তিনি। পরে তার স্বাস্থ্যের অবনতি হলে স্বর্ণের দোকানের অন্যান্য কর্মচারীরা তাকে রানীশংকৈল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নিয়ে যায়। সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক ললিতকে দিনাজপুর মেডিকেল কলেজে রেফার্ড করেন। দিনাজপুরে নেওয়ার পথে তিনি মারা যান। এরপর মরদেহ নিয়ে আব্দুর রহমানের কাপড়ের দোকানের সামনে অবস্থান নেয় স্থানীয়সহ তার পরিবারের লোকজন। যা রাত ৮ পর্যন্ত চলে। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে মরদেহ থানায় নিয়ে যায়।

সুজন বণিকসহ আরও কয়েকজন বলেন, আমার দোকানের কর্মচারী ছিলেন ললিত বণিক। ছেলে ও বাজারের লোকজনের সামনে মারধর ও অপমান সইতে না পেরে আত্মহত্যার পথ বেছে নেন তিনি। ললিত গরিব মানুষ। কাজ করে সংসার চালায়। মাত্র ৩ হাজার টাকার জন্য এভাবে অপমান ও মারধর ঠিক হয়নি। এটার বিচার হওয়ার উচিত।

তবে এ ঘটনার পর থেকে দোকান বন্ধ করে সটকে পড়েন দোকান মালিক আব্দুর রহমান ও তার ছেলে কালাম।

এ বিষয়ে রানীশংকৈল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আরশেদুল হক ঢাকা পোস্টকে বলেন, আপাতত পরিবেশ পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ঠাকুরগাঁও জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। আর ললিত বণিকের পরিবারের কেউ অভিযোগ দিলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

রেদওয়ান মিলন/এমএন