সরকারের ব্যর্থতায় সীমান্ত দিয়ে প্রতিনিয়ত পুশইন হচ্ছে : নাহিদ ইসলাম
জুলাই গণঅভ্যুত্থানের বিচার এবং প্রশাসনে ক্ষমতাসীনদের দোসরদের উৎখাতের দাবি জানিয়ে শেরপুরে পথসভা করেছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)।
রোববার (২৭ জুলাই) বিকেলে ‘দেশ গড়তে জুলাই পদযাত্রা’ কর্মসূচির অংশ হিসেবে শহরের থানা মোড়ে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়। এর আগে শহীদ মাহবুব চত্বর থেকে পদযাত্রা বের হয়, যাতে এনসিপির নেতাকর্মীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশ নেন।
বিজ্ঞাপন
পথসভায় এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, সীমান্তে কোনো হত্যা বা পুশইন বরদাশত করা হবে না। সরকারের ব্যর্থতায় সীমান্ত দিয়ে প্রতিনিয়ত পুশইন হচ্ছে। তিনি দাবি করেন, কোটা আন্দোলনের সূত্র ধরে যে গণঅভ্যুত্থান হয়েছিল, তার ফলে শেখ হাসিনা দেশ থেকে পালিয়ে দিল্লিতে আশ্রয় নিয়েছেন এবং তার সহযোদ্ধা সন্ত্রাসীরাও সেখানে অবস্থান করছে। সেই দিল্লি থেকেই আবার পুশইনের মাধ্যমে জনগণকে ধোঁকা দেওয়ার চেষ্টা চলছে।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের এক বছরের মধ্যেও কোনো দৃশ্যমান বিচার হয়নি। আওয়ামী লীগের দোসররা এখনও প্রশাসনের বিভিন্ন জায়গায় থেকে সন্ত্রাসীদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দিচ্ছে। গোপালগঞ্জে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা আক্রমণ করলেও এখনো কেউ বিচারের আওতায় আসেনি।
বিজ্ঞাপন
তিনি বলেন, শেরপুরে হাসপাতাল থাকলেও সেখানে চিকিৎসাসেবা নেই, শিক্ষার পরিকাঠামো দুর্বল এবং কর্মসংস্থানের সুযোগ সীমিত। তার অভিযোগ, শেখ হাসিনা বিগত সময় দেশ শাসন করলেও শেরপুরে উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি। বরং উন্নয়ন হয়েছে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসী ও দোসরদের, যারা দেশের টাকা লুট করে বিদেশে পালিয়ে আছে।
এনসিপির উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম বক্তব্যে বলেন, দেশের প্রতিটি সেক্টর অতীতে কিছু ধান্দাবাজ ও আত্মস্বার্থপরদের হাতে কুক্ষিগত ছিল। অভ্যুত্থানের পরও তাদের বিরুদ্ধে কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি, ফলে তারা আবারও সিস্টেমে প্রবেশ করেছে এবং নিয়ন্ত্রণ নিচ্ছে।
দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, বাংলাদেশের রাজনীতিতে স্লোগান দিয়ে নয়, সংকটে পাশে থাকার মাধ্যমে প্রকৃত কর্মীর পরিচয় মেলে। তিনি বলেন, হাজার হাজার কর্মীর দরকার নেই, বরং দরকার সংকটকালে যারা রাজপথে থাকবে সেই নির্ভরযোগ্য কর্মী। তিনি নিজ দলের এক কর্মীর চাঁদাবাজির অভিযোগের প্রসঙ্গে বলেন, যদি দলের কেউ অপরাধ করে, তবে আগে আপ্যায়ন করে থানায় দিন। অপরাধী যেই হোক, ছাড় দেওয়া হবে না।
তিনি বলেন, সম্প্রতি মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় দগ্ধ হয়ে যেসব শিশু মারা গেছে, সেই ঘটনার বিচার ও তদন্তে অগ্রগতি নেই। তিনি বলেন, সেই মর্মান্তিক ঘটনার রেশ নিয়েই তিনি এই সভায় এসেছেন। দাবি জানান কে বা কারা এই ঘটনার জন্য দায়ী, তা স্পষ্টভাবে প্রকাশ করতে হবে।
সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী, উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম, দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ, যুগ্ম সদস্যসচিব তাসনিম জারা, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমীন।
নাইমুর রহমান তালুকদার/এমএএস