প্রতিপক্ষের গুলিতে গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের সদস্য নিহত
খাগড়াছড়ি জেলার পানছড়িতে প্রতিপক্ষের গুলিতে ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্টের (ইউপিডিএফ) যুব সংগঠন গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের সদস্য খুকু চাকমা (৪১) নিহত হয়েছেন।
রোববার (২৭ জুলাই) বিকেল ৩টার দিকে উপজেলার চেঙ্গি ইউনিয়নের উগুদোছড়ি এলাকায় তার বন্ধুদের সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হয়েছেন বলে দাবি করেছে সংগঠনটি।
বিজ্ঞাপন
গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের দপ্তর সম্পাদক শ্যামল চাকমা স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ইউপিডিএফ সমর্থিত এই সংগঠনের সদস্য খুকু চাকমা বন্ধুদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে উগুদোছড়ি গ্রামে গেলে প্রতিপক্ষ একটি সশস্ত্র দলের সদস্যরা তার ওপর হামলা চালায়।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, পিকলু চাকমার নেতৃত্বে জনসংহতি সমিতির (জেএসএস-সন্তু গ্রুপ) অন্তত ২০ জনের একটি দল খুকু চাকমাকে গুলি করে। এতে তিনি গুরুতর আহত হন এবং পরে কাছ থেকে গুলি করে তাকে হত্যা করা হয়।
বিজ্ঞাপন
আরও পড়ুন
নিহত খুকু চাকমা খাগড়াছড়ি সদর উপজেলার কমলছড়ি ইউনিয়নের বেতছড়ি খ্রিস্টান পাড়ার বাসিন্দা।
গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের কেন্দ্রীয় সভাপতি জিকো ত্রিপুরা এই ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন। তিনি এ ধরনের সহিংস ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে দোষীদের চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।
এ বিষয়ে পানছড়ি থানা-পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জসিম উদ্দিন বলেন, হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় এখন পর্যন্ত থানায় কোনো লিখিত অভিযোগ জমা পড়েনি। এ ছাড়া, ঘটনাস্থল থেকে কোনো মরদেহও উদ্ধার করা যায়নি বলে জানান তিনি।
খাগড়াছড়ি পুলিশ সুপার আরেফিন জুয়েল ঢাকা পোস্টকে জানান, পানছড়ির দুর্গম সীমান্ত এলাকায় গোলাগুলির ঘটনার খবর পেয়েছেন। তবে কোনো হতাহত আছে কিনা সে বিষয়ে কিছু জানতে পারেননি। সংঘর্ষ হওয়া এলাকাটি অত্যন্ত দুর্গম। বিজিবিসহ অন্যান্য বাহিনীর সহায়তা ছাড়া পুলিশের ওই সব এলাকায় যে কোনো ধরনের কার্যক্রম পরিচালনা করা অসম্ভব।
উল্লেখ্য, পানছড়ি উপজেলার সীমান্ত লাগোয়া লৌগাং ইউনিয়নের কয়েকটি স্থানে রোববার দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত থেমে থেমে জেএসএস (সন্তু গ্রুপ) এবং ইউপিডিএফ (প্রসিত গ্রুপ)-এর সশস্ত্র বিভাগের সদস্যদের মধ্যে বন্দুক যুদ্ধ সংঘটিত হয়েছে। এ ঘটনার পরপরই ইউপিডিএফ সমর্থিত যুব ফোরামের পক্ষ থেকে তাদের সদস্য খুকু চাকমা নিহত হওয়ার দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি। বেশ কয়েক মাস ধরেই দীঘিনালা এবং পানছড়ির বেশ কয়েকটি এলাকার আধিপত্য নিয়ে দুই সংগঠনের মধ্যে মুখোমুখি অবস্থান করার গুঞ্জন রয়েছে। এ পর্যন্ত কয়েকবার দুই পক্ষের মধ্যে যুদ্ধ সংঘটিত হয়েছে। সশস্ত্র সংগঠনের সদস্যদের পাশাপাশি গুলিবিদ্ধ হয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের মৃত্যুর ঘটনাও ঘটেছে।
মোহাম্মদ শাহজাহান/এএমকে