রংপুরের পীরগঞ্জে ব্যবসায়ী হত্যা মামলায় আব্দুল খালেক মন্ডল (৫৫) নামে একজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এ মামলায় আরও চার আসামিকে খালাস দেওয়া হয়েছে।

মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) দুপুরে রংপুরের সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ ফজলে খোদা মো. নাজির এ রায় দেন। রায়ে আসামি আব্দুল খালেককে ১০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও ছয় মাস বিনাশ্রম কারাদণ্ড এবং মুক্তিপণ চাওয়ার দায়ে ১০ বছর সশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়।

মামলা সূত্রে জানা যায়, ব্যবসায়ী আশরাফুল আলম পীরগঞ্জ চতরা বাজারে অবস্থিত মাইন সার্ভে প্লেস ওয়ালটন শোরুমের মালিক ছিলেন। তার কর্মচারী হিসেবে আসামি আব্দুল কাদের পুকুরে মাছ চাষ করতেন। ২০২১ সালের ১৮ জানুয়ারি আশরাফুল আলমকে তার ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান থেকে বাড়িতে ডেকে নেন আব্দুল খালেক। এরপর থেকে আশরাফুল নিখোঁজ হন। আসামি আব্দুল খালেক আশরাফুল আলমকে হত্যা করে মরদেহ গুম করেন।

হত্যার পরদিন আব্দুল খালেক আশরাফুলকে আটক করে রাখা হয়েছে উল্লেখ করে আশরাফুলের স্ত্রীর কাছে তিন লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেন। আশরাফুলের স্ত্রী স্বামীকে ফিরে পাওয়ার আশায় মুক্তিপণ দিতে সম্মত হন এবং সে বিষয়টি র‍্যাবকে জানান।

আশরাফুলের স্ত্রী টাকা নিয়ে আব্দুল খালেকের দেওয়া ঠিকানায় গেলে র‍্যাব দেখে খালেক আর টাকা নিতে আসেননি।

পরে পুলিশ আব্দুল খালেককে আটক করলে নিখোঁজের এক মাস পর আব্দুল খালেকের দেখানো মতে চতরা বাজারের সন্নিকটস্থ বন্যা আশ্রয়ণকেন্দ্রের অব্যবহৃত সেপটিক ট্যাংক থেকে আশরাফুল আলমের অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পরে আব্দুল খালেক ঘটনা স্বীকার করে ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়।

এ ঘটনায় আশরাফুল আলমের স্ত্রী মোর্শেদা খাতুন বাদী হয়ে পীরগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেন। পুলিশ আব্দুল খালেককে গ্রেপ্তার করে। পরে খালেক আদালতে ১৬৪ ধারা স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। মামলায় ১৯ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য ও জেরা শেষে আসামি খালেককে দোষী সাব্যস্ত করে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেন আদালত।

রাষ্ট্রপক্ষের পিপি মো. আফতাব উদ্দিন এবং আসামিপক্ষের আইনজীবী মো. রফিকুল ইসলাম লাল মামলাটি পরিচালনা করেন।

ফরহাদুজ্জামান ফারুক/এএমকে