নীলফামারী জেলার চিলাহাটি স্টেশন

প্রায় ৫৫ বছর পর বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যকার চিলাহাটি-হলদিবাড়ী রেলপথ আবারও চালুর উদ্যোগ নিয়েছে দুই দেশ। প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে আগামী ১৭ ডিসেম্বর উদ্বোধন হবে বাংলাদেশের চিলাহাটি ও ভারতের হলদিবাড়ী রেলপথ। দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ওই রেলপথের আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করবেন। ওই দিন ভারত থেকে একটি পণ্যবাহী ট্রেন আনুষ্ঠানিকভাবে নীলফামারী জেলার ডোমার উপজেলার চিলাহাটি স্টেশনে প্রবেশ করবে। এমনটা জানিয়েছেন রেলপথমন্ত্রী মো. নূরুল ইসলাম সুজন।

বৃহস্পতিবার (১০ ডিসেম্বর) দুপুরে নীলফামারী জেলা প্রশাসকের সম্মেলনকক্ষে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে উদ্বোধনের প্রস্তুতিমূলক সভায় মন্ত্রী এসব কথা বলেন।

১৯৪৭ সালের পাকিস্তান-ভারত ভাগ হওয়ার পরও এ পথে ট্রেন চলাচল করত। পরে ১৯৬৫ সালের পাক-ভারত যুদ্ধের সময় এ পথটি বন্ধ হয়ে যায়। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির উদ্যোগে এই রেলপথ পুনরায় চালুর কার্যক্রম শুরু হয়েছে

রেলপথমন্ত্রী বলেন, দুই দেশের রেললাইন নির্মাণকাজ সম্পন্ন হওয়ার পর ইঞ্জিন পরীক্ষা করা হয়েছে। দুই দেশেই পণ্যবাহী ও যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচলের জন্য আমরা এখন প্রস্তুত। চিলাহাটি থেকে ট্রেন ভারতে ঢুকে প্রথমেই হলদিবাড়ী স্টেশনে যাবে। তারপর জলপাইগুড়ি টাউন স্টেশন হয়ে শিলিগুড়ি যাবে। আগামী ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা দিবসে এই রুটে যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল শুরু হবে।

মন্ত্রী আরো জানান, অবিভক্ত ভারতের রেল যোগাযোগের এটিই প্রধান পথ ছিল। ১৯৪৭ সালের পাকিস্তান-ভারত ভাগ হওয়ার পরও এ পথে ট্রেন চলাচল করত। পরে ১৯৬৫ সালের পাক-ভারত যুদ্ধের সময় এ পথটি বন্ধ হয়ে যায়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির উদ্যোগে এই রেলপথ পুনরায় চালুর কার্যক্রম শুরু হয়েছে। চিলাহাটি-হলদিবাড়ী রেলপথ চালু হওয়ায় দুই দেশের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় উন্নয়নের দুয়ার আরও এক ধাপ খুলে যাবে।

রেলপথ মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, ৮০ কোটি ১৬ লাখ ৯৪ হাজার টাকা ব্যয়ে ভারতের সঙ্গে রেলসংযোগ স্থাপনের লক্ষ্যে চিলাহাটি এবং চিলাহাটি বর্ডারের সঙ্গে ব্রডগেজ রেলপথ নির্মাণ প্রকল্পটি ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে একনেকে অনুমোদিত হয়। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ম্যাক্স ইন্টারন্যশনাল ২০১৯ সালের জুন মাসে কাজ শুরু করে। চিলাহাটি স্টেশন থেকে চিলাহাটি বর্ডার পর্যন্ত ৬ দশমিক ৭২ কিমি কাজ সম্পন্ন হয়েছে। চিলাহাটি স্টেশন ভবন নির্মাণকাজ চলমান আছে। চলতি বছরের ৩১ ডিসেম্বর কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও লুপলাইন নির্মাণের জন্য জামি অধিগ্রহণ-সংক্রান্ত কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন থাকায় নির্ধারিত সময়ে তা করা সম্ভব হবে না।

জেলা প্রশাসক হাফিজুর রহমান চৌধুরীর সভাপতিত্বে এ সময় উপস্থিত ছিলেন নীলফামারী-১ আসনের সাংসদ বীর মুক্তিযোদ্ধা আফতাব উদ্দিন সরকার, নীলফামারী-৪ আসনের সাংসদ আহসান আদেলুর রহমান আদেল, সংরক্ষিত মহিলা আসনের সাংসদ রাবেয়া আলিম, পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ে বিভাগের জেনারেল ম্যানেজার মিহির কান্তি গুহ, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা জয়নাল আবেদীন, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি দেওয়ান কামাল আহমেদ, প্রকল্প পরিচালক আব্দুর রহিমসহ জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা ও রাজনৈতিক নেতারা।

এনএ