কুষ্টিয়ার ভেড়ামারায় গৃহবধূকে গণধর্ষণের ঘটনায় মামলা হয়েছে। এ মামলার ৫ আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। স্বামীকে মারপিট করে আটকে রেখে ওই গৃহবধূকে গণধর্ষণ করা হয়। শনিবার (২ আগস্ট) রাত ১১টার দিকে ভেড়ামারায় কুষ্টিয়া-ঈশ্বরদী জাতীয় মহাসড়কের বারোমাইল লিচুবাগান এলাকায় এ ঘটনা ঘটেছে। ভেড়ামারা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল রব তালুকদার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। 

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- ভেড়ামারার মসলেমপুর এলাকার মৃত মোজাম্মেল প্রামাণিকের ছেলে কালু প্রামাণিক (৪৬), ষোল দাগ এলাকার মোজাম্মেল শেখের ছেলে মুর্শিদ শেখ (৪৫), মৃত আকছেদ মন্ডলের ছেলে টিটু মন্ডল ওরফে টিপু (৪২), একই এলাকার মৃত নবীর মন্ডলের ছেলে এজাজুল (৪২) ও মৃত হাবিবুল সরদারের ছেলে ভ্যানচালক রুবেল আলী (২৪)।

এ বিষয়ে ভেড়ামারা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল রব তালুকদার বলেন, ঘটনার পরপরই রাতে অভিযান চালিয়ে ৫ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় ভিকটিমের স্বামী বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেছে। কতজনকে আসামি করা হয়েছে তা এখন বলা যাচ্ছে না। বাকি আসামিদের গ্রেপ্তার করতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তাদের জড়িত থাকার প্রমাণ মিলেছে। ওই নারীকে ডাক্তারি পরীক্ষা করানোর জন্য হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। আসামিদের আদালতে পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে কুষ্টিয়া জেলা পুলিশ জানিয়েছে, নওগাঁর এক ব্যক্তি ভেড়ামারা থানাধীন কুটির বাজারে ভাড়া বাসায় স্ত্রীকে নিয়ে বসবাস করেন। তিনি ডেকোরেটর দোকানে কাজ করেন। তার স্ত্রী বারোমাইলের একটি হোটেলে রান্নার কাজ করেন। শনিবার রাত ১১টা ১০ মিনিটের দিকে হোটেলের কাজ শেষ করে প্রতিদিনের ন্যায় স্বামীর সাথে ভ্যানযোগে বাসায় ফেরার পথে ভেড়ামারা থানাধীন বারোমাইল লিচুবাগান নামক স্থানে ৬/৭ জন লোক তাদের পথরোধ করে। এ সময় স্বামী ওই নারীর স্বামীকে মারধর করে আটকে রেখে তাকে হাইওয়ে রাস্তার পাশে লিচু বাগান নামক স্থানে নিয়ে ৩/৪ জন জোরপূর্বক ধর্ষণ করে।
 
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে পুলিশ আরও জানিয়েছেন, এ ঘটনার সংবাদ পেয়ে থানা পুলিশ ও ডিবি পুলিশের বিশেষ আভিযানিক টিম রাতভর অভিযান চালিয়ে ঘটনার সাথে জড়িত ৫ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।

এ ঘটনার তদন্ত ও তথ্য প্রাপ্তিতে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন স্থানীয় সাংবাদিকরা। গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে কথা বলতে অনীহা প্রকাশ করেন ভেড়ামারা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রব তালুকদার। এমনকি গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে ভুক্তভোগীর স্বামীকে কথা বলতেও দেওয়া হয়নি। রাতভর থানায় অবরুদ্ধ রাখা হয় ভুক্তভোগী নারীর স্বামীকে। 

কু‌ষ্টিয়া জেনারেল  হাসপাতালের আবা‌সিক চি‌কিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) ডা. হোসেন ইমাম বলেন, গণধর্ষণের শিকার নারীকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছে। তার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করার জন্য হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। স্বাস্থ্য পরীক্ষার পর এ বিষয়ে বিস্তারিত জানাতে পারবো। 

রাজু আহমেদ/এমএএস