এএসআই সৌমেন রায়

পরকীয়ার জেরে কুষ্টিয়া শহরে প্রকাশ্যে স্ত্রী-সন্তান ও এক যুবককে গুলি করে হত্যার ঘটনায় আটক এএসআই সৌমেন রায়কে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। রোববার (১৩ জুন) বিকালে তাকে বরখাস্ত করা হয়।

এ ঘটনায় খুলনা রেঞ্জ থেকে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। খুলনা রেঞ্জের দুজন পুলিশ কর্মকর্তাসহ কুষ্টিয়ায় এক পুলিশ কর্মকর্তাকে তদন্ত কমিটির সদস্য হিসেবে রাখা হয়েছে।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার খায়রুল আলম। এসপি খায়রুল আলম বলেন, ঘটনা জানার পর সৌমেন রায়কে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এরপর তদন্ত শেষে তার বিরুদ্ধে সর্বশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

কুষ্টিয়া পুলিশ সূত্র জানায়, সৌমেন রায় ২০১৫ সালে কনস্টেবল থেকে এএসআই পদে উন্নীত হন। পরে ২০১৬ সালে কুষ্টিয়ার কুমারখালী থানায় যোগ দেন। সেখান থেকে জেলার অন্যান্য থানায়ও কর্মরত ছিলেন। সর্বশেষ মিরপুর থানার হালসা ক্যাম্পে ছিলেন। এরপর বাগেরহাট হয়ে খুলনা ফুলতলা থানায় যোগ দেন।

হত্যাকাণ্ডে নিহত শাকিল খানের বাবা মেজবার রহমান বাদী হয়ে কুষ্টিয়া মডেল থানায় সৌমেন রায়কে একমাত্র আসামি করে মামলার কাজ চলছে। কুষ্টিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাব্বিরুল আলম বলেন, অল্প সময়ের মধ্যে মামলা রেকর্ড হয়ে যাবে। 

এর আগে রোববার (১৩ জুন) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে কুষ্টিয়া শহরের কাস্টমস মোড় এলাকার নাজ ম্যানশন মার্কেটের বিকাশের দোকানের সামনে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় পুলিশ সৌমেনকে ঘটনাস্থল থেকে অস্ত্র, গুলি ও ম্যাগজিনসহ আটক করেছে।

জানা গেছে, এএসআই সৌমেনের কর্মস্থল বদলি হওয়ার পর থেকেই বিকাশকর্মী শাকিলের সঙ্গে সম্পর্কে জড়ান আসমা। তবে এ সম্পর্ক মেনে নিতে পারেননি সৌমেন। আসমার প্রতি ক্ষোভ জমিয়ে রাখেন মনে। সেই ক্ষোভ থেকেই দিনদুপুরে প্রকাশ্যে তিনজনকে গুলি করে হত্যা করেন সৌমেন। 

স্থানীয়রা জানায়, আসমার দ্বিতীয় স্বামীর সন্তান ছিল রবিন। স্বামীর সঙ্গে ছাড়াছাড়ির পর সৌমেনের সঙ্গে সম্পর্কে জড়ান তিনি। এরপর তারা বিয়ে করেন। কিন্তু কর্মস্থল বদলি হওয়ার পর সৌমেনকে ছেড়ে বিকাশকর্মী শাকিলের সঙ্গে সম্পর্কে জড়ান আসমা। পরকীয়া প্রেমের সম্পর্কের জেরে তিনটি তাজা প্রাণ ঝরে গেল।

নিহতরা হলেন- এএসআই সৌমেনের স্ত্রী আসমা (২৫), তাদের ছেলে  রবিন (৫) এবং পরকীয়া প্রেমিক শাকিল (২৮)। শাকিলের সঙ্গে আসমার পরিবারের কোনো সম্পর্ক নেই। তবে শাকিলের সঙ্গে আসমার পরকীয়া সম্পর্ক ছিল।

রাজু আহমেদ/এমএসআর