অবশেষে জেলা প্রশাসনের হস্তক্ষেপে টানা ৮ ঘণ্টা পর বৃহত্তর ময়মনসিংহের ৬ জেলার বাস চলাচল শুরু হয়েছে। এতে যাত্রীদের মধ‍্যে স্বস্তি ফিরে এসেছে। 

মঙ্গলবার (১৯ আগস্ট) রাত ১০টা থেকে বন্ধ থাকা বাস চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে। এতে লাগব হয়েছে যাত্রী দুর্ভোগ। 

এর আগে এদিন রাত সাড়ে ৮টার দিকে উদ্বুদ্ধ পরিস্থিতি নিরসনে জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) কাজী আখতার উল আলমের আহ্বানে পরিবহন মালিক সমিতির নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন জেলা প্রশাসন। এতে পরিবহন মালিকদের সঙ্গে দীর্ঘ আলোচনায় ঘটনার তদন্তে ৪ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে জেলা প্রশাসন। এ সময় জনভোগান্তি লাঘবে পরিবহন মালিক সমিতি বাস চলাচল স্বাভাবিক রাখার সিদ্ধান্ত হয়। 

এতে জেলা ও পুলিশ প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তাসহ পরিবহন মালিক সমিতির সভাপতি আলমগীর মাহমুদ আলম, মহাসচিব রতন আকন্দ, মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক একেএম মাহাবুবুল আলম, লিটন আকন্দ, পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি নজরুল ইসলামসহ পরিবহন নেতারা উপস্থিত ছিলেন। 

বৈঠক শেষে জেলা প্রশাসক মো. মুফিদুল আলম সাংবাদিকদের জানান, বাস কাউন্টারে ভাঙচুরের ঘটনায় ৪ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এ সময় সবার মতামতের ভিত্তিতে বাস চলাচল শুরু হয়েছে। 

জেলার পুলিশ সুপার (এসপি) কাজী আখতার উল আলম বলেন, উদ্ভূত পরিস্থিতি নিরসনে পরিবহন মালিক ও শ্রমিকদের সঙ্গে আলোচনার ম‍াধ‍্যমে বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। সেই সঙ্গে হামলা ভাঙচুরের ঘটনায় তদন্তপূর্বক পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। 

এর আগে ময়মনসিংহে পরিবহন মালিকদের অভ্যান্তরীণ দ্বন্দ্বে এদিন দুপুরে নগরীর মাসকান্দা বাস কাউন্টারে ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে। এর প্রতিবাদে দুপুর ২টা থেকে বৃহত্তর ময়মনসিংহের ৬ জেলার বাস চলাচল বন্ধ ঘোষণা করা হয়।  

পরিবহন মালিক সমিতির সাবেক সভাপতি ও বিএনপি নেতা মো. শরাফ উদ্দিন কোহিনূর বলেন, গত ৪ মার্চ পর্যন্ত ময়মনসিংহে ইউনাইটেডের ব্যানারে ৯০টি বাস ঢাকা-ময়মনসিংহ সড়কে চলাচল করছে। এর মধ্যে ৬০টি বাস ঢাকার পরিবহন নেতা সাইফুল বাতেনের। বাকি ৩০টি ময়মনসিংহের। এর মধ্যে ১৩টি গাড়ির মালিক আওয়ামী লীগ নেতা আমিনুল হক শামীমের। বাকি ১৭টি গাড়ির মালিক মালিক সমিতির নেতাদের। ফলে চাহিদার চেয়ে এই সড়কের গাড়ি বেশি হয়ে যাওয়ায় সম্প্রতি ব্যবসায় মন্দাভাব শুরু হয়েছে। এ নিয়ে ভুক্তভোগীদের মধ্যে অসন্তোষ চলছিল। এরই মধ্যে সম্প্রতি জামায়াত নেতা মাহাবুব ইউনাইটেডের ব্যানারে একটি গাড়ি প্রবেশ করায়। তবে গত কিছুদিন আগে মাহাবুবের গাড়িসহ মোট ৫টি গাড়ি ওই ব্যানার থেকে বের করে দেওয়া হয়। 

এ সব কারণে এই হামলার ঘটনা ঘটতে পারে। তবে কারা এই হামলা বা ভাঙচুরের সঙ্গে জড়িত তা বলতে পারছি না। 

তিনি আরও বলেন, ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ নেতা আমিনুল হক শামীমের বিরুদ্ধে ২টি মামলা রয়েছে। পুলিশের কাছে তিনি পলাতক। কিন্তু অদৃশ্য ক্ষমতায় গত এক বছর ধরে বিভিন্ন ব্যানারে এসইপিএল’র ৭০ থেকে ৮০টি গাড়ি চলাচল করছে। এ নিয়ে অনেকের মধ্যে ক্ষোভ রয়েছে।  

কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শিবিরুল ইসলাম বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করছি- মালিক সমিতির অভ্যান্তরীণ দ্বন্দ্বে এই ঘটনা ঘটেছে। তবে বর্তমানে যান চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। 

মো. আমান উল্লাহ আকন্দ/এমএন