অসুস্থ ৩ জনকে সেনাবাহিনীর হেলিকপ্টারে করে বান্দরবান সদর হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছে

বান্দরবানের আলীকদমের করুকপাতা ইউনিয়নে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে কাইকেউ ম্রো (১৮) নামের একজন মারা যান। বৃহস্পতিবার (১৭ জুন) ভোরে তিনি মারা যান। এদিকে দুর্গম এলাকা হওয়ায় যাতায়তব্যবস্থা না থাকা ও সঠিক চিকিৎসার অভাবে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ১১-তে।

স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, এ নিয়ে পাঁচটি গ্রামে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে শিশু, কিশোর ও বয়স্কসহ এ পর্যন্ত ১১ জনের মৃত্যু হয়েছে। আক্রান্ত হয়েছে ২০০ জন।

এদিকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় আংচং ম্রো (৭০) মেনলে ম্রো (৫) ও রেপং ম্রোকে (১৫) সেনাবাহিনীর হেলিকপ্টারে করে বান্দরবান সদর হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছে।

পরে খবর পেয়ে সেনাবাহিনীর সদস্যরা হেলিকপ্টারে করে ওষুধপথ্যসহ বিশুদ্ধ খাবার পানি পৌঁছে দেয় এবং আক্রান্তদের চিকিৎসা প্রদানে সেখানে একটি ফিল্ড হাসপাতাল তৈরি করে।

কুরুকপাতা ইউপির (৫ নং ওয়ার্ড) সদস্য কাইংক্য ম্রো জানান, সকালে মাংরুং পাড়ায় কাইকেউ ম্রো (১৮) নামের আরও একজন মারা যায়। এর আগে বুধবার আরও দুজন মারা যায়। আক্রান্ত এখনো ২০০ জনের মতো রয়েছে। সেনাবাহিনী ও স্বাস্থ্য বিভাগের চিকিৎসকরা আক্রান্তদের চিকিৎসাসেবা দিচ্ছেন।

আলীকদমের কুরুকপাতা ইউপি চেয়ারম্যান ক্রাতং ম্রো ঢাকা পোস্টকে জানান, ডায়রিয়া আক্রান্ত হয়ে গেল এক সপ্তাহে ১১ জন মারা গেছে আর ২ শতাধিক ব্যক্তি বিভিন্ন পাড়ায় আক্রান্ত হয়েছে। তিনি আরও বলেন, সেনাবাহিনী বিভিন্ন পাড়ায় চিকিৎসাসেবা শুরু করার পর আক্রান্তের হার অনেকটাই কমে এসেছে।

বান্দরবান সেভেন ফিল্ড অ্যাম্বুলেন্সের ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক মেজর মো. সাইফুল ইসলাম সাইফ জানান, ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে মোট ১১ জন মারা গেছে। আশঙ্কাজনক ৩ জনকে হেলিকপ্টারে নিয়ে আসা হয়েছে। সদর হাসপাতালে তাদের চিকিৎসা দেওয়া হবে।

তিনি জানান, সেনাবাহিনী যে পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসরত সব ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর যেকোনো বিপদে তাদের সর্বাত্মক সহায়তা দিয়ে আসছে, এটি তারই একটি দৃষ্টান্তমূলক উদাহরণ। সেনাবাহিনী ভবিষ্যতেও এ এলাকার ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীসহ সব জাতি ও ধর্মের মানুষের যেকোনো প্রয়োজনে সর্বদা নিরলসভাবে কাজ করে যাবে।

প্রসঙ্গত, গত ১৫ মে জেলার থানচি উপজেলার মিয়ানমার সীমান্তের পাতওয়া ম্রো পাড়ায় ১৬টি পরিবারের মধ্যে ৯ থেকে ১০ পরিবারের সব সদস্য ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয় এবং সেখানে পাঠানো হয় মেডিকেল টিম। এরপর সেখানে ডায়রিয়া পরিস্থিতির উন্নতি হয়।

রিজভি রাহাত/এনএ