দখল-দূষণে হারিয়ে যাচ্ছে নীলফামারীর বামনডাঙ্গা নদী
নীলফামারী জেলা শহরের ঐতিহ্যবাহী বামনডাঙ্গা নদী দখল আর দূষণে আজ মরা খালে পরিণত হয়েছে। প্রায় শত বছরের ইতিহাস বহন করা এ নদী একসময় ছিল শহরের প্রাণ। এখন নদীর দুই তীরে গড়ে উঠেছে স্থাপনা, ভরাট হয়ে গেছে আবর্জনায়। পানির প্রবাহ বন্ধ হয়ে নদী হারাচ্ছে তার অস্তিত্ব।
জানা গেছে, বামনডাঙ্গা নদীকে ঘিরেই গড়ে উঠেছিল শাখামাছা বন্দর, যা পরে হয়ে ওঠে নীলফামারী শহরের কেন্দ্র। সেই নদীতে ভিড়ত পণ্যবাহী নৌকা। কথিত আছে, বেহুলা আর দেবী চৌধুরানীর নৌবহরও একসময় নোঙর করেছিল এখানে। কিন্তু দখলদার আর দূষণে খরস্রোতা নদী আজ আবর্জনার স্তূপে পরিণত হয়েছে।
বিজ্ঞাপন
সরেজমিনে দেখা যায়, নদীর দুই তীর দখল করে স্থাপনা নির্মাণ করা হয়েছে। শহরের বিভিন্ন এলাকা থেকে ময়লা-আবর্জনা ফেলে নদীর বুকে গড়ে উঠেছে বর্জ্যের স্তূপ। কোথাও কোথাও ভরাট হয়ে গেছে এতটাই যে বোঝার উপায় নেই এটি নদী।
শহরের বাসিন্দা রবিউল ইসলাম বলেন, ছোটবেলা থেকেই নদীটা দেখছি। তখনো পানির প্রবাহ ছিল, জেলেরা মাছ ধরত। এখন প্রভাবশালীরা দখল করেছে। প্রশাসন কোনো ব্যবস্থা নেয়নি বলেই নদী আজ এ অবস্থায়।
বিজ্ঞাপন
আরেক বাসিন্দা হালিম মিয়া বলেন, নদীটা এখন নালায় পরিণত হয়েছে। আশপাশের মানুষ ময়লা ফেলে, পৌরসভার বর্জ্যের গাড়িও এখানে এসে ফেলে।
শাহীপাড়া এলাকার বাসিন্দা আনারুল ইসলাম বলেন, দীর্ঘদিন ধরে এদিক দিয়ে যাতায়াত করি। এটা খালের মতো হয়ে আছে, বোঝাই যায় না যে নদী। শুনেছি একসময় এটি নদী ছিল। কিন্তু দখল আর আবর্জনায় এখন আর নদী নেই, মানুষের দখলের জায়গা হয়ে গেছে। প্রশাসন উদ্যোগ নিলে আবারও নদী হিসেবে তার পূর্বের গতি ফিরে পাবে।
মামুনুর রশিদ নামের আরেক বাসিন্দা জানান, বামনডাঙ্গা নদী নীলফামারীর ঐতিহ্য। দখল আর দূষণে সৌন্দর্য নষ্ট হয়েছে, পানির প্রবাহ বন্ধ হয়ে গেছে। দ্রুত খনন ও দখল উচ্ছেদ না করলে নদীকে আর বাঁচানো যাবে না।
এ বিষয়ে নীলফামারী পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আতিকুর রহমান বলেন, বামনডাঙ্গা নদী বর্তমানে রেকর্ডে নদী হিসেবে নেই। রেকর্ডটি সংশোধন করা জরুরি। পানি উন্নয়ন বোর্ড ও জেলা প্রশাসন মিলে নদীটিকে রেকর্ডভুক্ত করার কাজ করছে। রেকর্ডভুক্ত হলে আমরা দখল ও দূষণমুক্ত করব।
এআরবি