নাটোরে ১০ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাস করেনি কেউ
এ বছর এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষায় নাটোর জেলার ১০টি কলেজের একজন শিক্ষার্থীও পাস করতে পারেননি। বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) সকালে প্রকাশিত ফলাফলে এমন তথ্য জানা গেছে।
প্রকাশিত ফলাফলে দেখা যায়, জেলায় মাত্র একটি প্রতিষ্ঠানে শতভাগ পাস করেছে। বিপরীতে ১০টি কলেজে একজন শিক্ষার্থীও পাস করতে পারেননি।
বিজ্ঞাপন
শতভাগ অকৃতকার্য হওয়া প্রতিষ্ঠানগুলো হলো- নাটোর সদর উপজেলার আবুল খায়ের কলেজ, এম রুহুল কুদ্দুস তালুকদার কলেজ, ইয়াসিনপুর কলেজ, পীরগঞ্জ আদর্শ কলেজ, লালপুর উপজেলার পাইকপাড়া কলেজ, মাঝগ্রাম উচ্চ বিদ্যালয় অ্যান্ড কলেজ, বড়াইগ্রাম উপজেলার বড়াইগ্রাম মহিলা কলেজ, গুরুদাসপুর উপজেলার বৃ-কাশো কলেজ, নলডাঙ্গা উপজেলার সড়কুটিয়া স্কুল অ্যান্ড কলেজ এবং বাগাতিপাড়া উপজেলার তমালতলা মহিলা কলেজ।
অপরদিকে সিংড়া উপজেলার বিয়াম অ্যান্ড ল্যাবরেটরি স্কুল কলেজ থেকে ২ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিয়ে শতভাগ পাসের খেতাব অর্জন করেছে।
বিজ্ঞাপন
ফলাফল বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, চলতি বছর এইচএসসি পরীক্ষায় আবুল খায়ের কলেজ ও পাইকপাড়া কলেজ থেকে ৭ জন করে পরীক্ষার্থী অংশ নিয়ে শতভাগ অকৃতকার্য হয়েছে। এম রুহুল কুদ্দুস তালুকদার কলেজ ও ইয়াসিনপুর কলেজের তিনজন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ২ জন করে এবং পীরগঞ্জ আদর্শ কলেজ থেকে ২ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিলেও কেউ পাস করতে পারেনি। এছাড়া মাঝগ্রাম উচ্চ বিদ্যালয় অ্যান্ড কলেজ থেকে ৫ জন, বৃ-কাশো কলেজ থেকে ১৫ জন, সড়কুটিয়া স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে ১ জন, তমালতলা মহিলা কলেজের ২ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিয়ে শতভাগ অকৃতকার্য হয়েছেন। বড়াইগ্রাম মহিলা কলেজের ৭ জন পরীক্ষার্থী নিবন্ধিত থাকলেও তাদের কেউই পরীক্ষায় অংশ নেয়নি। ফলে, তারাও শতভাগ অকৃতকার্যের তালিকায় যুক্ত হয়েছেন।
ফলাফলে এমন ধস নামার কারণ জানতে চাইলে এসব প্রতিষ্ঠান প্রধানরা জানান, প্রতিষ্ঠানগুলোর বেশিরভাগেরই অবস্থান প্রত্যন্ত গ্রামীণ এলাকায়। এছাড়া প্রতিষ্ঠার দীর্ঘসময় পরেও এসব প্রতিষ্ঠানগুলো এখনো এমপিওভুক্ত হয়নি। ফলে, সব শিক্ষকরা প্রতিষ্ঠানে যেমন নিয়মিত আসেন না, তেমনি পাঠদানেও দেখা দিয়েছে অনাগ্রহ। এছাড়া শিক্ষার্থীরাও আর্থিকভাবে স্বচ্ছল না হওয়ায় বিভিন্ন কাজ করায় নিয়মিত ক্লাস করতে পারে না। যার প্রভাব ফলাফলে পড়েছে।
মাঝগ্রাম উচ্চ বিদ্যালয় অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ আজাদুল আলম বলেন, এরকম নেক্কারজনক ফলাফলে আমরা দুঃখিত। ছেলে-মেয়েরা আর্থিক প্রয়োজনে বিভিন্ন কাজ করায় নিয়মিত ক্লাস করতে পারে না। শিক্ষার্থীদের ক্লাসে আনতে আমরা বাড়ি বাড়ি পর্যন্ত গিয়েছি। তাতেও কাজ হয়নি। তাছাড়া, শিক্ষকদের বেতন না থাকায় তারাও সবাই নিয়মিত আসেন না। হয়তো একদিন তিনজন আসলে পরদিন আবার অন্য তিনজন আসেন।
এ বিষয়ে সহকারী জেলা শিক্ষা অফিসার সুভাষ কুমার মন্ডল বলেন, ফলাফল বিশ্লেষণ করে শতভাগ ফেল করা প্রতিষ্ঠানগুলোকে শোকজ করা হবে। উপযুক্ত জবাব দিতে না পারলে প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম বন্ধ করা হবে।
আশিকুর রহমান/আরকে