বাগেরহাটের মোংলা উপজেলার সুন্দরবন সংলগ্ন লোকালয়ের একটি খালে কুমিরের মরদেহ ভাসতে দেখেছেন স্থানীয়রা। রোববার (১৯ অক্টোবর) সকালে জোয়ারের সময় মোংলা নদীর শাখা খাল নারকেলতলার স্লুইচ গেটের কাছে মৃত কুমিরটিকে ভাসতে দেখা যায়। তবে বিকেল থেকে কুমিরটিকে আর সেখানে দেখা যাচ্ছে না। কুমিরটি বেশ বড়। কুমিরের একটি পা নেই। গলায় দড়ি দেওয়া ছিল বলে জানান স্থানীয়রা।

প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে স্থানীয় পরিবেশকর্মী মো. হাছিব সরদার বলেন, কুমিরটি জোয়ারের পানিতে ভেসে আসে। আমরা দেখি এটি উল্টো হয়ে আছে, শরীরের একটি পা বিচ্ছিন্ন এবং গলা ও সামনের দুই পায়ে রশি বাঁধা। এটি বেঁধে মেরে ফেলছে, না কি জালের রশিতে বাঁধা পড়েছিল, না কীভাবে মারা গেল তা তদন্ত হওয়া দরকার।

স্থানীয় হাছিব সরদার বলেন, সকালে মৃত কুমিরটি দেখতে নারকেলতলা স্লুইচ গেটে ভিড় পড়ে যায়। বিশেষ করে প্রচুর স্কুল শিক্ষার্থী এসেছিল সেখানে। তবে বিকেলে ভাটা শুরু হওয়ার পর কুমিরটিকে আর সেখানে দেখা যাচ্ছে না। ভেসে অন্য কোথাও চলে গেছে।

স্থানীয়দের ধারণা, কুমিরটি সুন্দরবনের। নদীতে চলাচলকারী নৌযান বা বাণিজ্যিক জাহাজের ধাক্কা কিংবা প্রপেলারের আঘাতে কুমিরটির মৃত্যু হতে পারে। আবার কারও মতে গলায় রশি বাঁধা থাকায় কুমিরটিকে হত্যা করা হয়ে থাকতে পারে।

সম্প্রতি সুন্দরবনে কাঁকড়া ধরতে গিয়ে কুমিরের আক্রমণে এক জেলের মৃত্যু হয়েছে। বাগেরহাটের মোংলা উপজেলার বুড়িরডাঙ্গা গ্রামেও গত বেশ কিছু দিন ধরে কুমির আতঙ্ক বিরাজ করছে। সেখানের পুকুর ও মৎস্য ঘেরও বিগত কিছুদিন ধরে একটি মোটামুটি বড় কুমির দেখা গিয়েছে।

এদিকে কুমিরের মরদেহ ভাসছে— এমন খবর পেয়ে সুন্দরবনের করমজল বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হাওলাদার আজাদ কবির ঘটনাস্থলে যান। তবে বিকেলে সেখানে গিয়ে বন বিভাগের কর্মীরা প্রাণীটির মরদেহ আর দেখতে পাননি।

হাওলাদার আজাদ কবির বলেন, আমরা খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে এসেছি। স্থানীয়দের কাছ থেকে জেনেছি, জোয়ারের সময় কুমিরটি দেখা গিয়েছিল, এখন আর নেই। হয়তো ভাটির দিকে স্রোতে ভেসে গেছে। আমরা কুমিরটির খোঁজ করছি। আশাপাশে নদীতে তল্লাশি চালানো হচ্ছে।

তবে কুমিরটি কীভাবে মারা গেল, নাকি হত্যা করা হয়েছে -সে বিষয়ে কোনো তথ্য দিতে পারেননি এই কর্মকর্তা।

শেখ আবু  তালেব/আরএআর