সিরাজগঞ্জের কামারখন্দ উপজেলার কর্ণসূতি গ্রামের সেই কিশোরীকে ধর্ষণের ঘটনায় ৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

রোববার (১৯ অক্টোবর) মেয়েটিকে ধর্ষণ করা হলেও মামলা করা হয় সোমবার (২০ অক্টোবর) দুপুরে। পুলিশ মামলার বিষয়ে রাতে জানালেও এদিন মামলার এজাহারের বিষয়ে জানায়নি। এরপর মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) বিস্তারিত জানায়।

আসামিরা হলেন- নাইম হোসেন (২০), ইমরান (২১), আকাশ (২২), আতিক (২৩), নাসিম উদ্দিন (২০) ও নাজমুল হক নয়ন (২০)।

এর মধ্যে গ্রেপ্তারকৃত তিনজন হলেন- উপজেলার জামতৈল গ্রামের আলমের ছেলে আকাশ (২১), নান্নু সরকারের ছেলে আতিক (২৩) এবং কর্ণসূতি গ্রামের জাহাঙ্গীর প্রামাণিকের ছেলে নাজমুল হক নয়ন (২০)। সোমবার জামতৈল বাজার এলাকা থেকে আকাশ ও আতিককে এবং পরে নাজমুল হক নয়নকে নিজ বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। তবে মামলার প্রধান আসামি নাইম হোসেনসহ (২০) আরও দুইজন পলাতক রয়েছেন।

মামলার এজাহারের বর্ণনা দিয়ে কামারখন্দ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. লতিফ ঢাকা পোস্টকে বলেন, মাদরাসা থেকে ফেরার পথে কিশোরীকে সিএনজিচালিত অটোরিকশায় করে একটি রেস্টুরেন্টে তুলে এনে ধর্ষণ করা হয়। এই মামলার ৬ জন আসামির মধ্যে তিনজনকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, চর কামারখন্দ গ্রামের নাইম হোসেন কিশোরীকে ধর্ষণ করে। নির্যাতনের সময় কিশোরীর চিৎকার যেন বাইরে না যায় সেজন্য উচ্চস্বরে গান বাজায় ওই যুবকের বন্ধুরা। তার বন্ধুরা পাহারা দিচ্ছিল। জোর করে শারীরিক সম্পর্কের কারণে কিশোরীর বিশেষ অঙ্গ ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং সে জ্ঞান হারায়। এরপর অভিযুক্ত যুবক ও তার বন্ধুরা মিলে কিশোরীকে সিরাজগঞ্জ কমিউনিটি হাসপাতালে রেখে পালিয়ে যায়। খবর পেয়ে পরিবার ছুটে যেয়ে কিশোরীকে শহীদ এম. মনসুর আলী হাসপাতালে ভর্তি করে।

তবে ঘটনার শুরুতে ধর্ষণের বিষয়ে মুখ খুলতে রাজি ছিল না ভুক্তভোগী কিশোরীর পরিবার। এমনকি সোমবার (২০ অক্টোবর) দুপুরে মামলা হলেও মামলার বিষয়টি গোপন রাখে থানা পুলিশ। এরপর বিকেলে ‘কামারখন্দে ধর্ষণের শিকার কিশোরীর অস্ত্রোপচার সম্পন্ন’ শিরোনামে সোমবার (২০ অক্টোবর) সংবাদ প্রকাশ করে ঢাকা পোস্ট। সংবাদটি মুহূর্তে জেলাজুড়ে ভাইরাল হয়। এরপর রাতেই সিরাজগঞ্জের কামারখন্দ থানা পুলিশ জানায়, ১৪ বছরের কিশোরী ধর্ষণের ঘটনায় দুপুরেই মামলা রেকর্ড করা হয়েছে। তদন্তের স্বার্থে গোপন রাখা হয়েছিল। 

উল্লেখ্য, গত রোববার বেলা সাড়ে ১০টার দিকে কর্ণসূতি গ্রামের এক কিশোরীকে অটোরিকশায় তুলে নিয়ে উপজেলার জামতৈল সেন্ট্রাল পার্ক সংলগ্ন ‘ডেরা ফাস্ট ফুড অ্যান্ড চাইনিজ রেস্টুরেন্টে’ ধর্ষণ করা হয়। 

নাজমুল হাসান/আরকে