প্রবাসে ৯ বছর কাটিয়েও সাফল্যের দেখা পাননি আব্দুল আউয়াল খান ডালিম। দেশে ফিরে স্বপ্ন দেখেছিলেন নিজ উদ্যোগে কিছু করার। বেসরকারি একটি হাসপাতালে মার্কেটিং বিভাগে স্বল্প বেতনের চাকরির পাশাপাশি শুরু করেছিলেন মাছ চাষ। কিন্তু সেই মাছই একদিন তার জীবনের সবচেয়ে বড় হতাশার কারণ হয়ে দাঁড়াল।

আব্দুল আউয়াল খান ডালিম নোয়াখালীর সেনবাগ উপজেলার অর্জুনতলা ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের নাজিরনগর গ্রামের খান বাড়ির মৃত আব্দুল হালিম খানের ছেলে।

ঘটনার পর স্থানীয়রা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তাদের ভাষায়, এ ধরনের ন্যাক্কারজনক ঘটনায় শুধু একজন মাছচাষিই নয়, পুরো এলাকার মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তারা প্রশাসনের কাছে দ্রুত তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের গ্রেপ্তার ও শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।

জানা গেছে, দীর্ঘ পরিশ্রমে ডালিম নিজের জমির ১৩ শতাংশ জায়গায় একটি ঘের তৈরি করে প্রায় সাত হাজার তেলাপিয়া মাছ ছাড়েন। পরিকল্পনা ছিল, মাছগুলো কিছুটা বড় হলে পাশের ১৪০ শতাংশের বড় পুকুরে স্থানান্তর করবেন। বড় পুকুরের সব প্রস্তুতিও শেষ ছিল। কিন্তু এক রাতেই সেই স্বপ্ন ভেসে গেল পানিতে।

স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, রহস্যজনকভাবে এক রাতে ডালিমের ঘেরের সব মাছ মরে যায়। সকালে উঠে তিনি দেখেন, পানির উপর ভেসে আছে শত শত মৃত তেলাপিয়া। প্রায় দুই লাখ টাকার ক্ষতিতে তিনি ভেঙে পড়েছেন।

সরেজমিনে দেখা গেছে, ঘেরের চারপাশে ছড়িয়ে আছে মৃত মাছের স্তূপ। দুর্গন্ধে পুরো এলাকাজুড়ে মানুষ নাক চেপে চলাফেরা করছে। হতাশ ডালিম জাল দিয়ে মাছগুলো তুলে গর্ত করে পুঁতে ফেলছেন।

আব্দুল আউয়াল খান ডালিম ঢাকা পোস্টকে বলেন, বৃহস্পতিবার রাতে আমার পুকুরে বিষ প্রয়োগ করা হয়েছে। আমি চিকিৎসকের পরামর্শে মাছগুলোকে বাঁচাতে অক্সিজেন দেওয়ার চেষ্টা করি, কিন্তু শুক্রবার সকালে সব মাছ মরে ভেসে ওঠে। রাখার উপায় না থাকায় আজ নিজ হাতে মাটিচাপা দিয়েছি। কে বা কারা এটা করেছে, আমি জানি না। আমার কারও সঙ্গে শত্রুতা নেই।

তিনি আরও বলেন, আমার বাবা সেনাবাহিনীতে ছিলেন, তিনি মারা গেছেন। আমি নয় বছর বিদেশে থেকেও কিছু করতে পারিনি। দেশে ফিরে চাকরির পাশাপাশি নিজের উদ্যোগে কিছু করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু এক রাতে সব শেষ হয়ে গেল। জানি না কে বা কারা এমনটা করল!

এ বিষয়ে সেনবাগ উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) শিরীন আক্তার ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিষয়টি দেখেছি। উদ্যোক্তাকে আইনি সহায়তার জন্য থানায় সাধারণ ডায়েরি করতে বলেছি। এরপর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

হাসিব আল আমিন/এআরবি