জয়পুরহাটে অটোচালক ও বাস শ্রমিকদের মধ্যে সংঘর্ষ
জয়পুরহাটে যাত্রী তোলাকে কেন্দ্র করে ব্যাটারিচালিত অটোচালক ও বাস শ্রমিকদের মধ্যে বাগবিতণ্ডা ও ধাক্কাধাক্কির ঘটনা ঘটেছে। ঘটনার পর বিক্ষুব্ধ বাস শ্রমিকরা শহরের পাঁচুর মোড়ে সড়কে বাস আড়াআড়ি করে রেখে ব্যারিকেড দেন। এতে প্রায় এক ঘণ্টা যান চলাচল বন্ধ থাকে এবং শহরের প্রধান সড়কে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। পরে থানা পুলিশ ও ট্রাফিক পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে।
সোমবার (২৭ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে জয়পুরহাট-হিলি সড়কের কেন্দ্রীয় শিব মন্দির মোড়ে দুই পক্ষের মধ্যে কথা কাটাকাটি শুরু হয়, যা একপর্যায়ে ধাক্কাধাক্কিতে রূপ নেয়। পরে সকাল ১০টা থেকে এক ঘণ্টা পর্যন্ত সড়কে ব্যারিকেডে দেওয়ার ঘটনা ঘটে।
বিজ্ঞাপন
বাস, অটো শ্রমিক ও প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, জয়পুরহাট-হিলি সড়কের কেন্দ্রীয় শিব মন্দির মোড়ে পাঁচবিবি রুটের অটোস্ট্যান্ড রয়েছে। সেখান থেকেই ওই রুটে অটোতে যাত্রী ওঠানামা করা হয়। সোমবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে মায়ের দোয়া পরিবহন নামে একটি হিলিগামী বাসে অটোর এক যাত্রী ওঠে। এ নিয়ে অটোচালক ও ওই বাসের চালক-শ্রমিকদের মধ্যে বাকবিতণ্ডা হয় এবং একপর্যায়ে দুই পক্ষ চড়াও হয়।
বিজ্ঞাপন
এ সময় হিলি থেকে আসা রেখা পরিবহনের একটি বাস সেখানে এসে দাঁড়ায়। তখন দুই পক্ষের মধ্যে ধস্তাধস্তি ঘটে। এরপর ক্ষুব্ধ বাস শ্রমিকরা শহরের পাঁচুর মোড় ও হিলি সড়কে বাস আড়াআড়ি করে রেখে ব্যারিকেড দেয়। এতে প্রধান সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। খবর পেয়ে জয়পুরহাট থানা পুলিশ, ট্রাফিক পুলিশ, বাস শ্রমিক ও বাস মালিক সমিতির নেতারা ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন এবং বাস শ্রমিকদের বুঝিয়ে সড়ক থেকে সরিয়ে দেন। প্রায় এক ঘণ্টা পর সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়। দুপুরে জেলা মোটর শ্রমিক ইউনিয়ন কার্যালয়ে থানা পুলিশের ওসি, বাস মালিক ও মোটর শ্রমিকদের সঙ্গে বৈঠক হয়। বৈঠকে বাস শ্রমিকরা তাদের সমস্যার কথা তুলে ধরেন এবং থানা পুলিশের ওসি সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দেন।
জয়পুরহাট অটো শ্রমিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মনির হোসেন ভূঁইয়া বলেন, অটোস্ট্যান্ডে এসে বাস থামিয়ে অটোর যাত্রী নামিয়ে নেওয়া হয়। আজও অটোর এক যাত্রীকে নামিয়ে বাসে তোলা হয়েছে। এ নিয়ে অটোচালকদের সঙ্গে বাস শ্রমিকদের বাকবিতণ্ডা হয়েছে। এখনও কিছু বাস শ্রমিকের মধ্যে আওয়ামী লীগের দোসর রয়েছে, যারা শহরে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করছে।
জেলা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক উম্মত আলী হিম্মত বলেন, অটো অবৈধ যানবাহন। তারা শহরের যত্রতত্র যাত্রী ওঠানামা করে, এতে সড়কে বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়। ইজিবাইক চালকেরা যাত্রীদের বাসে উঠতে বাধা দেয় এবং আমাদের শ্রমিকদের মারধর করেছে। এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ শ্রমিকেরা বাস দিয়ে সড়কে ব্যারিকেড দিয়েছিল। পুলিশের সঙ্গে আমাদের বৈঠক হয়েছে, তারা সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিয়েছে। এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক।
জয়পুরহাট থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. তামবিরুল ইসলাম বলেন, অটোচালক ও বাস শ্রমিকদের দ্বন্দ্বের জেরে বাস শ্রমিকরা সড়কে ব্যারিকেড দিয়েছিল। আমরা গিয়ে শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে পরিস্থিতি শান্ত করি। পরে দুপুরে মোটর শ্রমিক ইউনিয়ন কার্যালয়ে বাস শ্রমিকদের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। তারা দাবি করেছে, অটো যেন যত্রতত্র যাত্রী না তোলে এবং বাসও যেন একইভাবে যাত্রী না তোলে। সমস্যাগুলোর সমাধানে আমরা কাজ করছি।
চম্পক কুমার/এআরবি