জয়পুরহাট রেলওয়ে স্টেশনে ট্রেনের এক যাত্রী আব্দুর রাজ্জাক আকন্দকে হেনস্থা করার অভিযোগ উঠেছে হেড বুকিং সহকারী মনিরুল করিম মুনের বিরুদ্ধে। বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) দুপুর ১২টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ওই যাত্রী রেলওয়ের পশ্চিমাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপকের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন।

প্রত্যক্ষদর্শী ও স্টেশন সূত্রে জানা গেছে, আব্দুর রাজ্জাক পাবনার ঈশ্বরদী যাওয়ার জন্য দ্রুতযান এক্সপ্রেস ট্রেনের টিকিট কাটতে জয়পুরহাট স্টেশনের কাউন্টারে যান। তিনি লাইনে দাঁড়িয়ে ২০০ টাকা দিয়ে টিকিট নিতে চান। কিন্তু কাউন্টার থেকে তাকে জানানো হয়, টিকিটের দাম ১৩৫ টাকা, তাই খুচরা ৬৫ টাকা দিতে হবে। যাত্রী খুচরা টাকা দিতে না পারায় হেড বুকিং সহকারী মনিরুল করিম তাকে খুচরা আনতে বলেন। এ নিয়ে দুজনের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে মনিরুল করিম কাউন্টার থেকে বের হয়ে এসে যাত্রী আব্দুর রাজ্জাককে ধাক্কা দেন। পরে দুজনের মধ্যে ধাক্কাধাক্কি হয়। এরপর মনিরুল করিম ওই যাত্রীকে টেনে-হেঁচড়ে কাউন্টার কক্ষের ভেতরে নিয়ে যান। এ সময় যাত্রীর শার্ট ছিঁড়ে যায়। পরে স্টেশন মাস্টার নিজ কক্ষে দুজনকে নিয়ে বসে বিষয়টি মীমাংসা করেন।

যাত্রীর লিখিত অভিযোগে বলা হয়েছে, জয়পুরহাট স্টেশন থেকে ঈশ্বরদীর উদ্দেশে দ্রুতযান ট্রেনে যাওয়ার আগে টিকিট নেওয়ার সময় বুকিং সহকারী মনিরুল করিম ওরফে মুন তাকে জোর করে কাউন্টারের ভেতরে নিয়ে গিয়ে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেন এবং তার পরিধেয় বস্ত্র ছিঁড়ে ফেলেন। এ ঘটনায় তার সঙ্গে থাকা ট্রাভেল ব্যাগ ও পকেটে থাকা ৩০ হাজার টাকা হারিয়ে যায়। অভিযোগে আরও বলা হয়েছে, ঘটনাস্থলে উপস্থিত সাংবাদিকরা ভিডিও ধারণ করেছেন, যা প্রমাণ হিসেবে উপস্থাপন করা হবে। তিনি আরও উল্লেখ করেন, মুন সবসময় যাত্রীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন, টিকিটের টাকা বেশি নেন এবং টিকিটের কালোবাজারির সঙ্গে জড়িত।

ট্রেনযাত্রী আব্দুর রাজ্জাক আকন্দ বলেন, আমি একজন সাধারণ যাত্রী। খুচরা টাকা না থাকায় আমাকে লাঞ্ছিত করা হয়েছে। আমি দ্রুতযান ট্রেনে আর যেতে পারিনি। এ ঘটনায় বুকিং সহকারীর শাস্তি দাবি করছি।

হেড বুকিং সহকারী মনিরুল করিম মুন বলেন, আমি কাউকে টেনে নিয়ে আসিনি, এমন সুযোগও নেই। টিকিটের দাম ১৩৫ টাকা, তিনি ২০০ টাকা দিচ্ছিলেন, কিন্তু তখন কাউন্টারে খুচরা ছিল না। তাই আমি তাকে একটু পাশে দাঁড়াতে বলি, যেন অন্য যাত্রীদের থেকে খুচরা এনে দিতে পারি। কিন্তু তিনি জোর করে দাবি করেন, এখনই খুচরা দিতে হবে, না হলে সরব না। এ নিয়েই অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটে।

জানতে চাইলে জয়পুরহাট স্টেশন মাস্টার রফিক চৌধুরী বলেন, বুকিং সহকারী মনিরুল করিম মুন যা করেছে, তা ঠিক হয়নি। আমি যাত্রীর কাছে ক্ষমা চেয়েছি।

বাংলাদেশ রেলওয়ের পশ্চিমাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক ফরিদ আহমেদ বলেন, বুকিং সহকারীর বিরুদ্ধে যাত্রী হেনস্থার একটি অভিযোগপত্র পেয়েছি। বিষয়টি তদন্তের জন্য সংশ্লিষ্ট বিভাগে পাঠানো হয়েছে।

চম্পক কুমার/এআরবি