শরীয়তপুরের গোসাইরহাটে প্রতিপক্ষের বাধা ও টিনের বেড়া দিয়ে দীর্ঘদিনের চলাচলের পথ বন্ধ করে দেওয়ায় পাঁচটি পরিবার প্রায় এক সপ্তাহ ধরে অবরুদ্ধ অবস্থায় রয়েছেন। এতে বয়স্ক, নারী ও শিশুদের চলাচলে চরম ভোগান্তি তৈরি হয়েছে। এমনকি তারা পাশের মসজিদেও নামাজ পড়তে যেতে পারছেন না।

সোমবার (১০ নভেম্বর) শরীয়তপুরের গোসাইরহাট উপজেলার নাগেরপাড়া ইউনিয়নের পখমসার গ্রামে গিয়ে এমন চিত্র দেখা গেছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, চলাচলের মূল পথটি স্থানীয় স্বপন খান নামের এক ব্যক্তি টিনের বেড়া দিয়ে সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করে দিয়েছেন। এতে আ. হান্নান, শওকত হোসেন দুলালসহ পাঁচটি পরিবারের চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে।

ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুর রহমানের ছেলে স্বপন খান ১৯৬০ সাল থেকে ব্যবহার হয়ে আসা ওই রাস্তাটি দখল করে টিনের বেড়া দিয়েছেন। ফলে ওই পাঁচ পরিবার এখন বিকল্প পথে আধা কিলোমিটার ঘুরে যাতায়াত করতে বাধ্য হচ্ছেন। এতে বিশেষ করে বয়স্ক ও শিশুদের কষ্ট সবচেয়ে বেশি হচ্ছে।

অবরুদ্ধ পরিবারের সদস্য মো. ফয়সাল হোসেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমরা প্রায় ৬০ বছর ধরে এই রাস্তাটিই ব্যবহার করে আসছি। হঠাৎ করে স্বপন খান টিনের বেড়া দিয়ে পথ বন্ধ করে দিয়েছেন। এখন মসজিদ, স্কুল, বাজার সব জায়গায় যেতে আমাদের আধা কিলোমিটার ঘুরতে হয়। এটা নিঃসন্দেহে আমাদের প্রতি অন্যায়।

স্থানীয়রা জানান, বিষয়টি নিয়ে একাধিকবার গ্রাম্যভাবে সমাধানের চেষ্টা করা হলেও কোনো ফল পাওয়া যায়নি। তারা প্রশাসনের দ্রুত হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন, যাতে অবরুদ্ধ পরিবারগুলোর চলাচলের পথ খুলে দেওয়া হয়।

ওমর খালেদ নামে আরেক ভুক্তভোগী ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমাদের পরিবার বহু আগেই এখানে বসবাস শুরু করে। আমাদের প্রতিবেশী হিন্দু পরিবার থেকে আমার বাবা চলাচলের জন্য জায়গা কিনতে চেয়েছিলেন। তখন স্বপন খানের বাবা বলেন, চলাচলের জায়গা নিয়ে কোনো অসুবিধা হবে না। পরে আমরা জায়গাটি ক্রয় করি। আমরা মুক্তিযুদ্ধের আগেও এই পথে চলাচল করেছি। কিন্তু এখন এক সপ্তাহ ধরে আমাদের অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছে। আমরা প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।

অভিযোগের বিষয়ে স্বপন খান ঢাকা পোস্টকে বলেন, ওটা আমাদের মসজিদের জায়গা। এতদিন ওই জায়গাটা আমার কাজে লাগেনি, তাই তারা চলাচল করেছে। এখন আমি ওই জায়গায় কাজ করব, তাই পথ বন্ধ করে দিয়েছি।

এ বিষয়ে গোসাইরহাট থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ বোরহান উদ্দিন ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমি বিষয়টি মাত্র জেনেছি। তবে এখনো কোনো অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

নয়ন দাস/এআরবি