প্রতারণার অভিযোগে সাবেক অতিরিক্ত ডিআইজি কারাগারে
ফ্ল্যাট দেওয়ার প্রতিশ্রুতির মাধ্যমে প্রতারণা ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে পুলিশের সাবেক অতিরিক্ত উপমহাপরিদর্শক (অতিরিক্ত ডিআইজি) মো. হামিদুল আলম মিলনকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। সোমবার (১৭ নভেম্বর) বগুড়ার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-২ এ হাজির হয়ে তিনি জামিন চাইলে বিচারক মেহেদী হাসান সেই আবেদন নাকচ করে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। একই আদেশে তার স্ত্রী শাহাজাদী আলমের বিরুদ্ধেও গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে।
বগুড়া কোর্ট পুলিশের পরিদর্শক শহিদুল ইসলাম জানান, বিচারকের নির্দেশে সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা হামিদুল হক মিলনকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। প্রতারণার একটি মামলায় তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।
বিজ্ঞাপন
মামলা সূত্রে জানা যায়, হামিদুল আলম মিলন ও তার স্ত্রীকে আসামি করে প্রতারণা, অর্থ আত্মসাৎ এবং একে অপরকে সহযোগিতার অভিযোগে মামলা (নং ২১৭৩/২৫; দণ্ডবিধির ৪০৬/৪২০/১০৯ ধারায়) দায়ের করা হয়েছিল। বাদী জাহেদুর রহমান তোফা আপিল করলে আদালত মামলাটি গ্রহণ করে শুনানি শেষে আদেশ দেন।
অভিযোগে আরও বলা হয়েছে, ভূমি মালিকের দেওয়া পুরোনো আমমোক্তারনামা বাতিল করে মেধা এন্টারপ্রাইজ নামে মিলনের প্রতিষ্ঠানের পক্ষে নতুন আমমোক্তারনামা (দলিল নং ৩২৯৭) ইস্যু করা হয়। ওই দলিল অনুযায়ী- নালিশি জমিতে মেধা শাহ ক্যাসেল নামে একটি বহুতল ভবন নির্মাণের দায়িত্ব নেন মিলন। নির্মাণ চলাকালীন সময়ের মূল্য অনুযায়ী প্রকল্প সম্পর্কিত এক সাক্ষীকে (বাদীর শ্যালক, যিনি একাধিক শিল্প কারখানার মালিক) নির্দিষ্ট ফ্ল্যাট দেওয়ার প্রতিশ্রুতিও দেওয়া হয়েছিল।
বিজ্ঞাপন
বাদীপক্ষের দাবি- সকাল ১০টার দিকে ওই সাক্ষীর অফিসে কয়েকজনের উপস্থিতিতে প্রতি বর্গফুট ১৫০০ টাকায় ফ্ল্যাট হস্তান্তরের বিষয়ে মিলন লিখিত চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন এবং ঘটনাস্থলেই এক লাখ টাকা নেন। তবে তার স্ত্রী শাহাজাদী আলমকে চুক্তিতে সাক্ষী হিসেবে স্বাক্ষরের অনুরোধ করা হলে তিনি তা করতে অস্বীকৃতি জানান। পরে প্রতিশ্রুত ফ্ল্যাট হস্তান্তর না করে টাকা নিয়ে প্রতারণা করা হয়েছে বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।
হামিদুল আলম মিলন সারিয়াকান্দির বাসিন্দা। দীর্ঘ সময় পুলিশ বিভাগের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে থাকলেও তার কর্মজীবন নানা বিতর্কে জড়ানো ছিল। শেষ পর্যন্ত ২০২৫ সালের সেপ্টেম্বরে রাষ্ট্রপতির আদেশে তাকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়। তার আগে ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে অসুস্থতার কথা বলে তিনি ছুটিতে থাকলেও বগুড়া-১ (সারিয়াকান্দি–সোনাতলা) আসনে তার স্ত্রীর নির্বাচনী প্রচারে সক্রিয়ভাবে অংশ নেওয়ার অভিযোগ ওঠে। পুলিশ সদর দপ্তরের তদন্তে বিষয়টি প্রমাণিত হলে ব্যবস্থার অংশ হিসেবে তাকে অবসর দেওয়া হয়।
আরএআর