দোকান-সংসার চালাইতে পারলাম না, তাই দুনিয়া ত্যাগ করলাম চিরকুটে এমন কথা লিখে নিখোঁজ হয়েছিলেন জিয়াউর রহমান (৪৬) নামের এক ব্যবসায়ী। পরে রেলওয়ে পুলিশ ট্রেনে কাটা পড়া অবস্থায় তার মরদেহ উদ্ধার করে। গত মঙ্গলবার (১৮ নভেম্বর) দুপুরে চিরকুট লিখে রেখে নিখোঁজ হন পাবনার ভাঙ্গুড়া পৌরসদরের সেঞ্চুরি টেইলার্সের মালিক জিয়াউর রহমান।

ওই দিন সন্ধ্যার পর তিনি পাবনা-রাজশাহী রেললাইনের আটঘরিয়া উপজেলার মাঝপাড়া রেলওয়ে ট্র্যাকের ৯ নম্বর ব্রিজ এলাকায় ট্রেনে কাটা পড়েন। নিহত জিয়াউর ভাঙ্গুড়া পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের উত্তর সারুটিয়া ওয়াবদা এলাকার মৃত শাহজাহান আলীর ছেলে।

তার চাচাতো ভাই জাকারিয়া হোসেন বলেন, জিয়াউর রহমান দুই সন্তানের বাবা। কয়েক বছর আগে তিনি ব্রেন স্ট্রোক করেন। এর আগেও তিনি নিখোঁজের মতো এমন কাজ করেছেন। তবে এবার তিনি যেসব জায়গায় যেতে পারেন, এমন সম্ভাব্য সবখানেই খোঁজ করা হয়েছে। কিন্তু তাকে পাওয়া যায়নি। শেষ পর্যন্ত ভাঙ্গুড়া থানায় একটি নিখোঁজ জিডি করা হয়। পরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তার দুর্ঘটনার খবর জানতে পারি।

নিহতের ছোট ছেলে ইজাজ হোসেন বলেন, আমি বাসা থেকে খাবার নিয়ে দোকানে গিয়ে শুনি, বাবা দোকানে নেই। কাউকে কিছু না জানিয়েই বের হয়ে গেছেন। তখন পাশের একটি টেবিলে একটি চিরকুট পাওয়া যায়। মনে হয় যাওয়ার সময় বাবা এটি লিখে রেখে গেছেন।

চিরকুটে লেখা ছিল- দোকান সংসার চালাইতে পারলাম না, তাই দুনিয়া ত্যাগ করিলাম, কেউ দায়ী নয়। শেষে তিনি নিজের নাম জিয়াউর রহমান এবং ১৯/১১/২০২৫ ইং তারিখ লিখে গেছেন।

নিখোঁজ জিয়াউর রহমানের বিষয়ে থানায় সাধারণ ডায়েরি হওয়া সম্পর্কে ভাঙ্গুড়া থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম বলেন, সেঞ্চুরি টেইলার্সের মালিক জিয়াউর রহমানের মানসিক সমস্যা ছিল। এর আগেও তিনি বেশ কয়েকবার নিখোঁজ হয়েছিলেন। যেহেতু তিনি ট্রেনে কাটা পড়ে মারা গেছেন, তাই বিষয়টি রেলওয়ে পুলিশ দেখবে।

এ বিষয়ে সিরাজগঞ্জ রেলওয়ে থানা পুলিশের (জিআরপি) ওসি দুলাল উদ্দিন বলেন, বুধবার সন্ধ্যায় ওই ব্যক্তি রেললাইনের ওপর দিয়ে হাঁটছিলেন। এ সময় পিছন দিক থেকে ট্রেন আসলে তিনি কাটা পড়েন। এতে তার মাথায় গুরুতর আঘাত লাগে এবং পা কেটে যায়। ময়নাতদন্ত শেষে লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।

রাকিব হাসনাত/এআরবি