প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার বলেছেন, ফারাক্কা নামের একটা বাঁধ আমাদের নদীগুলোকে হত্যা করেছে। আমাদের নদীগুলোকে শেষ করে দিয়েছে। আমাদের জীববৈচিত্র্য, কৃষি এখন হুমকির মুখে। 

শনিবার (২২ নভেম্বর) দুপুরে রাজবাড়ী কনভেনশন সেন্টারে ‘পদ্মা ব্যারাজ ও দ্বিতীয় পদ্মা সেতু নির্মাণ এবং বাংলাদেশের সম্ভাবনা’ ও ‘কেমন রাজবাড়ী চাই, আলোকিত রাজবাড়ী’ বিষয়ক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

মনির হায়দার বলেন, ১৯৭৬ সালের ১৬ মে ফারাক্কা অভিমুখে লংমার্চ হয়েছিল। আমাদের এই ফারাক্কার ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়ার জন্য, এই ক্ষতি থেকে নিজেদেরকে রক্ষা করার জন্য বিকল্প পদক্ষেপ লাগবে। সেই বিকল্প পদক্ষেপ হচ্ছে রাজবাড়ীর পাংশার হাবাসপুরে পদ্মা ব্যারাজ। আমরা অচিরেই এই অঞ্চলের নেতা আলী নেওয়াজ মাহমুদ খৈয়মের নেতৃত্বে হাবাসপুর অভিমুখে লংমার্চ করবো। ফারাক্কা লংমার্চের বহু বছর পর আমরা এমন এক লংমার্চ করবো যেখানে সমগ্র অঞ্চলের লাখো মানুষ থাকবে। এই লংমার্চের মাধ্যমে আমরা রাষ্ট্রকে বাধ্য করবো আমাদের এই মহাবিপদ পানির সমস্যার হাত থেকে রক্ষা করতে।

তিনি আরও বলেন, আমাদের প্রধান উপদেষ্টার সাথে আমরা পদ্মা ব্যারাজ ও দ্বিতীয় পদ্মা সেতুর বিষয়ে কথা বলেছি। আপনাদের আশ্বস্ত হবার জন্যে বলছি, প্রধান উপদেষ্টা মহোদয় এ বিষয়ে অত্যান্ত আগ্রহ দেখিয়েছেন। আমরা সবাই জানি আগামীর যুদ্ধ হবে পানি নিয়ে, এটা গবেষণা বলছে। পানি আগামীতে সংকটের বিষয় হবে। মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা খ্যাতিমান একজন মানুষ। তিনি মানুষের সমস্যা ও সংকট নিয়ে কাজ করেছেন গোটা জীবন। তিনি বলেছেন- তার কাছে এই প্রকল্পের ও এই ব্যারাজের গুরুত্ব অপরিসীম। যেহেতু মাননীয় প্রধান উপদেষ্টার এই উপলব্ধি করেছেন,সেহেতু আমরা আশা করছি তিনি যতদিন এই দায়িত্বে আছেন এই প্রকল্প গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতির ধাপে চলে যাবে। 

সেমিনারে পদ্মা ব্যারাজ ও দ্বিতীয় পদ্মা সেতু বাস্তবায়ন জাতীয় কমিটি রাজবাড়ী জেলা শাখার সভাপতি অধ্যাপক (অবঃ) সালাম তাসিরের সভাপতিত্বে অতিথি হিসেবে পদ্মা ব্যারাজ ও দ্বিতীয় পদ্মা সেতু বাস্তবায়ন জাতীয় কমিটির সভাপতি, সাবেক সংসদ সদস্য এবং বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আলী নেওয়াজ মাহমুদ খৈয়ম, কমিটির উপদেষ্টা ও ওয়ার্কিং কমিটির সদস্য লেফটেন্যান্ট জেনারেল এস এম মতিউর রহমান (অব.), সাবেক রাষ্ট্রদূত ও পদ্মা ব্যারাজ ও দ্বিতীয় পদ্মা সেতু বাস্তবায়ন জাতীয় কমিটির সদস্য খোন্দকার আব্দুস সাত্তার, জাতীয় কমিটির মহাসচিব ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবু ওহাব মোঃ হাফিজুল হক (অব.), কমিটির সদস্য ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ মোহসীন (অব.), জাতীয় কমিটির প্রধান সমন্বয়ক ও ওয়ার্কিং কমিটির সদস্য মো. জাহাঙ্গীর হোসেন জালাল, সাংবাদিক ও পদ্মা ব্যারেজ ও দ্বিতীয় পদ্মা সেতু বাস্তবায়ন কমিটির সদস্য মেহেদী হাসান পলাশ, কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খোকন  প্রমুখ বক্তব্য দেন। 

সেমিনারে প্রথম সেশনে ‘ফারাক্কা ব্যারাজ ও বাংলাদেশের সংকট’ এবং ‘পদ্মা ব্যারাজ ও বাংলাদেশের সম্ভাবনা’ বিষয়ে উপস্থাপনা করেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক এবং পদ্মা ব্যারাজ ও দ্বিতীয় পদ্মা সেতু বাস্তবায়ন জাতীয় কমিটির ওয়ার্কিং কমিটির সদস্য প্রকৌশলী মো. আব্দুল ওয়াদুদ ভূঁইয়া।

সেমিনারে বিষয়ভিত্তিক আলোচনা করেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের সাবেক মহাপরিচালক ও পদ্মা ব্যারাজ ও দ্বিতীয় পদ্মা সেতু বাস্তবায়ন জাতীয় কমিটির ওয়ার্কিং কমিটির সদস্য প্রকৌশলী মো. মাহফুজুর রহমান।

সেমিনারে দ্বিতীয় সেশনে ‘দ্বিতীয় পদ্মা সেতু ও আগামীর সম্ভাবনা’ বিষয়ে উপস্থাপনা করেন পদ্মা ব্যারাজ ও দ্বিতীয় পদ্মা সেতু বাস্তবায়ন জাতীয় কমিটির ওয়ার্কিং কমিটির সদস্য প্রকৌশলী সাখাওয়াত হোসেন শামীম। 

‘কেমন রাজবাড়ী চাই, আলোকিত রাজবাড়ী’ শীর্ষক অ্যানিমেশন প্রদর্শন করেন পদ্মা ব্যারাজ ও দ্বিতীয় পদ্মা সেতু বাস্তবায়ন জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য অর্ণব নেওয়াজ মাহমুদ হৃষিত ও সাদাত খান।

মীর সামসুজ্জামান সৌরভ/আরএআর