বিতর্কিতদের খুলনা ত্যাগ করা লাগতে পারে : মঞ্জু
খুলনা-২ আসনের ধানের শীষের প্রার্থী সাবেক এমপি নজরুল ইসলাম মঞ্জু বলেছেন, রাজনীতি করি আমরা, অনেকের পাওয়া না পাওয়ার বেদনা রয়েছে। সেই বেদনাটাকে আমরা পেছনে ফেলে দলের স্বার্থে, আগামী নির্বাচনের স্বার্থে সবার একই পথ, সেটা হচ্ছে আমরা ধানের শীষের কর্মী। এই পথ দিয়ে আমরা কাজ করতে চাই।
তিনি বলেন, একজন আরেকজনকে আক্রমণ করা সেটা এখন নেই। দুই একজন ভিন্ন থাকতে পারে, তাদেরকে সাথে সাথে সতর্ক করি। আমরা সতর্কভাবেই চলছি। আমরা সবাই মিলে ফাইনালি নামতে চাই। খুলনা-৩ আসনের প্রার্থী রকিবুল ইসলাম বকুল ঢাকা থেকে ফিরলে সদর, সোনাডাঙ্গা ও দৌলতপুরে বৈঠক করবো। তারপর জেলার অন্যান্য থানায় যাওয়ারও পরিকল্পনা রয়েছে।
বিজ্ঞাপন
রোববার (২৩ নভেম্বর) দুপুরে খুলনা প্রেসক্লাবের সাংবাদিক লিয়াকত আলী মিলনায়তনে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
নজরুল ইসলাম মঞ্জু বলেন, সমঝোতা প্রক্রিয়ার মধ্যে আমরা বলেছি- বিতর্কিত যারা পত্রিকার শিরোনাম হয়েছেন, তাদেরকে নির্বাচনের বাহিরে রাখতে হবে। তাদের কাউকে কাউকে খুলনা ত্যাগ করা লাগতে পারে সে জন্য আলোচনা চলছে। সে জন্য তিন প্রার্থী আমরা এক হয়ে ফাইনাল করবো নির্বাচনে নামার আগে। এখনো কিন্তু বিতর্কিত লোকজন এই প্রক্রিয়ার মধ্যে নেই।
বিজ্ঞাপন
তিনি আরও বলেন, এবারের নির্বাচনে তদবিরে মনোনয়ন হয়নি। গুণাবলি দিয়ে, ত্যাগ দিয়ে জনগণের প্রিয় ব্যক্তিকে দল মনোনয়ন দিয়েছে। তারপরও এখনো কিন্তু মনোনয়ন নিয়ে কাজ চলছে। কয়েকটি নির্বাচনে আমরা অংশ নিয়েছি। একটি নির্বাচনে দলের ২৯টি আসনের মধ্যে আমাকেও নির্বাচিত করেছিল অনেক কষ্টে। পরবর্তী ভোট ডাকাতির নির্বাচনগুলো আপনারা দেখেছেন। এই যাত্রায় যেন একটি অর্থবহ নির্বাচন হয়। উৎসবমুখর পরিবেশে নির্বাচন হয় এবং সকলের অংশগ্রহণে নির্বাচন হয়। ভোট ডাকাতি আমাদের যেন আর ডুবন্ত তরীর দিকে নিয়ে না যায়।
নজরুল ইসলাম মঞ্জু বলেন, আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান কিছুদিনের মধ্যেই ফিরবেন। বাংলাদেশের মানুষের জন্য, নতুন বাংলাদেশের জন্য নতুন পরিকল্পনা নিয়ে হাজির হবেন জাতির সামনে। নতুন বার্তা দেবেন। তরুণদের জন্য সেই বার্তা কত সুন্দর গঠনমূলক সেটি আপনারা দেখতে পাবেন। নতুন অভিযাত্রায় প্রিয় নেতার নেতৃত্বে বাংলাদেশ পুনর্গঠনের কাজে আমরা যাত্রা শুরু করব।
তিনি বলেন, এবার আমাদের নতুন পাওয়া আছে, বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় নেত্রী মাদার অব ডেমোক্রেসি দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া অসুস্থ অবস্থায়ও নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন। ফ্যাসিবাদ তাকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিয়েছিল, মহান রাব্বুল আলামিন তার জীবন রক্ষা করেছেন। জুলাই বিপ্লবের পরে তিনি কারামুক্ত হয়েছেন। এটা আমাদের জাতির জন্য বড় পাওয়া। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ওয়ান-ইলেভেনের ক্ষত নিয়ে ১৭ বছর বিদেশের মাটিতে নির্বাসনে ছিলেন। দেশের গণতান্ত্রিক আন্দোলনের মূল চালিকা শক্তি ছিলেন তারেক রহমান। তিনি দূরে থেকেই বিএনপিকে পরিচালিত করেছেন। দূরে বসেই তিনি গণতান্ত্রিক আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়েছেন। একটি বিরল ঘটনা- বিদেশে বসে কীভাবে একটি দেশের গণতান্ত্রিক আন্দোলনকে সফলতার পথে নিয়ে যেতে পারে। নতুন অভিযাত্রায় স্বপ্ন বাস্তবায়নে তিনি কাজ করবেন।
সাংবাদিকদের উদ্দেশে মঞ্জু বলেন, আপনাদের সহযোগিতা প্রয়োজন। আমাদের প্রচার করার দরকার নেই। আমরা যে প্রচারণায় থাকবো সেই চিত্র তুলে ধরলেই আমরা খুশি। ব্যানার বানিয়ে বিএনপির ধানের শীষে ভোট দিন এটা আপনাদের কাছে আমরা প্রত্যাশা করি না। আপনারা আপনাদের নোবেল পেশায় থাকেন এবং সেখান থেকেই সমাজের চিত্র তুলে ধরুন।
নজরুল ইসলাম মঞ্জু বলেন, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান যখন মনোনয়নের সংবাদটি দেন তখন তিনি বলেছিলেন, পছন্দ অপছন্দের লোক থাকবে, আপনি সবাইকে নিয়ে নামবেন। বলেছি, আমি সবাইকে নিয়ে নামবো। আমরা এখনো লিফলেট ছাপায়নি, মাঠের প্রচারণা শুরু করিনি। শুধুমাত্র আহত, নিহত, গুমের শিকার নেতাকর্মীদের বাড়ি গিয়েছি। আর কয়েকটি ব্যাংকে গিয়েছি। নিজেদের মধ্যে সমঝোতার জন্য একাধিক বৈঠক করেছি। খানজাহান আলী থানা এবং খালিশপুরে বিভক্ত বিএনপিকে দুইটি বৈঠকে খুলনা-৩ আসনের প্রার্থীর পক্ষে আমরা ঐক্যবদ্ধ করেছি। এইভাবে ৫টি থানায় আমাদের বৈঠক হওয়ার কথা। আমরা সময় দিচ্ছি। সহনীয় জায়গায় থেকেই পূর্বাবস্থায় ফিরতে চাই। তবে কাউকে বাদ দিয়ে বা অসম্মানিত করে নয়। আমরা সেই জায়গাতেই থাকতে চাই। অচিরেই আপনারা দেখবেন সেই জায়গাতে আমরা পৌঁছে যাব ইনশাল্লাহ।
সভায় খুলনা সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র ও মহানগর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান মনি, খুলনা প্রেসক্লাবের আহ্বায়ক এনামুল হক, সদস্য সচিব রফিউল ইসলাম টুটুল, সিনিয়র সাংবাদিক শেখ দিদারুল আলম, বিএফইউজের সহকারী মহাসচিব এহতেশামুল হক শাওন, মেট্রোপলিটন সাংবাদিক ইউনিয়ন খুলনার সভাপতি রাশিদুল ইসলাম, মিজানুর রহমান মিল্টন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
মোহাম্মদ মিলন/আরএআর