ভোলা প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি, দৈনিক বাংলার কণ্ঠের সম্পাদক ও বীর মুক্তিযোদ্ধা এম হাবিবুর রহমান (৮৫) মারা গেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। সোমবার (২৪ নভেম্বর) বিকেল ৩টার দিকে তিনি চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঢাকার পিজি হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন। 

তার মৃত্যুতে ভোলার গণমাধ্যমকর্মীদের মধ্যে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। গভীর শোক ও শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।

হাবিবুর রহমানের স্বজনরা জানান, দীর্ঘদিন ধরে তিনি বার্ধক্যজনিত কারণে নানা রোগে ভুগছিলেন। সম্প্রতি এম. হাবিবুর রহমান নিজ বাড়িতে অসুস্থ হয়ে পড়লে প্রথমে চিকিৎসার জন্য ভোলার ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য শনিবার সকালে ঢাকায় নেওয়া হয়। এরপর ঢাকার পিজি হাসপাতালে ভর্তি করা হয় এবং তিনি সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মরদেহ ভোলায় আনার পর মঙ্গলবার সকাল ১০টায় ভোলা সরকারি বালক স্কুল মাঠে জানাজা শেষে শহরের মহাজনপট্টিতে অবস্থিত বড় জামে মসজিদের কবরস্থানে বাবা-মায়ের কবরের পাশে তাকে দাফন করার কথা রয়েছে।

এম হাবিবুর রহমান ভোলা শহরের গজনবী স্টেডিয়াম সড়কের বাসিন্দা ছিলেন। তিনি মৃত্যুকালে স্ত্রী, এক ছেলে, দুই মেয়েসহ বহু আত্মীয়-স্বজন ও গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। তার একমাত্র ছেলে হাসিব রহমান মাছরাঙা টেলিভিশন ও দৈনিক জনকণ্ঠের ভোলা জেলা প্রতিনিধি হিসেবে কর্মরত রয়েছেন।

উল্লেখ্য, ১৯৬৬ সালে দৈনিক পূর্বদেশ পত্রিকার মাধ্যমে সাংবাদিকতা শুরু করেন এম হাবিবুর রহমান। ১৯৭০ সালের মহা প্রলয়ংকরী ঘূর্ণিঝড়ে দ্বীপজেলা ভোলায় গাছে গাছে মানুষের লাশ ঝুলতে থাকাসহ ভয়াবহ ধংসযজ্ঞের সচিত্র খবর এম হাবিবুর রহমান প্রথম দেশ-বিদেশের মানুষের কাছে তুলে ধরেন। এছাড়া ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় পাক হানাদার বাহিনীর অত্যাচার- নির্যাতনের বিরুদ্ধে স্বোচ্ছার ছিলেন প্রবীণ এ কলম সৈনিক। তিনি মৃত্যুর আগ পর্যন্ত লিখে গেছেন অবহেলিত দ্বীপজেলা ভোলার মানুষের উন্নয়ন, সংকট, সম্ভাবনা নিয়ে। এছাড়াও তিনি বাংলাদেশ বেতারের ভোলা প্রতিনিধি হিসেবে বহু বছর কাজ করেছেন।

খাইরুল ইসলাম/আরএআর